Skip to content
Home » পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য

পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য

10 Sentences About Paharpur

পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য যারা একসাথে একই আর্টিকেলের সাহায্যে পেতে চান আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য। কারণ আজ আমরা এমন একটি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করবো যা বর্তমান সময়ে এসেও ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাচীন মন্দির হিসাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

মূলত পাহাড়পুর নামের যে স্থানটি সবচেয়ে বেশি পরিচিত বা যার নাম শুনলেই ঐতিহাসিক স্থানের কথা মনে পড়ে যায় সেই স্থানটি বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্ম শিক্ষাদান কেন্দ্র হিসাবে একসময় বেশ সরগরম ছিলো। এটা ছিলো কিছুটা স্কলারশিপ সুযোগ-সুবিধা থাকা টাইপের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এর মতো। যেখানে পড়াশোনা করতে চীন, তিব্বত, মায়ানমার (তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া থেকেও শিক্ষার্থীরা আসতো ৷ বলে রাখা ভালো এই পাহাড়পুর বৌদ্ধ মন্দিরে যারা পড়াশোনা করতো প্রত্যেকেই কিন্তু ভিক্ষুক বা আজকের দিনের বৌদ্ধ ছিলেন। আপনি কি জানেন, পাহাড়পুরের এই বৌদ্ধ বিহার বা মন্দিরটি প্রায় ৩০০ বছর ধরে খোলা ছিলো এবং এতে শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিলো। আর যেহেতু এই মন্দিরটিকে পরবর্তীতে পাহাড় খুঁড়ে পাওয়া গিয়েছিলো তাই এর নাম পাহাড়পুর নামকরণ করা হয়েছে। তবে প্রাচীনকালে এর প্রকৃত নাম ছিলো সোমপুর বিহার।

পার্শ্ববর্তী সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩০.৩০ মিটার উঁচুতে তৈরি হওয়া এই স্থাপনা থেকে আজো গবেষণা করে বিভিন্ন তথ্য খুঁজে বের করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে সেকালে শিক্ষা-নীতি, স্থাপনা তৈরির প্রাথমিক নিয়মাবলিসহ বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করে বিজ্ঞানীরা নতুন এবং তুলনামূলক উত্তম সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

পাহাড়পুর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য

পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে আমরা পাহাড়পুর সম্পর্কে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিবো। যেহেতু ধর্মপালের পুত্র দেবপালের রাজত্বকালে সোমপুর নিয়ে কথা উঠে, সেহেতু বলা যায় সেসময়কারই একটি স্থাপত্য হলো এই পাহাড়পুর বা সোমপুর বিহার। অবস্থানের দিক দিয়ে এই বিহারটিকে খুঁজতে হলে আপনাকে যেতে হবে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত নওগাঁ জেলাতে। ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করে জানা যায় বৌদ্ধ ধর্মের চরম উৎকর্ষতার যুগে তাদেরই পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে এই পাহাড়পুর বিহার গড়ে উঠেছিলো। বিভিন্ন দিক দিয়ে সেরা হবার কারণেই মূলত এশিয়ার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বৌদ্ধ বিহার হিসাবে আজো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়পুরের এই বৌদ্ধ বিহার।

পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য

পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য জানার জন্যে যারা অপেক্ষা করছিলেন এবারে চলুন তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা যাক। জেনে নেওয়া যাক মোট ৭০.৩১ একর জমির উপর গড়ে উঠা এই পাহাড়পুরের বৌদ্ধ বিহার সম্পর্কিত সর্বমোট ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল বাক্য।

  1. পাহাড়পুরের বৌদ্ধ বিহার মূলত উত্তর-দক্ষিণে দৈর্ঘ্য ৩৫৭ ফুট প্রস্থে পূর্ব-পশ্চিমে ৩১৪ ফুটের একটি চমৎকার স্থাপনা
  2. এটি একটি শিক্ষাকেন্দ্র হলেও এতে ১৯৮টি বাস উপযোগী কক্ষ, বিস্তৃত প্রবেশ পথ, এবং অসংখ্য বিনোদনস্তুপের ব্যবস্থা রয়েছে
  3. পাহাড়পুরের বৌদ্ধ বিহার আমাদের বাংলাদেশের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যা ইতিমধ্যেই ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে
  4. এই স্থাপনাটির বিশাল আয়তন ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে প্রতি বছরই অসংখ্য দর্শনার্থী ছুটে আসেন
  5. স্থাপনাটিকে চাইলে খুব সহজেই ভারতের নালন্দা মহাবিহারের তুলনা করা যাবে
  6. ধারণা করা হয় আজকের আলোচিত ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি
  7. বর্তমানে ইউনেস্কো কতৃক স্বীকৃত এই চমৎকার স্থাপনাটির মালিকানা কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের হাতে
  8. পাহাড়পুরের এই বৌদ্ধ মন্দিরটি যখন স্থাপন করা হয়েছিলো তখন এটির ভূমি পরিকল্পনা করা হয়েছিলো মূলত চতুর্ভূজ আকৃতির
  9. সে-সময় পাহাড়পুরের এই বিহার এতোটাই জনপ্রিয় ছিলো যে এটি দেখতে বাংলাদেশে ৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝিতে স্বয়ং হিউয়েন সাং বেড়াতে আসেন
  10. মূলত এই বিহার থেকেই সে-সময় নালন্দা, বুদ্ধগয়া প্রভৃতি ভারতীয় বিভিন্ন বৌদ্ধ তীর্থস্থানে অর্থ ও ধন রত্ন দান করা হতো

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে চলুন জেনে নেই সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার কে আবিষ্কার করেন?

অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার আবিষ্কৃত হলেও পরবর্তীতে তা জনসম্মুখে নিয়ে আসা হয় ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে এবং ব্যাক্তিটি ছিলেন স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম।

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার কোন জেলায় অবস্থিত?

পাহাড়পুর মূলত বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত নওগাঁ জেলাতে অবস্থিত। যারা এই বিহারে যেতে চান তাদেরকে শুরুতে ঢাকা থেকে সড়কপথে রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত নওগাঁ জেলাতে যেতে হবে। যদিও ঢাকা টু এই বিহারের দূরত্ব প্রায় ২৮২ কিলোমিটারের মতো। আর নওগাঁ থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৩৫ কি.মি.।

উপসংহার

পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য সম্পর্কে তো জানলেন। অনুরোধ থাকবে কখনো সুযোগ হলে অবশ্যই বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত এই ধর্ম শিক্ষাদান কেন্দ্র হতে ঘুরে আসার ৷ যারা কখনো ভারতের নালন্দা মহাবিহার হতে ঘুরে আসার সুযোগ পাননি বা যারা এই মহাবিহারের কোনো নির্দিষ্ট তুলনা খুঁজছেন তারা পাহাড়পুর বিহার থেকে ঘুরে আসতে পারেন৷ অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকের এই বিহারের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে আপনি কি ভাবছেন, তা জানাতে ভুুলবেন না কিন্তু। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় কিংবা স্কুলের পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও শক্তিশালী করতে চাইলে আপনি সুন্দরবন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য এই পোস্টটি পড়তে পারেন।

“পাহাড়পুর সম্পর্কে ১০টি বাক্য” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *