Skip to content
Home » চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না?

চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না?

What Can Not Be Eaten When The Eyes Are Raised

চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না সবারি জানা জরুরী। চোখ ওঠা খুব পরিচিত একটি সমস্যা। একে ডাক্তারি ভাষায় কনজাঙ্কটিভাইটিস বলা হয়। চোখ ওঠার সমস্যা সাধারণত বিশেষ কোনো চিকিৎসা ছাড়াই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। চোখ ওঠার সমস্যা একজন থেকে আরেকজনে দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে। চোখ উঠলে সাধারণত দুই চোখই আক্রান্ত হয়। 

চোখ ওঠা রোগ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই এ রোগ ভালো হয়ে যায়। কারো কারো বেলায় হয়তো ১৫ দিনের মতো সময় লাগতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, এ রোগটি ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দুই কারণেই হতে পারে। যাদের চোখ জ্বালাপোড়ার সঙ্গে ময়লা আসে তাহলে সেটা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন। একে বলে ব্যাকটেরিয়াল কনজাংটিভাইটিস। আর শুধু ভাইরাল ইনফেকশন হলে চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং লাল হলে হয়ে যায়। 

চোখা উঠা কি?

চোখ উঠা এর ইংরেজি হলো Conjunctivitis. বাংলা হচ্ছে চোখের ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। সাধারণভাবে প্রচলিত কথায় ‘চোখ ওঠা’ বলতে চোখ লাল হওয়াকে বুঝানো হয়ে থাকে। কিন্তু চোখ লাল হওয়া একটি উপসর্গ মাত্র। নানা কারণে চোখ লাল হতে পারে। চোখের কনজাঙ্কটিভাইটিস রোগটি বাংলাদেশে ‘চোখ ওঠা’ নামেপরিচিত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এর  আরেক নাম “জয় বাংলা রোগ”। রোগটি পূর্ব বাংলায় চলা মুক্তিযুদ্ধের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসা বাঙালি শরণার্থীদের কারণেই ছড়িয়েছিলো বলে এর নাম দেয়া হয়েছিল ‘জয় বাংলা’ রোগ।  ‘জয় বাংলা’র প্রকোপ এতোটাই ছিলো, যে সেই সময় ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।

চোখ উঠার লক্ষন সমূহ

বেশ কয়েটি লক্ষন আছে যা দেখে আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত হতে যাচ্ছি। 

  • চোখের পাতা ফুলে যাওয়া।
  • চোখের সাদা অংশের ওপরের পাতলা স্বচ্ছ পর্দা ফুলে যাওয়া।
  • খচখচ করা কিংবা জ্বালাপোড়া করা এবং চুলকানো। চোখ ওঠার কারণে চোখ লাল হয়ে খচখচ করলে সেটা সাধারণত ছোঁয়াচে হয়ে থাকে।
  • চোখের মধ্যে বালি জাতীয় কিছু ঢুকেছে এমন ভাব হওয়া অথবা চোখে ভিষন চুলকানি হওয়া।
  • চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি।

চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না?

আপনি কি চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না এ ব্যাপারে জানতে চাচ্ছেন? চোখ উঠলে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলি চোখের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। আপনার সমস্যাকে আরো জটিল ও লম্বা করতে পারে। চলুন চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না তালিকাটি জেনে নেই।

চোখ উঠলে কিছু কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সাধারনত যেসকল খাবারে চুলকানির সমস্যা আছে সেই সকল খাবার খাওয়া যাবে না। বিশেষ করে  ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, পুঁইশাক, বেগুন,মিষ্টি, কদু, শিম, মসুরের ডাল, ইত্যাদি। এইসব খাবারে এলার্জি বেড়ে যায় যা চোখে চুলকানি হয়।

১। ইলিশ মাছ

Hilsa Of Banskhali

১০০ গ্রাম ইলিশ মাছে প্রায় ৩১০ গ্রাম ক্যালরি, ২২ গ্রাম প্রোটিন ও ১৯.৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে। মাছের তেলে থাকে পলিআনস্যাচুরেটেড ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ইপিএ ও ডিএইচএ, যেগুলো হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, অ্যারিথেমিয়া, ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিসসহ ব্রেন ডেভেলপমেন্ট এবং ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষভাবে কার্যকরী রাখে। ইলিশ থেকে প্রাপ্ত মিনারেল ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়তা করে। অনেকেই আছেন যাদের ইলিশ মাছ খেলে অ্যালার্জির সমস্যা হয়। এমন হলে তাদের ইলিশ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চোখ উঠলে ইলিশ খেলে আরও সমস্যা বেড়ে যায়।

২। চিংড়ি মাছ

Shrimp Fish

চিংড়িতে এ্যালার্জি আছে। চিংড়িতে ট্রপোমায়েসিন নামক একটি প্রোটিন থাকে যা এ্যালার্জি সৃষ্টি করে থাকে। যাদের এল্যার্জি আছে চিংড়ি না খাওয়াই ভালো বিশেষ করে যখর আপরার চোখ উঠবে। এতে চোখের চুলকানি আরও বেড়ে যেতে পারে।

৩। পুঁইশাক

Puishak

পুঁইশাকের একটি অপকারিতা হচ্ছে এটি খেলে এ্যালার্জি বেড়ে যায়। যাদের এর্লাজির সমস্য রয়েছে তারা বেশি পরিমানে এই শাক খেলে এর্লাজির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।পুঁইশাক অক্সালেটস সমৃদ্ধ, এটি গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের তরল পদার্থে অক্সালেটস এর পরিমাণ বেড়ে যায় এবং এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে চোখ উঠলে এই শাক খেলে চোখের চুলকানি বেড়ে যায় এবং ভালো হতে আরও বেশি সময় লাগে।

৪। বেগুন

Eggplant

যারে এ্যালার্জি আছে তাদের বেগুন না খাওয়াই ভালো। বেগুন প্রচুর পরিমানে এ্যালার্জি আছে। চোখ উঠলে সবার উচিত বেগুন এড়িয়ে যাওযা।  এসময় বেগুন খেলে চোখ আরো ফলে যায়।

৫। মিষ্টি

Satkhira Ladu

মিষ্টি সুস্বাধু খাবার । কিন্তু মিষ্টিতে প্রচুর পরিমানে এ্যালার্জি রয়েছে। যাদের এ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের মিষ্টি না খাওয়াই ভালো। বিশেষ করে যখন আপনার চোখ উঠবে।

৬। কদু

Gourd

কদু একটি সুস্বাধু ও পুষ্টিকর খাবার। কদুতে এ্যালার্জি আছে। তাই চোখ উঠলে কদু খেতে নিষেধ করে ডাক্তারগন।

৭। শিম

The Bean

কারো কারো শিম খেলে মাইগ্রেনের তীব্রতা বাড়তে পারে। মাথাব্যথা হতে পারে। এছাড়া শরীরে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে শিম খাওয়া বাদ দিতে হবে। চোখ উঠলে তো কোনভাবেই শিম খাওয়া যাবে না। 

৮। মসুর ডাল

Lentils

মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি রয়েছে । আমাদের বাজারে যেসকল ডালগুলো রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এলার্জি রয়েছে মসুরের ডালে। সাধারণভাবে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে বা ছোটখাটো লক্ষণ দেখা দেয় তাদের ক্ষেত্রে মসুরের ডাল এড়িয় যাওয়াই সবচেয়ে উত্তম।  

৯। মাংস জাতীয় খাবার

The Meat

মাংসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এলার্জি থাকে গরুর মাংসে এবং হাঁসের মাংসে । শুধুমাত্র হাঁস এবং গরুর মাংসই নয় হাঁসের ডিম এবং গরুর দুধেও প্রচুর পরিমাণে এলার্জি থাকে। হাঁস এবং গরুর মাংস ও দুধ ডিম খাওয়ার ফলে চর্ম এবং রক্তে এলার্জির সংক্রমণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় ।  তাই চোখ উঠলে এই খাবারগুলি খাওয়া যাবে না।

১০। মাছ জাতীয় খাবার

The Fish

প্রতিটা মাছের শরীরে কম বেশি এলার্জি রয়েছে । তবে মানুষের শরীরে থাকা এলার্জির উপরে নির্ভর করে কোন মাছ খেলে এলার্জির সংক্রমণটা কতটা বৃদ্ধি পাবে । তবে সব ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে এর প্রভাব নাও করতে পারে। মাছগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে পুঁটি এবং চিংড়ি মাছে। চোখ উঠলে অবশ্যই এই মাছগুলি খাওয়া যাবে না।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

চোখ ওঠার কতদিন পর ভালো হয়?

ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ উঠলে তা পুরোপুরি সেরে উঠতে ২ সপ্তাহ সময় লাগে। ভাইরাসের কারণে চোখ উঠলে সেটা সাধারণত ৭–১৪ দিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। 

চোখ ওঠা কি ছোঁয়াচে রোগ?

সব ধরনের চোখ ওঠা ছোঁয়াচে রোগ নয়। ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে চোখ উঠলে সেটি ছোঁয়াচে হয়। তবে অন্যান্য কারণে (এলার্জি) চোখ উঠলে সেটা ছোঁয়াচে রোগ নয়।

চোখ ওঠার ঔষধ কি?

চোখ উঠলে বিভিন্ন চোখ ওঠার ড্রপের সাহায্যে চিকিৎসা করা যায়। যেমন— আর্টিফিশিয়াল টিয়ার,অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ, অ্যান্টিহিস্টামিন ড্রপ। চোখের ড্রপ এর পাশাপাশি ডাক্তার কখনো কখনো মুখে খাওয়ার ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন।

উপসংহার

চোখ উঠা রোগ খুবই স্বাভাবিক ও সাধারন ব্যাপার। এটা নিয়ে এত ভয় পাওয়ার কোন কারন নেই। চোখে ময়লা হলে মাঝে মধ্যেই চোখ উঠা রোগ হয়ে থাকে। যার মাধ্যমে চোখ পরিস্কার হয়ে যায়। এর চিকিৎসা ব্যবস্থাও খুবই সাধারন। কিছু নিয়ম মেনে চললে ওষুধও ব্যবহার করতে হয় না। এমনিতেই ১০ থেকে ১৫ দিন পর ভালো হয়ে যায়। চোখ উঠলে যে বিষয়গুলো খুবই কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে তা হলো এই সময় কি কি করা যাবে না বা চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না । এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবে না” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *