Skip to content
Home » কান পাকা রোগের ঔষধের নাম

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম

Medicine Name For Ear Infection

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম জানা প্রয়োজন কান পাকা রোগ থেকে মুক্তি পেতে। কান আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের অন্যতম। আমাদের পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মধ্য শ্রবণ অন্যতম। আর কান হচ্ছে আমাদের একমাত্র শ্রবণ অঙ্গ। সুতরাং, কানের প্রয়োজন আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের কাজ দেখলেই স্পষ্ট হয়। কান শুধু আমাদের শ্রবণ না, কান আমাদের শরীরের ভারসাম্যও রক্ষা করে।

কানের মতো অপরিহার্য অঙ্গের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন কানের যত্ন নেওয়ার বিকল্প নেই। কানের যত্ন না নিলে যেকোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে কান আমাদের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না। ফলে, আমাদের জীবন যাপনে জটিলতা সৃষ্টি হয়। আজকের আর্টিকেলে কান পাকা রোগের ঔষধের নাম সহ বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

কান পাকা রোগ কী?

What Is Ripe Ear Disease

কানের তিনটি অংশ (বহিঃকর্ণ, মধ্য কর্ণ, অন্তঃকর্ণ) এর মধ্য মধ্য কর্ণের প্রদাহ কে মূলত কান পাকা রোগ বলে। সাধারণত এই ধরনের কান পাকা রোগ দুই প্রকারের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে নিরাপদ কান পাকা, যার মাধ্যমে কান থেকে গন্ধহীন পূঁজের মতো তরল নির্গত হয়। সাধারণত এক্ষেত্রে তেমন কোনো জটিলতা থাকে না।

অপরদিকে, অনিরাপদ কান পাকা হচ্ছে জটিল কান পাকা রোগ। এই ধরণের রোগে কান থেকে নির্গত হয় দুর্গন্ধ যুক্ত, ঘন পুঁজ। কোলোস্টেটেমা যুক্ত থাকে এই প্রকারের প্রদাহে, যেখানে কোলোস্টেটেমা কানের হাঁড় ও নরম অংশের ক্ষতিসাধন করে। ফলে কানের অভ্যন্তরে হাঁড় ও কোষকলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কানের পুঁজ অনেক সময় মস্তিস্কে পৌঁছে যেতে পারে। মস্তিস্কের ঝিল্লি, সাইনাসে এটি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন করে। ফলশ্রুতিতে মৃত্যু ও হতে পারে। কিন্তু কান পাকা রোগের ঔষধের নাম জানা থাকলে সমস্যার প্রথমাবস্থায় সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আর কান পাকা রোগের যথাযথ চিকিৎসা শুরুতেই করলে, এই রোগ দীর্ঘস্থায়ী, জটিল রোগে পরিণত হতে পারবে না।

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম

Medicine Name For Ear Infection2

কান পাকা রোগের ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিৎ নয়। তবে অনেকেই কান পাকা রোগের মেডিসিনের নাম জানতে চায়। এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি উভয় প্রকারের কান পাকা রোগের ঔষধের নাম নিচে তুলে ধরা হল- 

ইটোরিক্স (Etorix)

Etorix

ইটোরিক্স ৬০ মি.গ্রা ট্যাবলেট কানের ব্যাথা, পাকা রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আবার মাথা ব্যাথার প্রতিষেধক হিসেবেও এর খ্যাতি আছে। তবে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ ও এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দিনে দুই বার দুই টি করে ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেয় ডাক্তাররা। শিশুদের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল খাওয়ার প্রয়োজন আছে। তবে ঔষধ খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ আবশ্যক। 

ফুরোটিল প্লাস (Furotil Plus)

Furotil Plus

ফুরোটিল প্লাস ২৫০ মি.গ্রা ট্যাবলেট কানের প্রদাহ, সংক্রমন, কান ব্যথা, কানের পাকা রোগ, কান থেকে পুঁজ আসার মতো রোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। এই ট্যাবলেট টি ৭ দিন যাবৎ দিনে ২ বার করে করে খাওয়ার নিয়ম আছে। শিশুদের জন্য ১২৫ মি.গ্রা সিরাপ দিন ২ বার করে ৭ দিন খাওয়াতে হয়। শিশুদের প্রতি ১০ মি.গ্রা প্রতি কেজি করে খাওয়ানো হয়। তবে আবারও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। 

এ ফেনিকল ড্রপ (A Phenicol Drop)

A Phenicol Drop

কানের যেকোনো রোগ নিরাময়ে এ ফেনিকল ড্রপ এক অব্যর্থ ঔষধ। কানের পাকা, সংক্রামণ, ব্যাথা, আওয়াজ দূর করতে ফেনিকল ড্রপ বরাবরই পছন্দের শীর্ষ থাকে ডাক্তারদের। দিনে ২ ফোটা করে দিনে চার বার আক্রান্ত কানে প্রয়োগ করতে হয় এই ফনিকল ড্রপ৷ তবে শিশুদের ক্ষেত্রে অন্য ড্রপের মতো এর কম হওয়ার সম্ভাবনা নাই। ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। 

ডেক্সাকর্ট ড্রপ (Dexacort Drop)

Dexacort Drop

কান পাকা রোগের চিকিৎসায় আরেক গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ ড্রেক্সাকর্ট ড্রপ৷ ডেক্সাকর্ট বহিঃকর্ণ, অন্ত:কর্ণ ও অন্তকর্ণ এর সমস্যা সমাধানে খ্যাতনামা ঔষধ। ইনফেকশন, পুঁজ, ব্যাথা, প্রদাহের সমস্যা সমাধানে ডেক্সাকর্ট ড্রপ ডাক্তারদের অন্যতম চয়েজ। ডেক্সাকর্ট ড্রপ দিনে ৩ ফোঁটা ২ বার করে কানে প্রয়োগ কর‍তে সমাধান পাওয়া যেতে পারে। ব্যবহারের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক। 

ভিটামিন সি (Vitamins C)

Vitamins C

কানের যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে ভিটামিন সি সবচেয়ে কার্যকরী। কারণ ভিটামিন সি শুধু কানের চিকিৎসা করে না, এটি কানের রোগ প্রতিরোধ করে দীর্ঘমেয়াদী সময় ধরে। ভিটামিন সি ঔষধের পাশাপাশি সাধারণত কমলা, লেবু, আনারসের মতো বিভিন্ন ফলমূলে প্রাকৃতিক ভাবেই পাওয়া যায়।

লোমেফ্লোক্সাসিন (Lomefloxacin)

Lomefloxacin

লোমেফ্লোক্সাসিন মূলত একটি এন্টিবায়োটিক টাইপের ঔষধ। কানের চিকিৎসায় এন্টিবায়োটিক হিসেবে ডাক্তাররা এটির পরামর্শ দেয়। কানের ইনফেকশন, পুঁজ, পানি, ব্যাথা নিরাময়ে এটি এন্টিবায়োটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত খাওয়ার পর সপ্তাহে সাত দিন দিনে একটা করে এটি গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ আবশ্যক। 

রোক্সিট্রোমাইসিন (Roxytromycin)

Roxytromycin

রোক্সিট্রোমাইসিন এন্টিবায়োটিক গ্রুপের আরও একটা ঔষধ। যেটা কানের পুঁজ, ইনফেকশন, ব্যথা, পানি ও আওয়াজ নিরাময়ে স্বীকৃত। এটি কানের জীবাণু ধ্বংস করতে কার্যকরী অত্যন্ত। রোক্সিট্রোমাইসিন ১৫০/৩০০ মি.গ্রা প্রতি দিন ১ টি করে ৭ দিন খাবার পরে প্রয়োগ করতে হয়। ঔষধ গ্রহণের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ আবশ্যক। 

সেফাকলর (Cefaclor)

Cefaclor

সেফাকলর ২৫০/৫০০ মি.গ্রা সম্প্রতি আরেকটা কার্যকরী এন্টিবায়োটিক হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। কানের পাকা রোগ, সংক্রমণ, প্রদাহ, বেদনা উপশমে ডাক্তাররা দীর্ঘমেয়াদি ঔষধ হিসেব সেফাকলর ব্যবহার করে থাকেন। সেফাকলর দিনে ৩ বার ৭ দিন খাওয়ার পরে গ্রহণ করতে হয়। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

ক্যান্ডিস্টিন ইয়ার ড্রপ(Candistine Ear Drop)

Candistine Ear Drop

ক্যান্ডিসটিন ইয়ার ড্রপ কান পাকা সহ কানের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। কান পাকা, ভুভু আওয়াজ হওয়া, পুঁজের চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়৷ ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে এটি ব্যবহার না করা উচিত। সাধারণত দিনে তিন বার করে দেওয়ার পরামর্শ দেয় ডাক্তাররা। 

ওয়াক্স সল ইয়ার ড্রপ (Waxsol Ear Drop)

Waxsol Ear Drop

ওয়াক্স সল ইয়ার ড্রপ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কান পরিস্কার করতে। কানের খৈল, ময়লা দূরীকরণে এটি ব্যবহৃত হয়ম তাছাড়া ইনফেকশন, পুঁজ, ব্যাথা দূর করতেও সাহায্য করে। দিনে ২ বার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিন ব্যবহার করা আবশ্যক।

ক্ল্যারিজল ইয়ার ড্রপ(Clarizol Ear Drop)

Clarizol Ear Drop

ক্ল্যারিজল ইয়ার ড্রপ কানের পুঁজ ও পাকা রোগের চিকিৎসায় একটি ব্যবহৃত ঔষধ। সাধারণত ড্রপ আকারে পাওয়া এই ঔষধ সংক্রমণ নিরাময়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দিনে ২-৩ বার সপ্তাহে ৭ দিন ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে থাকে ডাক্তাররা। তবে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ না করে ব্যবহার করতে অনুৎসাহিত করা হচ্ছে।

জেন্টাব্যাক ইয়ার ড্রপ (Gentaback Ear Drop)

Gentaback Ear Drop

জেন্টাব্যাক ইয়ার ড্রপ মূলত কানের ফাঙ্গাস, চুলকানি ও সংক্রামণ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। জেন্টাব্যাক ইয়ার ড্রপ কানের ভিতরের অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী। দিনে ২ বার, সপ্তাহে সাত দিন ব্যবহারের নিয়ম এটি। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ও রোগের ধরণ অনুযায়ী প্রেসক্রিপশন থেকে ড্রপ ব্যবহার করা অত্যাবশ্যক। 

অডিকেয়ার ইয়ার ড্রপ (Audicare Ear Drop)

Audicare Ear Drop

অডিকেয়ার ইয়ার ড্রপ কানের চুলকানি দূরীকরণের মহৌষধ হিসেবে বিবেচিত হয়। কানের স্নায়ুর যত্ন নেওয়ার জন্যও এটি ব্যবহৃত হতে পারে৷ সংক্রমণ, পুঁজ ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে ভারসাম্য রাখতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। দিনে ২-৩ বার ডাক্তারের নির্দেশনা অঅনুযায়ী ব্যবহার করার পরামর্শ এটি। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতিত ঔষধ ব্যবহার করা উচিত না।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তর সমূহ

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

কান পাকা রোগের ঔষধের মধ্য সবচেয়ে কার্যকরী কোনটা? 

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম যেগুলো উপরে উল্লেখ করা আছে, সবগুলোই অত্যন্ত কার্যকরী। তবে যেকোনো ঔষধ ব্যবহারের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই গ্রহণ করে সে অনুযায়ী খেতে বা প্রয়োগ করতে হবে।

কান পাকা রোগের লক্ষ্মণ গুলো কী কী?

কান পাকা রোগের লক্ষন অনেক গুলো আছে। যেমন, কান থেকে পুঁজ আসা, পুঁজ হালকা বা ঘন ও গন্ধযুক্ত হয় অধিকাংশ সময়। কানে ব্যাথা করে, মাথা ব্যাথা হয়, ভু ভু আওয়াজ, চুলকানো, প্রদাহ কম শোনার মতো উপসর্গগুলো দেখা যায়।

উপসংহার

কান পাকা রোগ ভীষণ ভয়াবহ হতে পারে যদি কান পাকা রোগের চিকিৎসা প্রাথমিক অবস্থায় না করা হয়। কান পাকা রোগ প্রাথমিক অবস্থায় শেষ করে দিতে কান পাকা রোগের ঔষধের নাম উপরের আলোচনায় আমরা বিস্তারিত জেনেছি। আমাদের বেচে থাকতে শ্রবণের যে কতটা গুরুত্ব আছে, তা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। সুতরাং, সেই উপলব্ধি থেকে কান পাকা রোগ সহ কানের যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসা অপরিহার্য। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“কান পাকা রোগের ঔষধের নাম” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ!

3 thoughts on “কান পাকা রোগের ঔষধের নাম”

  1. মোঃ আবুল কালাম

    কান পাকে,কান দিয়ে গন্ধ পুজ আসে সমাধান চাই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *