সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজে পড়াশুনা করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য। বর্তমান সময়ে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই ডিজিটাল যুগে পুঁথিগত বিদ্যার চেয়ে কারিগরি বিদ্যা আপনাকে জীবনযুদ্ধে অনেকটা এগিয়ে রাখবে। তাই বর্তমান সময়ে ছেলেমেয়েরা কারিগরি বিদ্যা অর্জনের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছে। খুব কম সময়ে কিভাবে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করা যায় তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা এখন আরও বেশি সচেতন। অভিভাবকরাও এখন তাদের সন্তানদের কারিগরি বিদ্যা অর্জনের জন্য উৎসাহ দিয়ে আসছে। এসএসসি বা এইচএসসি পরিক্ষার পরে বিষয় নির্বাচন করা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবাই চিন্তায় পরে যান। এসময় নির্বাচন করতে হবে এমন একটি বিষয় যেখানে শিক্ষাব্যয় কম ও পড়াশোনা শেষ করার পর বেশিদিন বেকার বসে থাকতে হবে না। বর্তমানে এমন বিষয় খুব কমই রয়েছে। তবে এমনি একটি সম্ভাবনাময় পেশা হচ্ছে মেডিকেল টেকনোলজি।
প্যারামেডিকেল কি?
সহজভাবে বলতে গেলে প্যারামেডিকেল বিষয়ে অভিজ্ঞরা স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে সহায়ক কর্মী। তাই আপনি যদি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হতে চান তাহলে সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা থেকে পছন্দের কলেজে ভর্তি হয়ে নিজের স্বপ্ন পুরন করতে পারেন অতি সহজেই। আপনার কোনও অসুস্থতার কথা যদি আপনার চিকিৎসক সন্দেহ করেন, তবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে নিঃসন্দেহে আপনাকে কোনও না কোনও পরীক্ষা করতে দিয়ে থাকেন। আর এই পরীক্ষাগুলি যাঁরা করেন বা পরীক্ষার ফলগুলি যাচাই করে দেখেন, তাঁরা কিন্তু কোনও চিকিৎসক বা নার্স নন। তাদের এই পেশাকেই প্যারামেডিকস্ বলে এবং এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের প্যারামেডিক্যাল স্টাফ বলে থাকে।
সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে এসএসসি পাশ করার পরে পছন্দের যেকোনো বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করতে পারেন। বিষয়গুলো হচ্ছে ফিজিওথেরাপি, ডেন্টাল, ফার্মেসি, নার্সিং,প্যাথলজি, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং ও প্যারামেডিকেল। এই বিষয়গুলোতে আবার বিএসসি বা এমএসসি করার সুযোগও আছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে নিজেকে গড়তে বা প্যারামেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য যেকোনো বিভাগ থেকে এসএসসিতে জিপিএ ন্যূনতম ২.৫০ পেতে হবে। এরপর পছন্দের একটি কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। পড়াশোনা করার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ইন্টার্নশিপের সুযোগও পাবেন। নিচে ছক আকারে সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা তুলে ধরা হলো।
প্যারামেডিকেল কলেজের নাম | কলেজের অবস্থান |
Armed Forces Medical Institute | Dhaka Cantonment |
Army Medical Core Centre & School | Tangail |
Institute of Health Technology | Barisal |
Institute of Health Technology | Bogra |
Institute of Health Technology | Faujdarhat, Chittagong |
Institute of Health Technology | Gazipur |
Institute of Health Technology | Jhenaidah |
Institute of Health Technology | Mohakhali, Dhaka. |
Institute of Health Technology | Rajshahi |
Institute of Health Technology | Sylhet |
Institute of Health Technology | Rangpur |
Shaheed M Monsur Ali Institute of Health Technology | Sirajganj |
আগেই বলা হয়েছে যারা প্যারামেডিকেল পড়াশোন করে তারা কোন ডাক্তার নয় বরং ডাক্তারের বিভিন্ন চেক আপ ও রিপোর্ট প্রস্তুতের সাথে জড়িত স্বাস্থ্য কর্মী। নিচে ৫ টি ইনস্টিটিউট সংক্ষিপ্ত বর্ণনা উল্লেখ করা হলো।
১। আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল ইনস্টিটিউট
আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল ইনস্টিটিউট (এএফএমআই) হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সদস্যদের জন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৬ সালের ২ জানুয়ারী এটি তৈরি হয়। এটা তৈরি করার উদ্দেশ্য ছিলো মেডিকেল কোরের অফিসার এবং অন্যান্য সদস্য (সৈনিক/এনসিও) দের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং এছাড়া এটা সেনাবাহিনীর নার্সদেরও প্রশিক্ষণ দেয়।
২। আর্মি মেডিকেল কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল
এটিও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সদস্যদের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটা তৈরি করার উদ্দেশ্য ছিলো মেডিকেল কোরের অফিসার এবং অন্যান্য সদস্য (সৈনিক/এনসিও) দের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং এছাড়া এটা সেনাবাহিনীর নার্সদেরও প্রশিক্ষণ দেয়।
৩। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, বরিশাল
ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে মোট ১৪ টি প্রতিষ্ঠান ডিপ্লোমা এবং বিএসসি কোর্স এ পাঠদান করায়। এর বাইরেও বেসরকারী পর্যায়ে কিছু ইনস্টিটিউট আছে যারা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে পড়ে। এই ১৪ টির মধ্যে বরিশালে একটি অবস্থিত। বরিশালের স্থানীয় চাহিদা পূরনের পাশাপাশি সরাদেশের স্বাস্থ্য কর্মীর চাহিদা পূরনের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছ।
৪। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, বগুড়া
ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে মোট ১৪ টি প্রতিষ্ঠান ডিপ্লোমা এবং বিএসসি কোর্স এ পাঠদান করায়। এর বাইরেও বেসরকারী পর্যায়ে কিছু ইনস্টিটিউট আছে যারা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে পড়ে। এই ১৪ টির মধ্যে বগুড়াতে একটি অবস্থিত। এটিও একটি আঞ্চলিক হেলথ্ টেকনোলজি, তবে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ চাইলেই পড়াশোনা করতে পারে।
৫। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, চট্রগাম
ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে মোট ১৪ টি প্রতিষ্ঠান ডিপ্লোমা এবং বিএসসি কোর্স এ পাঠদান করায়। এর বাইরেও বেসরকারী পর্যায়ে কিছু ইনস্টিটিউট আছে যারা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর অধীনে পড়ে। এই ১৪ টির মধ্যে চট্রগামে একটি অবস্থিত।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।
প্যারামেডিকেল শেষ করার পর সে কেমন বেতনে চাকুরী পাবে?
বর্তমানে বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বেই মেডিকেল সহায়তারীর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পড়াশোনা শেষ করে বের হলেই শুরুতেই বেতন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পেয়ে থাকে। পরবর্তীতে তার কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের বেতন ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
মানবিক বিভাগ থেকে কি প্যারামেডিকেল পড়া যায়?
হ্যাঁ অবশ্যই করা যায়। এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে পাশ করে আপনি প্যারামেডিকেল পড়তে পারবেন। প্যারামেডিকেল হলো চিকিৎসা ক্ষেত্রের একটি শাখা যেখানে চিকিৎসাক্ষেত্রে সহায়তার জন্য চিকিৎসা কর্মী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্যারামেডিকেল ডিপ্লোমা করার জন্য এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। তারপর আপনি প্যারামেডিকেলে ভর্তি হতে পারবেন।
উপসংহার
সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা পোষ্টের এই অংশে রয়েছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট-এর কাজের চাহিদা ও ক্ষেত্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একজন গ্র্যাজুয়েট চিকিত্সকের পাশাপাশি ৫/৬ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন হয়ে থাকে। এই হিসাবে বর্তমানে বাংলাদেশে ২ লাখেরও বেশি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন। বুঝতেই পারছেন একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এর চাহিদা কত। ইউনিয়ন, উপজেলা বা জেলা থেকে রাজধানী পর্যন্ত, সারাদেশ জুড়ে প্রচুর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ক্লিনিকের বাইরেও রয়েছে প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, অসংখ্য বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি। এসব প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক সংখ্যক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন রয়েছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য দেশের বাইরেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তাই যারা প্যারামেডিকেলে পড়তে চান তারা সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা দেখে নিতে পারেন যে, আপনি কোন প্যারামেডিকেলে পড়তে চান। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স সমূহ সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“সরকারি প্যারামেডিকেল কলেজের তালিকা” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
What is SMFWB Exam?