Skip to content
Home » ১০ টি নদীর নাম

১০ টি নদীর নাম

10 river names

১০ টি নদীর নাম নদীমাতৃক দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলের জানা জরুরি। বাংলাদেশ একটি নদী নির্ভর দেশ। শত-সহস্র নদী-নালা, খাল-বিল জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সারা দেশে। কিছুকাল পূর্ব পর্যন্ত নদীই ছিল দেশবাসীর যোগাযোগের প্রধান পথ। নদীই ছিল ছোট্ট এই দেশটির বিচ্ছিন্নতা ও যোগাযোগের প্রধান উপায়। ধীরে ধীরে প্রধান নদীগুলোর ওপর সেতু তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হয়ে উঠছে। নদীই বাংলাদেশের প্রাণ।

এ দেশের বুক চিরে বয়ে গেছে প্রায় ৮০০ এর বেশি নদ-নদী। দেশের প্রায় ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার এলাকা দখল করে রেখেছে নদীগুলো। বাংলাদেশের সংস্কৃতি, রাজনীতি, ঐতিহ্য ও অর্থনীতির সঙ্গে এসব নদীর রয়েছে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। অধিক সংখ্যক নদী থাকার কারণে বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশও বলা হয়ে থাকে। এজন্য এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির উপর নদীর প্রভাব রয়েছে বেশ। পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা ও কর্ণফুলী বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদী। এ নদ-নদীগুলোর আবার উপনদী ও শাখানদীও রয়েছে। উপনদী ও শাখানদীসহ বাংলাদেশের নদীর মোট দৈর্ঘ্য হলো প্রায় ২২,১৫৫ কিলোমিটার এর উপর। 

নদী কাকে বলে?

নদী যার সমার্থক শব্দ হলো তটিনী, তরঙ্গিনী বা সরিৎ ইত্যাদি। সাধারণত মিষ্টি জলের একটি প্রাকৃতিক জলধারা যা ঝরনাধারা, বরফগলিত স্রোতধারা হয়ে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট নদী পথ হয়ে বয়ে চলা শেষে সাগর, মহাসাগর, হ্রদ বা অন্য কোন নদী বা জলাশয়ে গিয়ে পতিত হয় । অন্যভাবে বলা যায়, ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে ভূমির ঢাল অনুসারে প্রবাহিত যে স্বাভাবিক জলধারা বৃষ্টির জল বা তুষার গলা জলে পুষ্ট হয়ে কোনো সমুদ্রে বা হ্রদে বা অন্য কোনো জলধারায় মিলিত হয় তাকে নদী বলে। সহজ করে বললে, যে জলশ্রোত কোনো হৃদ, পর্বত ইত্যাদি জলাধার হতে উৎপন্ন হয় এবং বিভিন্ন জনপদের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অন্য কোনো জলাশয়ে গিয়ে পতিত হয় তাকে নদী বলে। যেমনঃ পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ইত্যাদি।

১০ টি নদীর নাম

বাংলাদেশে ছােটো বড় মিলিয়ে প্রায় সাতশ নদ-নদী রয়েছে। নদীর যেমন রয়েছে উপকারিতা, তেমনি রয়েছে অপকারিতা। ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসারসহ যােগাযােগ ও পরিবহনে নদীর গুরুত্ব এখন আগের মতই। আগে যেমন বর্তমানেও তেমনি নদীকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন ব্যবসায়-কেন্দ্র গড়ে উঠছে । এসব নদীগুলোর মধ্যে মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, কর্ণফুলি প্রভৃতি প্রধান নদ-নদী। এগুলাের উপনদী ও শাখা নদীগুলাে সারাদেশে জালের মতাে ছড়িয়ে আছে । নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে  ১০ টি নদীর নাম উল্লেখ করা হলো-

১। পদ্মা 

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী পদ্মা। গঙ্গা নদী হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এরপর প্রথমে দক্ষিণ-পশ্চিম ও পরে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে ভারতের হরিদ্বারের নিকট সমভূমিতে পতিত হয়েছে। এরপর ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহার রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান নামক স্থানে ভাগীরথী নামে এর একটি শাখা বের হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়েছে। গঙ্গা নদীর মূল প্রবাহ রাজশাহী অঞ্চলের দক্ষিণ- পশ্চিম প্রান্তে প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সীমানা বরাবর এসে কুষ্টিয়ার উত্তর- পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

এরপর দৌলতদিয়ার নিকট যমুনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে নদীটি। গঙ্গার মূল ধারা হওয়াতে দৌলতদিয়া পর্যন্ত এই নদীটি গঙ্গা নদী নামেই পরিচিত। তবে বাংলাদেশে প্রবেশের পর থেকেই স্থানীয়ভাবে সবােই একে পদ্মা নামে চেনে। গঙ্গা ও যমুনার মিলিত ধারা পদ্মা নামে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে চাঁদপুরের কাছে মেঘনার সাথে মিলিত হয়েছে। এই তিন নদীর মিলিত প্রবাহ মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। মাথাভাঙা, ভৈরব, গড়াই, কুমার, মধুমতী, আড়িয়াল খাঁ ইত্যাদি পদ্মা নদীর প্রধান শাখানদী। নাগর, পাগলা, কুলিকপুনর্ভবা ও ট্যাংগন মহানন্দার উপনদী ।

২। ব্রহ্মপুত্র

ব্রহ্মপুত্র নদ হিমালয় পর্বতের কৈলাস শৃঙ্গের নিকটে মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথমে তিব্বতের উপর দিয়ে পূর্ব দিকে ও পরে আসামের ভিতর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছে। তারপর ব্রহ্মপুত্র কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর দেওয়ানগঞ্জের কাছে দক্ষিণ-পূর্বে বাঁক নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরববাজারের দক্ষিণে মেঘনায় গিয়ে পতিত হয়েছে। তিস্তা ও ধরলা  ব্রহ্মপুত্রের প্রধান উপনদী এবং বংশী ও শীতলক্ষ্যা প্রধান শাখানদী ।

৩। যমুনা 

বাংলাদেশের আরেকটি অন্যতম প্রধান নদী হলো যমুনা। ময়মনসিংহ জেলার দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্রের শাখা যমুনা নদী নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে দৌলতদিয়ার কাছে গঙ্গার সঙ্গে মিলিত হয়ে পদ্মা নাম ধারণ করে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়েছে। আত্রাই ও করতোয়া যমুনার প্রধান উপনদী। ধলেশ্বরী এর শাখানদী এবং আবার ধলেশ্বরীর শাখানদী বুড়িগঙ্গা ।

৪। মেঘনা 

আসামের বরাক নদী নাগা-মণিপুর অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশের সিলেট জেলায় প্রবেশ করেছে। উত্তরের শাখা সুরমা পশ্চিম দিকে ছাতক, সুনামগঞ্জ,সিলেট, শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আজমিরীগঞ্জের কাছে উত্তর সিলেটের সুরমা, দক্ষিণ সিলেটের কুশিয়ারা নদী এবং হবিগঞ্জের কালনী নদী একসঙ্গে মিলিত হয়েছে। পরে কালনী, সুরমা ও কুশিয়ারার মিলিত প্রবাহ কালনী নামে দক্ষিণে কিছুদূর প্রবাহিত হয়ে আবার মেঘনা নাম ধারণ করেছে। মেঘনা ভৈরববাজারের দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়েছে এবং চাঁদপুরের কাছে পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশে মেঘনা বিধৌত অঞ্চল হচ্ছে ২৯,৭৮৫ বর্গকিলোমিটার। বাউলাই, মনু, তিতাস, গোমতী মেঘনার উপনদী।

৫। কর্ণফুলী

আসামের লুসাই পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ২৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কর্ণফুলী নদী রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এটি চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির প্রধান নদী। কর্ণফুলীর প্রধান উপনদী কাসালং, হালদা এবং বোয়ালখালী। কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে ‘কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত।

৬। শীতলক্ষ্যা নদী

শীতলক্ষ্যা নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বাংলাদেশের একটি অন্যতম শান্ত নদী। এই নদীর আরেক নাম লক্ষ্যা। এটি ব্রহ্মপুত্র নদের একটি উপনদী বটে। ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত শীতলক্ষ্যার উৎসস্থল গাজীপুরের টোকে। সেখান থেকে নরসিংদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের কলাগাছিয়ার কাছে ধলেশ্বরী নদীতে গিয়ে পড়েছে। এর উপরিভাগের একটি অংশ বানার নদী নামে বিশেষভাবে পরিচিত।

শীতলক্ষ্যার প্রকৃতি সর্পিলাকার। শীতলক্ষ্যা কোথাও ১০০ মিটার আবার কোথাও ৩০০ মিটার পর্যন্ত চওড়া হয়েছে। সর্বোচ্চ পানির প্রবাহ দুই হাজার ৬০০ কিউসেক । এই নদীর নাব্যতা সারা বছর প্রায় একই রকম থাকে। শান্ত নদী বলে এর ভাঙনপ্রবণতা অনেক কম। আগে বাংলার রাজধানী ছিল সোনারগাঁ। ইংরেজ আমলেও এই নদীর খুব কদর ছিল। তখন এই নদীর পাশেই অনেক বসতি গড়ে ওঠে। অনেক কলকারখানা স্থাপনের ফলে এলাকাটি জমজমাট হয়।

৭। গোমতী নদী

গোমতী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পূর্বপ্রান্তীয় পার্বত্য অঞ্চল ডুমুর নামক স্থান থেকে উৎপন্ন হয়েছে। এই নদীটি উৎস থেকে পার্বত্যভূমির মধ্য দিয়ে ১৫০ কিলোমিটার পথ পার হয়ে কুমিল্লা সদর উপজেলার বিবিরবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ ভূখন্ডে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশে প্রবেশের পর এটি আঁকাবাঁকা প্রবাহপথে কুমিল্লা শহরের উত্তর প্রান্ত এবং ময়নামতীর পূর্ব প্রান্ত অতিক্রম করে বয়ে চলেছে।

এটির প্রবাহপথের উত্তর দিকে বুড়িচং উপজেলাকে ডানে রেখে এটি দেবিদ্বার উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কোম্পানীগঞ্জ বাজারে পৌঁছেছে। ময়নামতি থেকে কোম্পানীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কিলোমিটার। কোম্পানীগঞ্জ থেকে পশ্চিম দিকে বাঁক নিয়ে নদীটি শেষাবধি দাউদকান্দি উপজেলার শাপটা নামক স্থানে এসে মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ এবং দাউদকান্দির মধ্যে নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বাংলাদেশ ভূখন্ডে গোমতী নদীর মোট দৈর্ঘ্য ১৩৫ কিমি। 

৮। তিস্তা

তিস্তা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী। বাংলাদেশ-ভারতের  আন্তঃসীমান্ত নদীটি ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি বিভাগের প্রধান নদী। একে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের জীবনরেখাও বলা হয়ে থাকে। সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করে তিস্তা ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। আগে নদীটি জলপাইগুড়ির দক্ষিণে তিনটি ধারায় প্রবাহিত হতো ।

১৭৮৭ সালের পর তিস্তা তার পুরনো গতিপথ পরিবর্তন করে লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে এসে মিলেছে। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩১৫ কিলোমিটার, যার মধ্যে ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশ অংশে। তিস্তার মাসিক গড় পানি অপসারণের পরিমাণ দুই হাজার ৪৩০ কিউসেক প্রায়। সিকিমের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় তিস্তা অনেকগুলো গিরিখাত সৃষ্টি করেছে। 

৯। সাঙ্গু

সাঙ্গু নদী বাংলাদেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। শঙ্খ নদী নামেও এটি পরিচিত। এটি কর্ণফুলীর পর চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম একটি নদী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও বাঁশখালীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পতিত হয়েছে। ১৮৬০ সালে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গেজেটিয়ার প্রকাশকালে ব্রিটিশ শাসকরা ইংরেজিতে এটিকে সাঙ্গু নাম দিয়েছিলেন। তবে মারমা সম্প্রদায়ের ভাষায় সাঙ্গুকে ‘রিগ্রাই থিয়াং’ অর্থাৎ স্বচ্ছ পানির নদ বলা হয়। বান্দরবানের সাঙ্গু-তীরবর্তী লোকজনের মধ্যে শতকরা ৯০ জনই মারমা। জীবন-জীবিকাসহ দৈনন্দিন কাজে এরা নদীটির ওপর নির্ভরশীল তারা। বাংলাদেশের বেশির ভাগ নদী উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। কিন্তু সাঙ্গু নদী বান্দরবানের দক্ষিণাঞ্চলে সৃষ্টি হয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমে বাঁক নিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে শেষ হয়েছে।

১০। মাতামুহুরী

লামার মাইভার পর্বত থেকে এই নদীটির উৎপত্তি হয়েছে। মগ ভাষায় নদীটিকে ডাকা হয় মামুরি নামে যার বাংলা সংস্করণ মাতামুহুরী। মাতামুহুরী নদী বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার ও প্রস্থ ১৫৪ মিটার এবং নদীটির আকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক মাতামুহুরী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ১৩।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহস 

১০ টি নদীর নাম এই বিষয়ে আপনার মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

বাংলাদেশের বৃহত্তম নদী কোনটি?

পদ্মা বাংলাদেশের একটি প্রধান নদী। এটি হিমালয়ে উৎপন্ন গঙ্গানদীর প্রধান শাখা এবং বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী। বাংলাদেশে এই নদীটির দৈর্ঘ্য ৩৪৫ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ১০ কিলোমিটার এবং নদীটির আকৃতি সর্পিলাকার।

নদী শাসন কাকে বলে?

দেশের নদীগুলোর সাধারনত দুপারেই ভুমি ক্ষয় হয় ও পার ভেঙ্গে যায়। এতে জমি-জমা, বাড়ি-ঘর হারিয়ে যায়। এধরনের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করার জন্য নদীপৃষ্ঠ থেকে পাড়ের উচ্চতায় বড় বড় পাথর ফেলে বা কংক্রিটের তৈরী ব্লক দিয়ে পানির স্রোত এবং পাড়ের মাঝে বাঁধের মত বানিয়ে পারের ভাঙ্গন রোধ করা হয়। এটা নদী এটাই নদী শাসনের একটি উপায়। নদীর নাব্যতা ও গভীরতা বজায় রাখার জন্য নদীর তলদেশের বালি উত্তোলন করা, পানি প্রবাহ ও নদীর পরিবেশ ধরে রাখা নদীশাসনের আরেকটি উপায়।

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা ১০ টি নদীর নাম সম্পর্কে জানলাম। নদীর ভূমিকা প্রতিটি দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নদী  কৃষি, শিল্প,পরিবহন , পর্যটন ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নদীর জল সেচ, শিল্প,  পানীয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়। নদীর জলজীবী প্রাণী মানুষের খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে বিবেচিত। নদীর সৌন্দর্য্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে থাকে।

বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে নদ-নদীর প্রভাব অপরিসীম। নদ-নদীর শীতল জলের প্রবাহ এদেশের মাটিতে যেমন প্রাণরস সঞ্চার করে ফসলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তােলে তেমনি প্রাত্যহিক জীবনকে জীবিকা সন্ধানের জন্য করে তােলে কর্মচঞ্চল। বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের অসংখ্য মানুষ জীবিকার জন্য নদীর ওপর নির্ভরশীল। জেলে আর মাঝিদের জীবিকার প্রধান উৎস হলো এই নদ-নদী। নদী থেকে নানা প্রজাতির মাছ আহরণ করে এদেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করা হয়। সহজে ও সস্তায় পণ্য পরিবহনের জন্য নৌপথের ব্যবহার এদেশে সেই ‍পুরান কাল থেকেই চলে আসছে।  এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে পরিবেশ দূষণের ৫টি কারণ সম্পর্কে পড়তে পারেন।

১০ টি নদীর নাম” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *