এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এ সমন্ধে অবগত হওয়া একজন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকল মানুষের শরীরে এক একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম থাকে, কোনো কারণে এই ইমিউন সিস্টেমে গোলযোগ দেখা দিলে তখনই এলার্জি দেখা দেয়। কারও শরীরে এলার্জি দেখা দিলে চুলকানি, জিহ্বা ফুলে যাওয়া, বমি, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট বা রক্তচাপ কম হয়ে যায়। এলার্জি সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘটে। আজকের এই পোস্টটিতে এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এই বিষয় নিয়েই সাজানো হয়েছে। তাই এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
এলার্জি কি?
পরিবেশে অবস্থিত কতগুলো বস্তুর উপস্থিতিতে কিছু কিছু ব্যক্তির দেহের প্রতিরক্ষাতন্ত্রের অতিসংবেদনশীলতার কারণে সৃষ্ট কতগুলি তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়াকে বুঝায়। এই বস্তুগুলি অধিকাংশ ব্যক্তির ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো সমস্যা তৈরি করে না। এই বিরূপ প্রতিক্রিয়াগুলিকে একত্রে এলার্জি বা “অতিপ্রতিক্রিয়াজনিত ব্যাধি” বলা হয়।
এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ?
আমাদের শরীরে প্রতিরক্ষার ব্যবস্থার একটি ত্রুটি হলো এলার্জি। তাই আমাদের এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এই সমন্ধে অবগত হওয়া প্রয়োজন। কারণ কারও শরীরে যদি এলার্জি দেখা দেয় তবে অতিরিক্ত চুলকানি বমি, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট বা রক্তচাপ কম হওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিম্নে এলার্জি হলে কি কি খাওয়া উচিত নয় তা উল্লেখ করা হলো-
- চিংড়ি মাছ
- গরুর মাংস
- গরুর দুধ
- চিনাবাদাম
- ডিম
- শেলফিশ
- মাছ
- গাছ বাদাম
- সয়া গম
- চাল এবং ফল
একজন ব্যক্তির শরীরে এলার্জি দেখা দিলে এ সব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতে হবে। তাছাড়াও শরীরে এলার্জি সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে কথা বলতে হবে।
এলার্জি হওয়ার লক্ষণ ও উপসর্গ
কোন ব্যক্তির শরীরে যদি এলার্জি হয় তবে বিভিন্ন লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এলার্জি সাধারণত দ্রুত শুরু হয় কয়েক সেকেন্ড থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। এলার্জি শুরু হলে নিম্নে লক্ষণ ও উপসর্গগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
- মুখ, ঠোঁট, জিহ্বা, গলা, চোখ, ত্বক, সহ শরীরে অন্যন্য জায়গায় চুলকানি হয়
- ফুসকুড়ি
- হাইভস
- পুরো মুখ ফুলে যায়
- খাবার গিলতে সমস্যা হয়
- সর্দি কিংবা নাক বন্ধ হয়ে যায়
- কর্কশ কণ্ঠ হয়ে যায়
- ডায়রিয়া, পেট ব্যথা হয়
- মাথা হালকা হয়ে যাওয়া
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- বমি বমি ভাব
- বমি করা
কোন ব্যক্তির শরীরে এলার্জি দেখা দিলে এসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই আপনার শরীরে যদি এলার্জি হয় তাহলে ঘরে বসে না থেকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।
এলার্জির চিকিৎসা সমূহ
শরীরে এলার্জি হলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে পরামর্শ গ্রহণ করে এলার্জির চিকিৎসা করার প্রয়োজন। আসলে এলার্জির স্থায়ী কোন চিকিৎসা নেই। কারণ এটার সম্পর্ক ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে। তাই যাদের যেসব বস্তু বা খাবারে এলার্জি রয়েছে তা পরিহার করে চলাই ভাল। আর অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরার কারণে যাদের এলার্জিক উপসর্গগুলো দেখা দেয় তারা মেডিসিন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন। এলার্জিতে যেহেতু হিস্টামিন প্রচুর পরিমাণে রিলিজ হয়ে থাকে তাই এলার্জি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে হিস্টামিন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে আর সে জন্য এলার্জিক কন্ডিশনে এন্টিহিস্টামিন হচ্ছে এলার্জির মূল চিকিৎসা।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।
এলার্জির সবচেয়ে কার্যকারী ঔষধের নাম কি?
এলার্জির চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকারী ঔষধ হলো অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ।
এলার্জি দূর করার উপায় কি?
এলার্জি দূর করার ঘরোয়া ও কার্যকরী উপায় হলো পরিমাণ মত পুষ্টিকর খাবার, বিশেষ করে ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার, যেমন: লেবু, কমলা, মাল্টা, স্ট্রবেরি, জাম্বুরা, কাঁচা মরিচ, পেয়ারা ইত্যাদি ফল ও তাজা শাকসবজি নিয়মিত খেতে হবে এবং ধূলাবালির কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন।
উপসংহার
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এলার্জি প্রতিরোধের উপায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এলার্জি্র কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই। তাই এলার্জি হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করলে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিলে এমনিতেই এলার্জি সেরে যাবে।
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এই সমন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে আপনি জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয়? এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
“এলার্জি হলে কি কি খাওয়া নিষেধ?” এই বিষয়ে সমন্ধে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তাহলে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।