Skip to content
Home » সাত দিনের নাম ইংরেজিতে

সাত দিনের নাম ইংরেজিতে

Seven Day Names In English

সাত দিনের নাম ইংরেজিতে আমাদের সোনামণিদের জন্যে একটি শিক্ষণীয় পাঠ। ­সবকিছু সৃষ্টির পেছনে যেমন ইতিহাস বা ঘটনা থাকে তেমনি ইংরেজি সাত দিনের নাম সৃষ্টির পেছনেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ইতিহাস ও ঘটনা। নানা সময় নানা ধরনের কাহিনির মধ্য দিয়ে এই দিনগুলোর নামকরণ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ অলীক ও ভিত্তিহীন বিষয়ের ওপর নির্মিত ইংরেজি এই সাতটি দিনের নাম হলো সানডে, মানডে টুয়েসডে, ওয়েডনেসডে, থার্সডে, ফ্রাইডে ও স্যাটারডে। অযৌক্তিক ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে এই নামগুলোর শুরু হলেও যুগের ক্রমবির্তনের সাথে সাথে ওই নামগুলোরই নতুন সংস্করণ বর্তমানে সমাজে প্রচলিত রয়েছে। প্রথমেই বলে রাখি, ইংরেজি ‘উইক’ (বাংলা অনুবাদে সপ্তাহই বলতে হচ্ছে) বলতেই যে, বর্তমান কালের সাত দিনের সমষ্টি বোঝায় তা কিন্তু নয়। প্রাচীন কালে নানা দেশে নানা কালে আট দিনের সপ্তাহ, নয় দিনের সপ্তাহ এমনকি দশ দিনের সপ্তাহও প্রচলিত ছিলো। আবার ওদিকে ছয় দিনের সপ্তাহ বা পাঁচ দিনের সপ্তাহও কোথাও কোথাও প্রচলিত অবস্থায় দেখা গেছে।

সপ্তাহ কি ?

প্রাচীন রোমে ‘আট দিনের’ সপ্তাহ চালু ছিলো। আমাদের এখনকার মতোই সাত দিন, আর অতিরিক্ত একটা দিন বরাদ্দ ছিলো বেচা কেনা করবার জন্যে। বেচা-কেনা করবার এই দিনটি ‘হাটবার’ নামে পরিচিত ছিলো। পরে অবশ্য খ্রিস্টান অধ্যুষিত হবার পর রোমানদের ওখানে নতুন ক্যালেন্ডার চালু হয়, আর খ্রিস্ট-ধর্মের প্রভাবে হাটবার বাদ দিয়ে সাত দিনেই সপ্তাহ নির্ধারিত হয়। ৩২১ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট কন্সট্যান্টাইন এই নতুন ক্যালেন্ডার চালু করে সপ্তাহের দিন সংখ্যা ৭ এ নির্দিষ্ট করেন। আমরা কি বুৃঝলাম? সাত দিনের একটা প্যাকেজকে সপ্তাহ বলে। অর্থ্যাৎ সমাসেই বলতে গেলে সপ্ত বা সাত অহের বা দিনের সমাহার বা সমষ্টিকে সপ্তাহ বলে 

সাত দিনের নাম ইংরেজিতে

পৃথিবীর সব দেশের নিজস্ব ক্যালেন্ডা নেই। এই দিক থেকে আমরা খুবই ভাগ্যবান যে আমাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার বা দিনপঞ্জিকা আছে। যদিও সপ্তাহের ক্ষেত্রে ইংরেজি ও বাংলা ক্যালেন্ডারের কোন পার্থক্য নেই। দিনের সংখ্যাতে নেই কোন পার্থক্য। শুধু নামের ক্ষেত্রে রয়েছে ভাষাগত ভিন্নতা। নিচে সংক্ষেপে সাত দিনের নাম ইংরেজিতে ছক আকারে তুলে ধরা হলো।

বারের নাম বাংলায়বারের নাম ইংরেজিতে
রবিবারSunday
সোমবারMonday
মঙ্গলবারTuesday
বুধবারWednesday
বৃহস্পতিবারThursday
শুক্রবারFriday
শনিবারSaturday

ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, গ্রিক,মিসরীয় সভ্যতা, রোমান ও অ্যাংলো-স্যাক্সন জাতির মানুষরা সপ্তাহের নাম নিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করে। প্রথমে নামগুলো ঠিক হয় আকাশে দৃশ্যমান সাতটি উজ্জ্বল জ্যোতিস্কের নামে আর দেবদেবীর নামে। কিন্তু মিসরে পাঁচ গ্রহ, চাঁদ আর সূর্যের নামে হয় সাত দিনের নাম। রোমানরাও তাদের অনুসরণ করে। কিন্তু তোমরা এখন যে ইংরেজি নামগুলো আমরা জানি সেগুলো অ্যাংলো-স্যাক্সনদের থেকেই নেয়া হয়েছে। 

১। Sunday (রবিবার)

গ্রিক পুরাণে সূর্যকে বলা হচ্ছে দেবতা, আর স্যাক্সন ভাষায় তাকেই বলে হচ্ছে Sunne যা থেকে ইংরেজিতে এসেছে Sun। সান মানে সূর্য। আর বাংলায় রবি মানেও সেই সূয্যিমামাই। এই হচ্ছে আমাদের রবিবার। রবিবার এর ইংরেজি নাম হচ্ছে এই Sunday.

২। Monday (সোমবার)

মানডে আসলে ছিল মুনডে। গ্রিক পুরাণে বলা হয়ে থাকে Seleness বা  চাঁদের দেবী। রোমান ভাষায় আবার চাঁদকে বলা হয় Moon। ব্যস হয়ে গেল মানডে। বাংলা সোমবার এর ইংরেজি হচ্ছে Monday.

৩। Tuesday (মঙ্গলবার)

গ্রিক পুরাণ অনুসার Ares নামে এক দেবতা আছেন। রোমান ভাষায় যাকে বলা হয় Mars. Mars আবার  এই Mars মানে হচ্ছে মঙ্গলগ্রহ। কিন্তু স্যাক্সনদের ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী তাদের দেবতা হলেন Tiu। তাই সেখান থেকেই ইংরেজি Tuesday মানে মঙ্গলবার এর সৃষ্টি। মঙ্গলবারের ইংরেজি হলো এই Tuesday.

৪। Wednesday (বুধবার)

রোমান পুরাণ অনুসারে ব্যবসা-বাণিজ্যের দেবতা হচ্ছে Mercury। আর এই মার্কারি আবার আমাদের বুধ গ্রহ। কিন্তু স্যাক্সনদের দেবী Woden এর নাম থেকে এসেছে Woden’s Day আর সেখান থেকে Wednesday। তাই আমাদের বাংলা বুধবারের ইংরেজি নাম হলো Wednesday.

৫। Thursday (বৃহস্পতিবার)

অ্যাংলো-স্যাক্সনরা বিশ্বাস করেন যে, থর হলেন থান্ডার বা বজ্রপাতের দেবতা। সেখান থেকে তারা নাম দিয়েছে Thor’s day বা Thursday। আবার গ্রিক ভাষায় এই ‘বজ্রপাতের পিতা’ হচ্ছেন দেবতা জিউস। আর জিউস গ্রহকে আমরা চিনি রোমান পুরাণ অনুসারে ‘জুপিটার’ নামে। এই জুপিটার গ্রহই হচ্ছে আমাদের বৃহস্পতি গ্রহ। বৃহস্প্রতির ইংরেজি নাম হলো Thursday. 

৬। Friday (শুক্রবার)

অ্যাংলো-স্যাক্সনদের কাছে সৌন্দর্যের দেবী হলেন ফ্রিগ। সেখান থেকেই এসেছে ইংরেজি ফ্রাই ডে এর নাম। গ্রিক আফ্রোদিতি বা রোমান ভেনাস হচ্ছেন সৌন্দর্য ও প্রেমের দেবী। তার নামেই শুক্র গ্রহের নামকরন। এই সব মিলিয়েই আমাদের ফ্রাইডে। আর শুক্রবার এর ইংরেজি নাম হচ্ছে এই Friday.

৭। Saturday (শনিবার)

Saturn হচ্ছে রোমান দেবতার নাম। আর এই স্যাটার্ন থেকেই ইংরেজিতে এসেছে স্যাটারডে। স্যাটার্ন অথবা শনি গ্রহ থেকেই আমরা পেয়েছি শনিবার। চন্দ্র সূর্য এবং গ্রহের সঙ্গে সাতদিনের নামের এত মিল জেনে আমার সত্যিই অবাক হলাম নিশ্চয়?

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

সাত দিনের নাম ইংরেজিতে এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।

সাত দিনের ইংরেজি নাম কিভাবে এলো?

মিসরে পাঁচ গ্রহ এবং চাঁদ আর সূর্যের নামে করা হয় সাত দিনের নাম। রোমানরাও এই মিসরদেরকেই অনুসরণ করে। কিন্তু আপনারা এখন যে সাতদিনের ইংরেজি নামগুলো জানেন সেগুলো অ্যাংলো-স্যাক্সনদের থেকেই নেয়া হয়েছে।

১২ মাসের ক্যালেন্ডার কেন হয়?

জুলিয়াস সিজারের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি বছরে 12 মাসের প্রয়োজনীয়তা এবং ঋতুগুলির সাথে সমন্বয় করার জন্য একটি অধিবর্ষের যোগ ব্যাখ্যা করেছিলেন। সেই সময়ে, ক্যালেন্ডারে মাত্র দশ মাস ছিল, যেখানে এক বছরে মাত্র 12টি চন্দ্র চক্র রয়েছে।

উপসংহার 

পৃথিবীর ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় সর্বপ্রথম ব্যাবিলনীয় সভ্যতার লোকেরা সময়ের হিসাব রাখা শুরু করেছিল। তারমানে ক্যালেন্ডার প্রচলনের ইতিহাস ব্যাবিলনীয় সভ্যতা থেকে এসেছে। তারা দিন ও মাসের হিসাব রাখতো মূলত চাঁদের গতিবিধি পর্যবেক্ষন করে। সূর্যের তুলনায় চাঁদের গতিবিধি দেখে মাসের হিসাব রাখা অনেক সহজ ছিল। কারণ আমরা জানি চাঁদের আকৃতি সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। কখনো এক ফালি চাঁদ, কখনো জোছনামাখা ভরাট পূর্ণিমা আবার কখনো অমাবস্যার রাতে সম্পূর্ণভাবে তিরোধান বা অন্ধকার। চাঁদের এই ঘটনাগুলো আবার প্রায় ৩০ দিন পর পর পুনরাবৃত্ত হতে থাকতো। ইংরেজি ভাষার পুরোটাই প্রায় গড়ে উঠেছে স্যাক্সন জাতির ভাষা থেকে। উপরের আলোচনা থেকে আমরা প্রায় পুরোটাই বুঝে গেছি যে কিভাবে সাত দিনের সৃষ্টি হলো এবং এই সাত দিনের নাম ইংরেজিতে কি কি তাও জানতে পারলাম। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“সাত দিনের নাম ইংরেজিতে” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *