Skip to content
Home » ১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম

১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম

Name 10 Invertebrate Animals

১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম শীর্ষক আজকের প্রবন্ধে আপনাকে স্বাগতম। অমেরুদণ্ডী প্রাণীর মেরুদণ্ড থাকে না। অর্থাৎ দেহের ভেতর কঙ্কাল থাকে না। তবে পাখনা কিংবা পা থাকতে পারে। অমেরুদণ্ডী প্রাণীরাও বৃহৎ স্থলজ বা জলজ মেরুদণ্ডী প্রাণীদের থেকে ছোট হয় এবং যদিও তাদের স্পষ্ট হাড়ের অভাব থাকে। প্রাণী প্রজাতির অধিকাংশই অমেরুদণ্ডী প্রানী। সমস্ত অমেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে যে বৈশিষ্ট্যটি সাধারণ তা হল একটি মেরুদণ্ডের কলামের অনুপস্থিতি। এটি অমেরুদণ্ডী এবং মেরুদণ্ডের মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য তৈরি করে থাকে। সমস্ত মেরুদণ্ডী প্রাণীর মেরুদণ্ড, হাড়, জয়েন্ট এবং তরুণাস্থি থাকে যা অভ্যন্তরীণ কঙ্কাল গঠন করে। যা ত্বকের নীচে লুকানো থাকে এবং যা ভারী বোঝা সহ্য করে এবং জটিল কার্যক্রম চালাতে সহায়তা করে। অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে ক্ষুদ্র প্রাণী এবং দৈত্য প্রকৃতির উভয়ই রয়েছে।

অমেরুদন্ডী প্রাণী কাকে বলে?

মেরুদণ্ডহীন প্রানী একটি শীতল রক্তের প্রাণী যার কোন মেরুদণ্ড নেই । অমেরুদণ্ডী প্রাণীরা জমিতে বাস করতে পারে যেমনঃ পোকামাকড়, মাকড়সা এবং কীট। সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে রয়েছে ক্রাস্টেসিয়ান যেমন কাঁকড়া ও গলদা চিংড়ি এবং মোলাস্ক যেমন স্কুইড ও ক্ল্যামস এবং প্রবাল। সহজভাবে বললে যেসব প্রাণীর মেরুদন্ড থাকেনা তাদেরকে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলা হয়। আরও সহজ করে বললে, যেসব প্রাণীর মেরুদন্ড থাকে না তাদেরকে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলে। যেমনঃ মাছি, কেঁচো, জোঁক,আমিবা, স্পঞ্জ ইত্যাদি।

১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম

পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রকারের প্রানী রয়েছে। কোন প্রানীর মেরুদন্ড আছে আবার কোন প্রানীর মেরুদন্ড নেই। যাদের মেরুদন্ড নাই তাদেরকে বলে অমেরুদন্ডী প্রানী। তেলাপোকা, উইপোকা, এফিড, থ্রিপস, পিঁপড়া, মৌমাছি, প্যাসালিডি, আকারি, মাকড়সা ইত্যাদি। এরকম হাজারো প্রানী আছে যাদের মেরুদন্ড নেই। এর মধ্যে থেকে ১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

১। তেলাপোকা

তেলাপোকাকে আরশোলা নামেও ডাকা হয়। এদের আবার বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক নামও রয়েছে। যেমন তেলাচোরা বা তেলচোট্টা। এই নামগুলো বিশেষ করে পুরান ঢাকায় বেশি প্রচলিত। তেলাপোকা একটি অমেরুদণ্ডী প্রাণী। অর্থাৎ আমাদের মতো তেলাপোকার মেরুদণ্ড নেই। তেলাপোকা বা আরশোলা হল আর্থোপ্রোডা পর্বের পোকা জাতীয় প্রানী। তেলাপোকা সন্ধিপদী প্রাণী (Arthropoda)। অর্থাৎ এই দলের প্রাণীগুলোর অঙ্গপ্রতঙ্গ সন্ধিযুক্ত। যার ফলে এরা পেশিগুলো সহজে নড়াচড়া করতে পারে।

২। উইপোকা

উইপোকা দেখতে সাদা রং এর হয়ে থাকে তবে অনেক সময় এদের গায়ের রং ঘিয়ে হয়েও থাকে। ইংরেজিতে এদের বলা হয় Termite. উইপোকা পিঁপড়ে বা মৌমাছিদের মতো সমাজবদ্ধ জীবন যাপন করে। তেলাপোকাও একটি অমেরুদণ্ডী প্রাণী। অর্থাৎ আমাদের মতো মেরুদণ্ড নেই এদের। বাংলাদেশে প্রাপ্ত মাত্র ৪০ প্রজাতির উইপোকার বর্ণনা পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।উইপোকা প্রধানত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে বাস করে থাকে।

৩। পিপড়া

এরা এক ধরনের সামাজিক কীট বা পোকা জাতীয় প্রানী। এদেরকে পিপীলিকাও বলা হয়। বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২৫০ প্রজাতির পিঁপড়ার কথা জানা যায়। এর মধ্যে অধিক পরিচিত জাতগুলোকে সাধারণভাবে কালো পিঁপড়া, ডেয়ো পিঁপড়া, লাল পিঁপড়া, বিষ পিঁপড়া, খুদে পিঁপড়া ইত্যাদি নামে ডাকা হয়ে থাকে। পিঁপড়া বা পিপীলিকা হল ফর্মিসিডি (সামাজিক কীট বা পোকা) গোত্রের অন্তর্গত সামাজিক কীট বা এক জাতীয় পোকা প্রানী। 

৪। মৌমাছি

মৌমাছির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Honey bee। মানুষের মতো মৌমাছিরও সমাজ ব্যবস্থা আছে। সেখানে রানি, পুরুষ ও কর্মীদের বসবাস আছে।মানুষের মতো মৌমাছিরও সমাজের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য আছে বলে গবেষনায় উঠে এসেছে। তেলাপোকা অমেরুদণ্ডী একটি প্রাণী। অর্থাৎ আমাদের মতো মেরুদণ্ড নেই এদের। মৌমাছির হাইমেনপ্টেরার (ইনসেক্ট শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত অন্যতম ) অন্তর্গত।

৫। মাকড়সা 

মাকড়সা একটি অমেরুদন্ডী বিশিষ্ট কীট বিশেষ প্রানী। এটি একটি আট পা ওয়ালা অ্যারাকনিড শ্রেণীর সন্ধিপদ প্রানী। এদের শরীর মাথা ও ধড় এই দুটি অংশে বিভক্ত। আটটি পা আছে তবে কোন ডানা নেই। এদের মানুষের মত মেরুদন্ড নেই।

৬। চিংড়ি

আমরা অনেকেই জানি না যে চিংড়ি আসলে কোন মাছ নয়। এক ধরনের জলজ অমেরুদণ্ডী প্রাণী। এদের দেহে মানুষের মত কোনো মেরুদণ্ড নেই। পৃথিবীতে প্রায় ৪৫০ প্রজাতির চিংড়ি পাওয়া গেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট ৫৬ প্রজাতির চিংড়ি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি নোনা পানির এবং ৭টি স্বাদু পানির চিংড়ি। নোনা পানির চিংড়ির মধ্যে বাগদা সবচেয়ে বড় ও সুস্বাদু মাছ।

৭। মাছি

আমরা জানি যেসব প্রাণীর মেরুদন্ড থাকে না তাদেরকে অমেরুদন্ডী প্রাণী বলে। যেমন – মাছি, আমিবা, স্পঞ্জকেঁচো, জোঁক, ইত্যাদি। মাছির কোন মেরুদন্ড নেই। তবে এদের পাখনা আছে। বাংলাদেশে পাওয়া এ পর্যন্ত মাছির প্রজাতির মধ্যে ঘরে বাস করে দংশনকারী মাছি, নীল মাছি বা ব্লু ফ্লাই, ছোট মাছি, গ্রিনবটল ফ্লাই, ফ্লেশ ফ্লাই ইত্যাদি। ঘরের বাহিরের মাছির মধ্যে রয়েছে  ডিয়ার ফ্লাই, ঘোড়া মাছি, হোবার মাছি,কালো মাছি, ক্রেন ফ্লাই ইত্যাদি।

৮। মশা

মশা নেমাটোসেরা মাছি বর্গের অন্তর্ভুক্ত এক জাতীয় অমেরুদন্ডী প্রানী। আরও স্পষ্ট করে বললে মশা মূলত ক্রেন মাছি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত প্রানী। মশার কিছু প্রজাতির নারী জাতীয় মশা রক্ত শোষে এবং মারাত্মক সংক্রামক রোগ বিস্তার করে থাকে।

৯। কাঁকড়া

কাঁকড়া এক ধরনের অমেরুদন্ডী প্রানী। মানুষের মত কাঁকড়ার কোন মেরুদন্ড নেই। কারণ কাঁকড়া প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। এছাড়া কাঁকড়ার মাংসে থাকা ফসফরাস এবং অস্টিওপোরোসিস আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ-প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। 

১০। কেঁচো

কেঁচো হলো এনিলিডা বা অঙ্গুরিমাল (খণ্ডিত দেহ দেখতে ছোট ছোট আংটির মালার মতো) পর্বের অতি পরিচিত একটি প্রাণী। এরা মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বাস করে।কৃষিতে কেঁচোর অবদান অপরিসীম।এরা মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধিতে অন্যতম সহায়ক। তাই কেঁচোকে বলা হয় প্রকৃতির লাঙল। এদের কৃষকের বন্ধুও বলা হয়।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।

মানুষ কি মেরুদন্ডী না অমেরুদন্ডী প্রাণী?

আমরা জানি যাদের মেরুদন্ড বা শরীরের মধ্যে একটা বড় শক্ত হাড় থাকে না তাদেরকে অমেরুদন্ডী প্রানী বলে। যেমনঃ মাছি, আমিবা, স্পঞ্জকেঁচো, জোঁক, ইত্যাদি। কিন্তু মানুষের শরীরের মধ্যে একটা বড় শক্ত হাড় রয়েছে যাকে মেরুদন্ড বলা হয়। তাই আমরা অর্থ্যাৎ মানুষ অমেরুদন্ডী প্রানী নয়। মানুষ একটি মেরুদন্ডী প্রানী।

মেরুদন্ডী ও অমেরুদণ্ডী প্রাণীর পার্থক্য ও উদাহরণ দাও?

পৃথিবীর সকল প্রাণীদেরকে দুটি প্রধান গ্রুপে ভাগ করা যেতে পারে যেমন, মেরুদণ্ডী এবং অমেরুদণ্ডী প্রাণী। মেরুদন্ডী এবং অমেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল অমেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরের ভিতর কোন বড় শক্ত হাড় থাকে না। আর মেরুদন্ডী প্রানীর শরীরের ভিতর একটা বড় শক্ত হাড় থাকে। মেরুদণ্ডী প্রাণীর উদাহরণের মধ্যে রয়েছে পাখি,সাপ এবং মানুষ। আর অমেরুদন্ডী প্রানীর উদাহরন হলো মাছি, আমিবা, স্পঞ্জকেঁচো, জোঁক, ইত্যাদি 

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা ১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম সম্পর্কে জানলাম। পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত মেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহের ভিতরে একটি বড় হাড় বা কার্টিলাজিনাস কঙ্কাল থাকে। তাই এসব প্রাণীদেরকে মেরুদণ্ডী বলা হয়। কারণ সমগ্র কঙ্কালের ভিত্তি হাড় এবং একটি খুলি সমন্বিত মেরুদণ্ডের কলাম ছাড়া আর কিছুই নয়। পৃথিবীতে লক্ষ প্রজাতির প্রানীর বসবাস। সকল প্রানীর জীবনযাপন ধারা এক নয়। তাদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পার্থক্য। বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে তাদের কে করা হয়েছে শ্রেনীবিভাগ। তার মধ্যে একটি হলো মেরুদন্ডের ভিত্তিতে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“১০ টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *