Skip to content
Home » মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য

মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য

10 Sentences About Mahasthangarh

মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য সকলের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ কেননা এটি আমাদের দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান। প্রাচীন এই পুরাকীর্তিটি রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে শিবগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। এই পুরাকীর্তিটি প্রাচীন বাংলার পুণ্ড্রবর্ধনের অংশ ছিল। মহাস্থান অর্থ পবিত্র স্থান এবং গড় অর্থ দুর্গ। আজ থেকে প্রায় ২,৫০০ বছর পূর্বে গড়ে ওঠা এই পুরাকীর্তিটি বৌদ্ধ শিক্ষার জন্য বিখ্যাত ছিল। চীন ও তিব্বত থেকে আসা অনেক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এখানে লেখাপড়ার করতেন। এরপর তারা দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তেন এ শিক্ষার প্রসার ঘটাতে। 

এটি ছিল মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন রাজাদের সময়ে বাংলার গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল। এছাড়া মুসলিম শাসনামলেও এর গুরুত্ব কম ছিল না। এখন শুধুই সেসবের ধ্বংসাবশেষ অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র। তবে প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে মহাস্থানগড়। বর্তমানে এই স্থানটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত করা হয়েছে। ২০১৬ সালে মহাস্থানকে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এখানে শহর গড়ে ওঠার অন্যতম কারণ ছিল, এটি বাংলাদেশের উঁচু অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি ছিল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৬ মিটার উঁচু এ অঞ্চল প্রাকৃতিকভাবে বন্যামুক্ত ছিল।

মহাস্থানগড়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন গৌড়ের রাজা থাকার সময়ে এই গড় অরক্ষিত হয়ে পড়ে। সেসময় মহাস্থানগড়ের রাজা ছিলেন নল। কিন্তু তার ভাই নীলের সাথে তার বিরোধ লেগেই থাকত। সেসময় এক অভিশপ্ত ব্রাহ্মণ এ এলাকায় ভ্রমনে আসেন। এই ব্রাহ্মণ তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে ভারতের দাক্ষিণাত্যের শ্রীক্ষেত্র থেকে এখানে আসেন। তিনি পরশু বা কুঠার দিয়ে নিজের মাকে হত্যার জন্য অভিশপ্ত ছিলেন। তিনি নল এবং নীল এই দুই ভাইয়ের বিরোধ মেটানোর নাম করে কৌশলে নিজেই রাজা হয়ে যান। ইতিহাসে তিনি পরশুরাম হিসেবে পরিচিত হলেও তার আসল নাম ছিল রাম। কিন্তু রাজা হওয়ার পর তিনি অত্যাচারী শাসক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তার অত্যাচারে যখন রাজ্যের জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে ঠিক তখনই এখানে একজন আধ্যাত্মিক শক্তিধারী দরবেশের আগমন হয়। তার নাম ছিল হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র.)। পরশুরামের সাথে এই ফকির বেশি আধ্যাত্মিক শক্তিধারী দরবেশ হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর ১২0৫-১২২0 সালে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত ও নিহত হন। 

মহাস্থানগড় কি?

মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন। বিখ্যাত এই নগরী ইতিহাসে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামে পরিচিত ছিল। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলারও রাজধানী ছিল। যিশু খ্রিষ্টের জন্মেরও আগে অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে এখানে সভ্য জনপদ গড়ে উঠেছিল প্রত্নতাত্ত্বিক ভাবেই তার প্রমাণ মিলেছে। সময়ের পরিক্রমায় এর বর্তমান নাম হয়েছে মহাস্থানগড়। বিভিন্ন ঐতিহ্যগত কারণে মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন প্রত্নস্থল বলে সারা পৃথিবীর পর্যটক এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে মহাস্থানগড় আগ্রহের ও আকর্ষনীয় স্থান। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাচীনতম শহুরে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির মধ্যে মহাস্থানগড়  একটি। বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান গ্রামটিতে একটি প্রাচীন শহরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে যা পুন্ড্রবর্ধনের ভূখণ্ডে পুন্ড্রনগর বা পৌন্ড্রবর্ধনপুরা নামে পরিচিত ছিল।

মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য

মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনের নাম। বগুড়া জেলার বিশপুর উপজেলায় অবস্থিত। এই মহাস্থানগড়টি মূলত একটি বিহার ছিল। যা পরবর্তীতে মহাস্থানগড়ে পরিনত হয়। মহাস্থানগড়ের রাজা ছিলেন শাহ সুলতান বলখী মাহিসাওয়ার। অন্য নাম বলখী মাহিসাওয়ার। হযরত শাহ সুলতান বলখী মাহীসাওয়ার (র.) এর মাজার এই মহাস্থাগড়েই অবস্থিত। মহাস্থান গড়ের পূর্বনাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর। এটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে অবস্থিত ছিল। মাত্র ১০ টি বাক্য দিয়ে মহাস্থানগড়ের সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। নিচে মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য উপস্থাপন করা হলো।

  1. মহাস্থানগড় হলো বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন।
  2. বাংলাদেশের প্রাচীণতম ও সর্ববৃহৎ নগরী হলো মহাস্থানগড়।
  3. পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর ছিল মহাস্থানগড় এর পূর্বনাম।
  4. মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটনকেন্দ্র।
  5. ১৯৮৫ সালে মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি জাতীয় ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষিত হয়।
  6. বহু প্রাচীণ নিদর্শন আবিস্কৃত হয়েছে মহাস্থানগড় খননের ফলে ।
  7. মহাস্থানহড়কে ২০১৬ সালে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 
  8. এক সময় মহাস্থানগড় বাংলারও রাজধানী ছিল।
  9. মহাস্থানগড়ের রাজা ছিলেন শাহ সুলতান বলখী মাহিসাওয়ার। অন্য নাম বলখী মাহিসাওয়ার। 
  10. ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার কানিংহাম প্রথম এই প্রাচীন ঐতিহাসিক নগরীকে পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানীরূপে চিহ্নিত করেন।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য  এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল সমস্ত সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

মহাস্থানগড় কে আবিষ্কার করেন?

মহাস্থানগড় বগুড়া জেলার একটি প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনের নাম। মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত ও উদ্‌ঘাটন করার ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তির অবদান রয়েছে। প্রথম ১৮০৮ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিলটন মহাস্থানগড়ের অবস্থান চিহ্নিত করেন। ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার কানিংহাম প্রথম ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রাচীন ঐতিহাসিক নগরীকে পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানীরূপে চিহ্নিত করেন।

পুন্ড্রনগর এর বর্তমান নাম কি?

মহাস্থানগড় হলো বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান প্রাচীন প্রত্নতত্তিক নিদর্শন। পরিচিত এই নগরী ইতিহাসে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামেও পরিচিত ছিল। পুন্ড্রনগরের বর্তমান নাম হলো মহাস্থানগড় যা আমাদের সকলের কাছে পরিচিত একটি নাম।

উপসংহার

মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন। পূর্বে এর নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানীও ছিল। ২০১৬ সালে এটি সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষনা হয়। এখানে গুপ্ত, পাল,মৌর্য, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। এর অবস্থান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কি.মি উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে মহাস্থানগড় এর অবস্থান। মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। বিখ্যাত এই নগরী পূর্বে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামেও পরিচিত ছিল। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। 

মহাস্থানগড়ের বিস্তীর্ণ ধ্বংসাবশেষ প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধণভূক্তির রাজধানী পুন্ড্রনগরের সুদীর্ঘ প্রায় আড়াই হাজার বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের এক নীরবস্বাক্ষী। এ ধ্বংসাবশেষ বগুড়া জেলা শহরের ১৩ কিঃমিঃ উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। সমগ্র বাংলার সর্বপ্রধান ও সর্বপ্রাচীন এই দূর্গনগরী পর্যায়ক্রমে মাটি ও ইটের বেষ্টনী প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত যা উত্তর ও দক্ষিণে ১৫২৫ মিটার দীর্ঘ এবং পূর্ব ও পশ্চিমে ১৩৭০ মিটার প্রশস্ত ও চারপাশে সমতল ভূমি হতে প্রায় ৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। বেষ্টনী প্রাচীর ছাড়াও পূর্ব দিকে নদী ও অপর তিনদিকে গভীর পরিখা নগরীর অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই শুধুমাত্র মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য দিয়ে এর গুনগান বর্ণনা করা সম্ভব না। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“মহাস্থানগড় সম্পর্কে ১০ টি বাক্য” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *