Skip to content
Home » কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে?

কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে?

In which season crops grow best

কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে কৃষি প্রধান দেশের নাগরিক হিসেবে এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। বাংলাদেশে ও ভারত উভয় দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড হল কৃষি। যার উপর ভিত্তি করে লক্ষ লক্ষ লোক জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ফসল চাষের সাফল্য মূলত নির্ভর করে জলবায়ু পরিস্থিতির এবং প্রতিটি মৌসুমের জন্য সঠিক ফসল নির্বাচন করার উপর। বাংলাদেশে সাধারনত ছয়টি ঋতুর উপর ভিত্তি করে বছরের ১২ মাসকে ভাগ করা হয়েছে। আর এই ঋতুর উপর ভিত্তি করেই মূলত মৌসুম নির্ধারন করা হয়ে থাকে। এখানকার কৃষকরা এই ঋতুর উপর ভিত্তি করেই তারা বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষাবাদ করে থাকে। কৃষকরা আবার ইচ্ছা করলেই আবার যে কোন ফসল বছরের যে কোন সময় চাষ করতে পারবে না। কারন বছরের সব সময় আবার সব ধরনের ফসল চাষ হয় না। আজকে আমরা জানবো কোন সময় বা কোন মৌসুমে কোন ধরনের ফসল ভালো হয়। 

ফসলের মৌসুম কি?

ঋতু বা মৌসুম মূলত বছরের একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের সময় যা  একটি নির্দিষ্ট স্বর্বজন গৃহীত কোন সূত্রের ভিত্তিতে স্থির করা হয়। সাধারনত স্থানীয় আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করেই বৎসরের ঋতু ভাগ করা হয় বা মৌসুম নির্ধারন করা হয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত ও শীত- এই চারটি প্রধান ঋতু দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে ১২ টি মাসকে ছয়টি ঋতুকে ভাগ করা হয়েছে। কোন ফসলের বীজ বপন থেকে শুরু করে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত সময়কে সেই ফসলের মৌসুম বলে থাকে। বাংলাদেশের জলবায়ুর উপর নির্ভর করে বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ফসল জন্মে। 

কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে?

বাংলাদেশে ছয়টি ঋতুর সমন্বয়ে গঠিত হলেও সব ঋতুর প্রভাব কিন্তু মমান না। ফসল উৎপাদনের জন্য সারাবছরকে প্রধানত দু’টি মৌসুমে ভাগ করা হয়ে থাকে বা দুটি মৌসুমের প্রভাব বেশি দেখা যায়। নিচে বাংলাদেশের কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে তার সংক্ষিপ্ত বিবরন দেওয়া হলো।

শীতকালীন ফসলের নাম সমূহ 

শীতকালে যে সকল ফসল ফলে তার প্রতিটি মানুষের কম বেশি জানা আছে। নতুন করে বলার তেমন কিছই  নেই। নিচে শীতকালীন ফসলের নাম নিয়ে থাকছে সংক্ষিপ্ত বিবরন যা আমাদের সকলের উপকারে আসতে পারে।

১। লাউ

শীতকালীন সবজির মধ্যে লাউক অন্যতম। লাউ খেলে আমাদের দেহের আদ্রতা ঠিক থাকে। আমাদের দেহের জলের চাহিদা পূর্ণ করে। লাউ এ বেশি পরিমানে জল থাকে।

২। বাঁধাকপি

শীতকালীন পাতা জাতীয় প্রিয় সবজি বাঁধাকপি। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য কাঁচা বাঁধাকপির রস উপকার।  

৩। ফুলকপি

ফুলকপি একটি শীতকালীন সবজি। এই সবজি দিয়ে তরকারি রান্না করা হয় বিশেষ করে মাছের ঝোলের তরকারি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফুলকপিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ এবং আয়রন থাকে। আমাদের দেহের এই উপাদানের ঘাটতি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৪। শিম

শিম সকলের কাছে একটি জনপ্রিয় সবজি। শীমের বীচি অনেকের কাছে প্রিয় খাবার। শিমের মধ্যে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন, শর্করা ও অন্যান্য উপদান থাকে। যা আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করে। 

৫। ব্রকলি

দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো। তবে এটি ফুলকপি নয়। এই সবজির নাম ব্রকলি। ব্রকলিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে। ব্রকলি বহুমূত্র, হৃদরোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 

৬। মুলা

শীতকালের আরেকটি পরিচিত সবজি মুলা। অন্য সময়ে মুলা পাওয়া গেলেও শীতের মুলার স্বাদ তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। মুলাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি রয়েছে। 

৭। পেঁয়াজকলি

শীতকালের পেঁয়াজকলি পাওয়া যায়। পেয়াঁজকলি হলো পেঁয়াজ লাগনোর পর পেঁয়াজের উপরিভাগের অংশ। 

৮। শালগম

শালগমে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন বিদ্যমান থাকে। শালগমে খাবার হিসেবে গ্রহণ করলে শরীর থেকে  খারাপ কোলেস্টেরল ও  উচ্চরক্ত চাপ কমায়। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ও দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে এবং পরিপাকের উন্নতি ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। 

৯। পালংশাক

শীতকালীন সবজির কথা বলবো আর পালংশাক সেই তালিকায় থাকবে না এমনটা নয়। তবে পালংশাক রান্না করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। পালংশাক পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ একটি সবজি। 

১০। টমেটো

টমেটো বর্তমানে সব ঋতুতে পাওয়া গেলেও শীতকালে সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। টমেটো একটি সুস্বাধু ও পুষ্টিগুন সম্বৃদ্ধ খাবার। 

১১। ধনিয়া পাতা

বাঙালিদের কাছে শীতকালে সবচেয়ে পরিচিত একটি সবজি হচ্ছে ধনিয়া পাতা। খাবারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় এই ধনিয়া পাতা। সরাসরি তরকারি হিসেবে ব্যবহার না হলেও তরকারিকে সুস্বাধু করে।

১২। গাজর

উচ্চ বিটা-ক্যারোটিন উপাদানের জন্য গাজর চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য বিখ্যাত। বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত করে। গাজর ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে সরবরাহ করে। গাজর  স্বাস্থ্যকর ত্বক, চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

১৩। মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু সুস্বাদুর দিক দিয়ে অন্যতম। পুষ্টির মাত্রা অনুযায়ী স্বাস্থ্য রক্ষার্থে বিভিন্ন উপকারিতা প্রদান করে। বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজও সরবরাহ করে। ত্বকের স্বাস্থ্য, ইমিউন ফাংশন সহ রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখে।

বর্ষাকালীন ফসলের নাম সমূহ 

বর্ষাকালে সহজেই পাওয়া যায় তথা বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয় বলেই এই সবজিগুলোকে বর্ষাকালীন সবজি বলা হয়ে থাকে। যেমন সুস্বাধু তেমনি পুষ্টিগুনে ভরপুর এই সময়ের সবজি। ছোট থেকে বড়, রোগী থেকে সুস্থ্য কারো জন্য কোন ধরনের ক্ষতিকর দিক নেই। নিচে কয়েকটি বর্ষাকালীন সবজির নাম নিয়ে থাকছে সংক্ষিপ্ত বিবরন যা আমাদের সকলের উপকারে আসতে পারে।

১। লাউ

লাউ একটি জনপ্রিয় বর্ষাকালীন সবজি যা বাংলাদেশে প্রচুর পরিমানে চাষ করা হয়। লাউ-এ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, এ, সি এবং পটাশিয়াম রয়েছে। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সেই সাথে হার্টকে সুস্থ রাখে এবং রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। 

২। করলা

করলা একটি বর্ষাকালীন সবজি। আমাদের মধ্যে যারা ডায়াবেটিকস রোগে আক্রান্ত তারা নিয়মিত করলা খেতে পারেন। কারন করলার পুষ্টি উপাদান ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আবার অনেক সময় পানির সাথে মধু আর করলার রস একত্রে মিশিয়ে খাওয়া হলে অ্যাজমা এবং গলার প্রদাহে দূরীকরনে অনেক উপকারে আসে। 

৩। ঝিঙা

করলার মত ঝিঙাও একটি বর্ষাকালীন মজাদার সবজি। ঝিঙা একটি পুষ্টিকর সবজি যা  ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং সর্দি ও কাশি নিয়ন্ত্রণে ঝিঙার বিশেষ কোন বিকল্প নেই। ঝিঙা চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হল জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস। 

৪। চিচিঙ্গা

চিচিঙ্গা একটি বর্ষাকালীন সবজি হওয়ায় এটি বর্ষাকালীন আবহাওয়ায় ভাল জন্মে থাকে। সাধারণত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস চিচিঙ্গা চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। চিচিঙ্গা একটি পুষ্টিকর সবজি যা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যে কোন ধরনের ক্ষত শুকানোর জন্য চিচিঙ্গা কিন্তু সবার চেয়ে এগিয়ে।

৫। শসা

বর্ষাকালীন সবজি শসা সকলের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। শসা চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হল জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস। শসাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ. ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে। এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ক্ষতিকারক অণু থেকে রক্ষা করে থাকে। 

৬। চালকুমড়া

চালকুমড়াও একটি বর্ষাকালীন পরিচিত সবজি। চালকুমড়া একটি পুষ্টিকর সবজি যা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদান করে থাকে। চালকুমড়ার রয়েছে নানান পুষ্টিগুণ যা আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে,হজমে সাহায্য করে থাকে, রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে ইত্যাদি। 

৭। ধুন্দুল

বর্ষাকালীন সবজি ধুন্দুল চাষের জন্য উপযুক্ত সময় হল জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস। এর মধ্যে থাকা লুটেইন এবং জেক্সানথিন নামক দুটি পুষ্টি উপাদান থাকে যা হাড় এবং দাঁত শক্তিশালী করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ধুন্দুলের মধ্যে বিদ্যমান ভিটামিন-বি ২ ও জিঙ্ক মাথার চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং সেই সাথে চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে থাকে।

৮। মিষ্টি কুমড়া

এটি  একটি বর্ষাকালীন সবজি। মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে যা দৃষ্টিশক্তির জন্য খুবই উপকারী। আবার ভিটামিন সি রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। এবং বি৬ রয়েছে যা শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে। 

৯। বরবটি

বর্ষাকালীন সবজি বরবটি সাধারণত বর্ষার সময় অর্থাৎ মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চাষ করা হয়ে থাকে। বরবটিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এতে বিদ্যমান ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেভ। এবং ভিটামিন ও খনিজ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। 

বারোমাসি ফসলের নাম সমূহ 

বারোমাসি সবজির নাম প্রতিটি মানুষের কম বেশি জানা থাকার কথা। পাতা জাতীয় সবজি গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পালং শাক, লালশাক, সরিষার শাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, ঝিঙাঝিরি শাক, মটরশুঁটি ইত্যাদি। আবার ফল জাতীয় সবজি গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য  টমেটো, বেগুন, শিম, মরিচ, ঢেঁড়স, কুমড়া, শশা, ঝিঙা, লাউ ইত্যাদি এবং মূলজাতীয় সবজি গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলু, গাজর, মূলা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি। নিচে বারোমাসি সবজির নাম নিয়ে থাকছে বিস্তারিত বিবরন যা আপনাদের সকলের উপকারে আসতে পারে।

১। পুঁইশাক

সবুজ ও লাল এই দুই রঙের পুঁইশাক হয়ে থাকে। পুঁইশাকে আছে প্রচুর পরিসানে ভিটামিন ‘বি`, ‘সি` ও ‘এ` পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং আয়রণ আছে। সারাবছর আপনি চাইলে পুঁইশাক চাষ করতে পারেন।

২। লালশাক

লালশাকে প্রচুর পরিমানে আয়রন রয়েছে। নিয়মিত এ শাক খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয়। এ ছাড়াও এ শাকের অ্যান্টিক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। রক্তে কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়। লালশাকে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। 

৩। বেগুন

বেগুনে রয়েছে যে উপাদান তা জ্বর হওয়ার পরে মুখ ও ঠোঁটের কোণের ঘা, জিভের ঘা প্রতিরোধে সহায়তা করে। স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বক ও চুল ভাল রাখে। বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ই এবং কে। বিশেষজ্ঞদের মতে ভিটামিন এ চোখে পুষ্টি জোগায় এবং চোখের যাবতীয় রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বেগুন সারাবছর চাষ করা যায়।

৪। কুমড়া

চোখ ভালো রাখে ভিটামিন ‘এ’। ওজন কমায় কুমড়াতে ক্যালোরি খুব কম থাকে। হার্টের জন্য কুমড়া দারুণ উপকারী। ইমিউনিটি বাড়ায় কুমড়ায় ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের ইমিউনিটি বাড়ায়।

৫। লাউ

শীতকালীন সবজির মধ্যে লাউক বেশি পছন্দের। লাউ দেহের আদ্রতা ঠিক থাকে। দেহের জলের চাহিদা পূর্ণ করে। লাউ এ বেশি পরিমানে পানি থাকে। কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধানের জন্য লাউ উপযুক্ত। যাদের চুলে পড়ে যাচ্ছে ও চুল পেকে যাচ্ছে তারা লাউ খেতে পারে। এতে চুল পেকে যাওয়ার থেকে রোধ ও চুলের গোড়া শক্ত হয়। 

৬। শিম

শিম সকলের কাছে একটি প্রিয় সবজি। শীমের বীচি অনেকের কাছে পছন্দের খাবার। আবার শুধু শিম অনেকের কাছে প্রিয় হয়ে থাকে। শিমের মধ্যে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন, শর্করা ও অন্যান্য উপদান থাকে যা দেহের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করে। 

৭। শালগম

শালগমে নানা রকমের ভিটামিন বিদ্যমান থাকে। এই সবজিটি শীতের শুরুতে বেশি পাওয়া গেলেও সারাবছর পাওয়া যায়। শালগমে খাবার হিসেবে গ্রহণ করলে শরীর থেকে  খারাপ কোলেস্টেরল ও  উচ্চরক্ত চাপ কমিয়ে দেয়। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ও দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে এবং পরিপাকের উন্নতি ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। 

৮। ধনিয়া পাতা

বাঙালিদের কাছে শীতকালে সবচেয়ে পরিচিত একটি সবজি হচ্ছে ধনিয়া পাতা। খাবারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় এই ধনিয়া পাতা। সরাসরি তরকারি হিসেবে ব্যবহার না হলেও তরকারিকে সুস্বাধু করে। সারাবছর ইচ্ছে করে ধনিয়া পাতা চাষ করা যায়।

৯। গাজর

উচ্চ বিটা-ক্যারোটিন উপাদানের জন্য গাজর চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য উপকারি।  বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত করে। গাজর ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে প্রদান করে। গাজর  স্বাস্থ্যকর ত্বক, চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

১০। মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু সুস্বাদুর দিক দিয়ে অন্যতম। পুষ্টির মাত্রা অনুযায়ী স্বাস্থ্য রক্ষার্থে বিভিন্ন উপকারিতা প্রদান করে। বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজও সরবরাহ করে। ত্বকের স্বাস্থ্য, ইমিউন ফাংশন সহ রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখে।

১১। ঢেঁড়স

ঢেঁড়স হল একটি বর্ষাকালীন সবজি যা সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চাষ করা হয়ে থাকে। ঢেঁড়সে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার রয়েছে। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। আবার হজমশক্তিও উন্নত করে। 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে এই বিষয়ে আপনার মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

বাংলাদেশে কি কি ফসল ভালো হয়?

বাংলাদেশে সবচেয়ে ভালো জন্মে ধান, গম, আম ও পাট । বাংলাদেশে বর্তমানে উন্নত কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার ও সেচ সুবিধার ব্যাপক প্রসারের ফলে যারা গম উৎপাদন করতো তারা এখন ভুট্টা উৎপাদনেও ঝুঁকে নিচ্ছে। যেই খাবারটা প্রধানত মুরগী খামারে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ধান বাংলাদেশের প্রধান ফসল যার ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৮.৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন।  অন্যদিকে ২০০৫ থেকে ০৬ সালে গমের উৎপাদন ছিল প্রায় ৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি খাতের অবদান কত শতাংশ?

সেবা ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও খাদ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে কৃষির ভূমিকা অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০২ থেকে ২১ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ছিল প্রায় ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। উন্নত কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার ও মানুষের সচেতনতার কারনে এই হার সামনে আরও বাড়বে বলে ধারনা।

উপসংহার

ঋতুগত তারতম্য বোঝা এবং কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে সেই অনুযায়ী ফসল নির্বাচন করা ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই সফল কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় যা কৃষকের উপর নির্ভর করে প্রায় ৮০ ভাগ। কৃষকদের পরিবর্তিত জলবায়ুর ধরণগুলির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে এবং একটি অবিচ্ছিন্ন  প্রচুর ফসল নিশ্চিত করতে টেকসই অনুশীলনগুলি প্রয়োগ করতে হবে। ঋতুর সাথে ফসলের পছন্দ সারিবদ্ধ করে, কৃষি সম্প্রদায়গুলির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে এবং এই অঞ্চলের সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখতে পারে। সেই দিকে সকলকে সচেতনভাবে নজর দিতে হবে। কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে তা একজন পেশাদার কৃষককে অবশ্যই জানতে হবে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে কোন ফসলের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয় এ সম্পর্কে পড়তে পারেন।

কোন মৌসুমে কোন ফসল ভালো জন্মে এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *