Skip to content
Home » আঁশযুক্ত খাবার কি কি?

আঁশযুক্ত খাবার কি কি?

fibrous foods

আঁশযুক্ত খাবার কি কি এ সম্পর্কে অবগত হওয়া একজন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বেঁচে থাকার জন্য মানুষের বিভিন্ন ধরনের খাদ্যাভ্যাসের প্রয়োজন হয়। মানুষের জীবনে আঁশযুক্ত খাবারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আঁশযুক্ত খাবার ফল, সবজি ও শস্যের এমন অংশ যা আমাদের পাকস্থলী সহজে হজম করতে পারে না।  আঁশযুক্ত খাবার আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও পাইলস এর মতো সমস্যা প্রতিরোধেও ফাইবারের বিশেষ ভূমিকা রাখে। আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে আঁশযুক্ত খাবার কি কি তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল। 

আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে? 

উদ্ভিদ জাতীয় কিংবা উদ্ভিদ হতে প্রাপ্ত যে কোন ধরনের শাক,সবজী, ফলমূল ইত্যাদি খাবারের যে অংশটুকু আমাদের দেহের পরিপাকতন্ত্র হজম করতে পারেনা, কিংবা শোষণ করতে পারেনা, সেটুকুই হলো আঁশ যুক্ত খাবার। মানুষের পরিপাকতন্ত্র শর্করা, আমিষ কিংবা চর্বি জাতীয় খাবার হজম এবং শোষন করতে পারলেও সেলুলোজ নির্মিত উদ্ভিদ অংশ হজম করতে পারেনা। সেলুলোজ নির্মিত এই উদ্ভিদ প্রাপ্ত খাবারগুলোকেই মূলত আঁশযুক্ত খাবার বলা হয়।

আঁশযুক্ত খাবার কি কি?

আঁশযুক্ত খাবার কি কি? প্রশ্নটি আমাদের মনে হয়তো বরাবরই উঁকি দেয়। আঁশযুক্ত বা ফাইবার জাতীয় খাবার দুই প্রকারের হয়ে থাকে – দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয়। উভয় প্রকারের আশ জাতীয় খাবার আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা প্রয়োজন। কেননা আশ বা ফাইবার জাতীয় খবার আমাদের পাকস্থলী সহজে হজম করতে পারে না।

আঁশযুক্ত খাবার আমাদের দেহের অতিরিক্ত ওজন, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও পাইলস এর মতো সমস্যা প্রতিরোধেও আশ জাতীয় খাবার বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিম্নে আঁশ যুক্ত খাবার কি কি তা উল্লেখ করা হলো-

১। দ্রবণীয় ফাইবার

যে ফাইবারযুক্ত খাওয়ার পর তা পানিতে মিশে ‘জেল’ জাতীয় পদার্থে পরিণত হয় তাকে  দ্রবণীয় ফাইবারযুক্ত খাবার বলা হয়। এ জাতীয় খাবার হজম করার গতি কমিয়ে দেয়, ফলে আমাদের পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। দ্রবণীয় ফাইবারের কিছু ভালো খাবারের উৎস হলো—

  • মটরশুঁটি, শিম ও বিন জাতীয় খাবার 
  • ডাল
  • ফলমূল
  • শাকসবজি
  • ওটস ও বার্লি
  • এভোকাডো
  • মিষ্টি আলু 
  • নাশপাতি
  •  আপেল
  • ব্রকলি
  • গাজর
  • জই
  • রাই
  • চিয়া
  • যব
  • ইসুবগুল ভুসি 
  • তিসি বীজ

২। অদ্রবণীয় ফাইবার

যে ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার পর পানিতে মিশে যায় না। পরিপাক নালীর ভেতরে হজম প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময়ে এগুলো গোটা অবস্থাতেই থাকে এবং অদ্রবণীয় ফাইবার পানি শোষণ করার মাধ্যমে পায়খানা নরম করতে সাহায্য করে তাকে মূলত অদ্রবণীয় ফাইবার বলা হয়। 

এ ছাড়া এটি মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে অনেক বেশী সহয়তা করে। যার ফলে শরীর থেকে সহজেই মল বেরিয়ে যেতে পারে। এভাবে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে ও পায়খানা নিয়মিত হতে সহায়তা করে। অদ্রবণীয় ফাইবারের কিছু ভালো খাবারের উৎস হলো—

  • ফুলকপি 
  • আলু
  • সবুজ
  • সীম
  • গম
  • ভুট্টা
  • পূর্ণশস্য বা হোল গ্রেইন খাবার
  • লাল আটা
  • বাদাম
  • খোসা ও বিচিসহ ফল-সবজি

আঁশযুক্ত খাবারের উপকারিতা সমূহ

শরীর সুস্থ্য রাখার জন্য আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আঁশযুক্ত খাবার বা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের অনেক উপকারিতা রয়েছে নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো-

  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • রক্তে যদি কোলেস্টেরল এর মাত্রা অনেক বেশী থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • রক্তের সুগারের পরিমান বেশী হলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 
  • ডাইভারটিকুলার ডিজিজ এর মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 

দৈনিক কতটুকু আশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত?

প্রাপ্ত বয়সের উপর নির্ভর করে অথবা বয়সভেদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কতটুকু আশাযুক্ত বা ফাইবার সমৃদ্ধ থাকা উচিত তা নিচের ছকে তুলে ধরা হয়েছে—

বয়সদৈনিক যতটুকু ফাইবার খাওয়া উচিত
২–৫ বছর ১৫ গ্রাম
৫–১১ বছর২০ গ্রাম
১১–১৬ বছর২৫ গ্রাম
১৭ বছর ও তদূর্ধ্ব  ৩০ গ্রাম

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ 

আঁশযুক্ত খাবার কি কি এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।

প্রতিদিন কত গ্রাম ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত? 

একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ২৫-৩০ গ্রাম  আঁশযুক্ত খাবার বা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। 

আঁশযুক্ত সবজিগুলো কি কি?

আঁশযুক্ত সবজিগুলো হলো বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি আলু, মিষ্টি আলু, শস্য, ওটস, বার্লি, কলা, নানা ধরনের বাদাম, শুকনা ফল, স্ট্রবেরি ইত্যাদি হলো আঁঁশযুক্ত খাবার।

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা আঁশযুক্ত খাবার কাকে বলে আঁশযুক্ত খাবার কি কি ও কত প্রকার ও কি কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আমাদের জীবনে আঁশযুক্ত খাবারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত।  বিভিন্ন বীজ, ফলের খোসা, গমের রুটি ও বাদামি ভাতেও আঁশ থাকে। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অদ্রবণীয় আঁশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে আঁশযুক্ত খাবার কি কি এই সমন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে আপনি পুষ্টি কত প্রকার ও কি কি? এই পোস্টটি পড়তে পারেন। 

“আঁশযুক্ত খাবার কি কি?” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *