পরিবেশ দূষণের কারণ ও ফলাফল সম্পর্কে পৃথিবীতে বসবাসকারী সকল মানুষের জানা উচিত। পরিবেশ দূষণ জৈবিক বৈশিষ্ট্যের এমন একটি অনাকাঙ্খিত বিশাল পরিবর্তন যা জীবজগৎ ও পরিবেশের উপরে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। অতিরিক্ত ভোগ্যপণ্য উৎপাদন, অনিয়ন্ত্রিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার, যন্ত্রচালিত আধুনিক সভ্যতা, শিল্প বিপ্লব, বিলাসবহুল জীবনযাত্রা, ভোগবাদ, শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং অতিরিক্ত সংশ্লেষিত দ্রব্যের অত্যাধিক পরিমাণে ব্যবহারের ফলেই পৃথিবীর বায়ু, জল, মাটি আজ দুষিত ও বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে দিন দিন।
পৃথিবীব্যাপী এই মারাত্মক দূষণের ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য আজ বিঘ্নিত যা ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়ছে মানবশরীরে, পরিবেশে ও মানব অর্থনীতিতে। প্রয়োজনীয় খাদ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য মানুষ নিজেরাই পরিবেশ ধ্বংস করছে। পরিবেশের বেশির ভাগ দূষণ মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের ফলেই হয়ে আসছে দিনকে দিন। দূষণের ফলে মানুষ, জীবজন্তু ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। দূষণের কারণে মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যেমন— পানিবাহিত রোগ,ক্যান্সার, শ্বাসজনিত রোগ, ত্বকের রোগ ইত্যাদি।
দূষণের ফলে জীবজন্তুর আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জীবজন্তুর খাদ্য শৃঙ্খল ধ্বংস হচ্ছে। ফলে অনেক জীব পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে হিমবাহ গলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ কাকে বলে?
পরিবেশ বলতে মানুষের চারপাশের অবস্থাকে বোঝায় অর্থাৎ মানুষ যেসব পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করে এবং দৃশ্য ও অদৃশ্য উপাদান তার জীবন ও জীবিকার উপর প্রভাব বিস্তার করে সম্মিলিতভাবে তাকেই পরিবেশ বলে। গাছপালা, মাটি, বায়ূ, পানি, শব্দ ইত্যাদি পরিবেশের অন্তর্গত। পরিবেশের প্রতিটি উপাদান আমাদের উপকারের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। তাই পরিবেশের প্রতি যন্ত নেওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য।
পরিবেশ দূষণ কাকে বলে?
মানুষ যেখানে বসবাস করে তার চারপাশের অবস্থাকেই পরিবেশ বলে। এই পরিবেশ মানুষের জীব যাপনের উপর বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। মানুষ তার পরিবেশকে কাজে লাগিয়েই বেঁচে থাকে। যখ্ন এই পরিবেশ মানুষের উপকারে না এসে মানুষকে ক্ষতি করে তখন তাকে পরিবেশের দূষন বলে। পরিবেশের দূষন জীবের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অনেক প্রানীর জীবন হুমকির পাশাপাশি বিলুপ্তের কারন হয়ে দাড়ায়। যেমন শব্দ দূষন, মাটি দূষন, পানি দূষন, খাদ্য দূষন ইত্যাদি। অবশ্যই এই দূষনের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
পরিবেশ দূষণের কারণ ও ফলাফল
বিভিন্ন কারনে প্রতিদিন আমাদে চারপাশের এই সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ দূষনের প্রথম ও প্রধান কারনই হচ্ছে মানুষ। মানুষ তার প্রয়োজনে শিল্পের উন্নয়নের জন্য নিয়মিত পরিবেশ ধ্বংশ করছে। যার প্রভাব পড়ছে পুরো জীবজগতের উপর। বাসস্থান সংকটে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে অনেক প্রানীর অস্তিত্ব। হুমকিতে পড়চে মানুষের জীবন ও জীবিকা। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই মানুষের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। নিচে পরিবেশ দূষণের কারণ ও ফলাফল তুলে ধরা হলো।
পরিবেশ দূষণের কারণ সমূহ
মূলত মানুষের বহুমুখী কর্মকান্ডই পরিবেশ দূষণের সবচেয়ে বড় কারণ। প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষণের কারণগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। তাহলো ক। প্রাকৃতিক কারণ এবং খ। মানবসৃষ্ট কারণ।
ক। প্রাকৃতিক কারণ
পরিবেশ দূষনের যে সকল কারন প্রকৃতি প্রদত্ত সেই সকল কারন হলো প্রাকৃতিক কারন। এই কারনে মানুষের কোন হাত থাকে না। এই প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষণের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক কারণসমূহ নিচে খুব ছোট করে আলোচনা করা হলো।
১। বন্যা ও খরা
বন্যার ফলে সমস্ত এলাকায় বিভিন্ন জীবের মলমূত্র এবং মৃত জীবজন্ত পানিতে মিশে একাকার হয়ে যায়। যার ফলে পরিবেশ দূষিত হয় এবং কলেরা, ডায়রিয়া,আমাশয় প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। আবার অন্যদিকে খরা হলেও জলজ প্রাণি এবং জীবজন্ত্র মারা গিয়ে দূষণ ঘটায়।
২। ভূমিকম্প
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দষণ। ভূমিকম্পের ফলে জীবজন্তু, মানুষ,গাছপালা ও মাটি চাপা পড়ে পরিবেশ দূষণ ঘটায়।
৩। ঘূর্ণিঝড়
কোনো এলাকায় ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন হলে উক্ত এলাকায় জীবন ও সম্পদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। গাছপালা ভেঙ্গ, ফল নষ্ট হয়ে ও জীবজন্তুর দেহাবশেষে পঁচে পরিবেশ দূষিত হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষণ।
৪। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণের কারনে উক্ত এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগ্নেয়গিরির চারপাশে পুড়ে যায়, মানুষ ও পশুপাখি প্রভৃতি মারা যায় এবং ভূমিধ্বস হয়। এতেও আবার পরিবেশ দূষিত হয়। উপরে উল্লেখিত কারণগুলো ছাড়াও মহামারি, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি কারণেও প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষিত হয়।
খ। মানবসৃষ্ট কারণ
আগেই বলা হয়েছে যে পরিবেশ দূষনের প্রথম ও প্রধান কারনই হচ্ছে মানুষ । মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময় পরিবেশ দূষিত করছে। নিচ প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষণের মানবসৃষ্ট কারণগুলো সংক্ষেপে নিচে আলোচনা করা হলো।
১। গাছপালা নিধন
পরিবেশের ভারসাম্যে রক্ষার জন্য একটি নির্দিষ্ট ভূগন্ডের ২৫ ভাগ গাছপালা অবশ্যই প্রয়োজনীয়। কিন্তু মানুষ তার প্রয়োজনের তাগিদে বা অনেক সময় অপ্রয়োজনে গাছপালা নিধন করে পরিবেশের ক্ষতি করছে। যার প্রভাব পড়ছে সেই মানুষের জীবনেই। গাছপালার অভাবে বায়ূতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
২। পাহাড় কর্তন
পাহাড় কর্তন বর্তমান সময়ের একটি অনেক বড় সমস্যা। পাহাড় কেটে অবৈধ বসতি স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মন করা হচ্ছে। অনেকেই আবার অবৈধভাবে পাহাড় কর্তন করে ফসলি জমি তৈরি করছে যার ফলে পাহাড়ি এলাকায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে দিনকে দিন।
৩। অপরিকল্পিত নগরায়ন
প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ন। প্রযুক্তির উন্নতির ফলে, আরও অনেক প্রয়োজনে গ্রাম থেকে বর্তমানে মানুষ কর্মের সন্ধানে বা পড়াশোনার জন্য নগরে ছুটে আসে। ফলে অতিরিক্ত মানুষের বাসস্থান নির্মান, কর্মসংস্থানের জন্য গাছপালা কেটে, নদী ভরাট করে নগরায়ন করা হচ্ছে। ফলে অধিক মানুষের চাপে নগরীর পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
৪। কীটনাশক ব্যবহার
অতিরিক্ত মানুষের খাদ্যের যোগানের জন্য বেশিপরিমান শষ্য উৎপাদনের জন্য বর্তমানে কৃষিজমিতে প্রচুর পরিমানে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষিকাজে অধিক হারে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পানির সাথে কীটনাশক মিশে পানি দূষণ ঘটায় যা পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
৫। ভূ-গর্ভস্থ পানি আহরণ
অতিরিক্ত মানুষের পানির চাহিদা পূরনের জন্য ভূ-গর্ভস্থ থেকে অধিক হারে পানি উত্তোলনের কারণে পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে দিনকে দিন এবং উক্ত এলাকা মরুময় হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ দূষণ ঘটছে।
৬। শিল্প বর্জ্য
শিল্পায়নের যুগে শিল্প প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত বর্জ্য যেখানে সেখানে নিষ্কাষণের ফলে পরিবেশ দূষণ ঘটে। এছাড়াও কল-কারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া এবং দূষিত তেল ও পানি পরিবেশ দূষিত করে।
৭। জ্বালানি পুড়ানোর নির্গত ধোয়া
ইটভাটা,যানবাহন,বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রভৃতিতে ব্যবহৃত পেট্রোল, ডিজেল, কয়লা, কেরোসিন, পারমানবিক জ্বালানি ও কাঠ প্রভৃতি থেকে নির্গত ক্ষতিকর ধোঁয়া ও গ্যাস পরিবেশে মিশে পরিবেশ দূষিত করে।
উপরে উল্লেখিত কারণগুলো ছাড়াও যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ, ত্রুটিপূর্ণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা,জলাভূমি ভরাট প্রভৃতি মানব সৃষ্ট কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ দিন দিন দূষিত হয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ দূষণের ফলাফল সমূহ
- গাছ কেটে ফেলার কারনে দিন দিন অক্সিজেনের পরিমান কমে যাচ্ছে।
- বায়ুতে দিন দিন কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে।
- বিশ্বের সামগ্রিক তাপ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বরফ গলে ভূমিতে পানি চলে আসছে।
- সমুদ্রতীরবর্তী এলাকা পানির নিচে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
- মিঠা পানিগুলো আস্তে আস্তে লোনা পানিতে পরিণত হচ্ছে।
- শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে এবং স্নায়ুবিক ক্ষতি হতে হচ্ছে।
- দূষিত এলাকায় বসবাসের কারনে গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভপাত ও মৃত শিশু প্রসবের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যেতে পারে।
- রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ আছে এমন দুষিত বায়ুর সংস্পর্শে থাকলেনাক চোখ বা গলার সংক্রমণ বা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- ফুসফুসের নানা জটিলতা যেমন ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া, মাথাব্যথা, অ্যাজমা এবং নানাবিধ অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- দীর্ঘদিন বায়ু দূষণের মধ্যে থাকলে বা এইরকম পরিবেশে কাজ করলে ফুসফুসের ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত শব্দের মানুষের হৃদরোগ, মাথাব্যথা, হাইপার টেনশন, আলসার বা স্নায়ুর সমস্যা হতে পারে।
- খাদ্য দূষণের কারণে লিভার, কিডনি বা পাকস্থলীর কার্যকারিতা ধীরে ধীরে নস্ট হয়ে যেতে পারে।
- দুষিত খাবার খাওয়ার ফলে তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে বা বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।
- শিল্প কলকারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি ব্যবহারে কারনে টাইফয়েড, চর্মরােগ জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের মতাে রােগ হচ্ছে।
- পরিবেশ দূষণে ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলােচ্ছ্বাস, নদীভাঙ্গন, খরা, মরুকরণ ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে।
- বায়ুদূষণের ক্ষণস্থায়ী সমস্যাগুলোর মধ্যে নাক মুখ মাথা ঝিম ঝিম করা, মাথা ব্যথা, জালাপোড়া করা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি অন্যতম।
- দূষিত বায়ু মানুষের শ্বাসকার্যে মারাত্বক ব্যাঘাত ঘটায় এবং দেহে বিভিন্নরকম রোগ সৃষ্টি করে। দূষিত বায়ুর কারণে মানবদেহে এলার্জি, ব্রঙ্কাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথা, কাশি, হাঁপানি, ফুসফুসে ক্যান্সার ইত্যাদি মারাত্মক রোগ হতে পারে।
- পানি দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে ও জলজ খাদ্যশৃঙ্খল ভেঙ্গে যাচ্ছে।
- পানি দূষণের কারণে মানুষ নানা ধরনের পানিবাহিত রোগ যেমন, ডায়রিয়া, হূদরোগ, কলেরা, ফুসফুসের ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
পরিবেশ দূষণের কারণ ও ফলাফল এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।
পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব কি?
পরিবেশ দূষণের কারনে মানুষ, জীবজন্তু ও পরিবেশের প্রচুর ক্ষতি সাধন হয়। পরিবেশ দূষণের কারণে মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। যার মধ্যে পানিবাহিত রোগ,ক্যান্সার, শ্বাসজনিত রোগ, ত্বকের রোগ ইত্যাদি উল্লেখ্যযোগ্য। দূষণের ফলে জীবজন্তুর আবাসস্থল নষ্ট হয়ে প্রানী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
দূষণ কাকে বলে ও কত প্রকার?
মাটি দূষণ , বায়ু দূষণ, পানি দূষণ ও শব্দ দূষণ পরিবেশ দূষণের চারটি প্রধান প্রকার । কোন জিনিসের স্বাভাবিক ইতিবাচক কার্যক্রম কমে গিয়ে নেতিবাচক কার্যক্রম শুরু হলে তখন সেটাকে দূষিত বলে থাকে।
উপসংহার
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা পরিবেশ দূষণের কারণ ও ফলাফল গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। মূলত প্রাণিজগতের জন্যই পরিবেশের প্রয়োজন। তাই পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।তা না হলে জীবজন্তুর অস্তিত্ব রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে। পরিবেশ দূষণ একটা জাতির জন্যে এক মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এ ব্যাপারে সারা বিশ্বের মানুষের সচেতনতার মানসিকতা একান্ত অপরিহার্য। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এ সমস্যা আরো প্রকট রুপ ধারন করেছে। পরিবেশবাদীদের মতে এর সমাধান করা না গেলে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ পানির নিচে তলিয়ে যাবে।
প্রথমেই পুরো বিশ্ববাসীকে পরিবেশের বিশুদ্ধতা রক্ষায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। গ্রিনহাউজ গ্যাসসমূহের নির্গমন সবসময় পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ এর মধ্যে রাখতে হবে। যে যন্ত্র বা গাড়ি থেকে ক্ষতিকর ধোঁয়া বা গ্যাস বের হয় তার ব্যবহার সংকুচিত করতে হবে। আবার এর পাশাপাশি বিকল্প শক্তির ব্যবহার যেমন প্রাকৃতিক গ্যাস, সৌরশক্তি নির্ভর যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। নির্বিচারে যাতে গাছ কাটা না হয় সেদিকে সকলকে নজর দিতে হবে। বন উজার বন্ধ করতে হবে। আরও কি কি পরিবেশ দূষণের কারণ ও ফলাফল আছে তা সকলকে জানতে হবে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে মাটি দূষণের ৫টি কারণ সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“পরিবেশ দূষণের কারণ ও ফলাফল” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।