Skip to content
Home » ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম

৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম

Name 5 Educational Technologies

৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম শীর্ষক আজকের প্রবন্ধে আপনাকে স্বাগতম । শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যা ছাড়া বর্তমান এর আধুনিক পৃথিবী সম্পূর্ণ অচল। মানব সমাজ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে এবং শিক্ষাক্ষেত্র সেগুলোর ব্যবহার আরও চমকপ্রদ ও কার্যকরী। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির রয়েছে নানা প্রকার ব্যবহার, প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা। শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কাজ এত বেশি হওয়ার মূল কারণ হলো ডিজিটাল ধারণা ও ডিজিটাল পৃথিবী। সকল কিছুর জ্ঞান তুচ্ছ করে তোলার জন্য এবং যেকোনো তথ্য হাতের নাগালে পাওয়ার জন্য তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় শিক্ষা ক্ষেত্রেও। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার শিক্ষাক্ষেত্রে যুগ করেছে এক নতুন মাত্রা।

শিক্ষা প্রযুক্তি কাকে বলে?

সাধারণত আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অতি সহজে সমস্যা সমাধান করতে যেসব কৌশল ব্যবহার করি তাকেই প্রযুক্তি বলে। এটি বস্তুগত বা অবস্তুগত উভয় হতে পারে। একই ভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষণ ও শিখণ কার্যক্রমকে সহজ করতে যেসব বস্তুগত ও অবস্তুগত, দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান, মানবীয় ও অমানবীয় মাধ্যম বা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তাকেই শিক্ষার প্রযুক্তি বলে। এটিকে অনেক সময় নির্দেশনা প্রযুক্তি ও বলা হয়ে থাকে। শিক্ষক তার শিক্ষণ কার্যক্রম সর্বজনবোধ্য,সহজ-সরল,আকর্ষণীয় ও আনন্দঘন করতে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। শিক্ষকের ব্যবহ্রত বিভিন্ন পদ্ধতিও এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন- লেকচার, উপস্থাপন, দলগত কাজ ইত্যাদি। এছাড়া, বই, খাতা, কলম ইত্যাদি শিক্ষার  বস্তুগতপ্রযুক্তি।

৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম

উন্নত বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় যে, প্রতিটি দেশেই শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টানেট, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই উন্নত দেশের মত বর্তমান সময়ে বাংলাদেশেও ব্যবহার করা হচ্ছে শিক্ষার বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল প্রযুক্তি। এক সময় পরিক্ষার ফলাফল জানার জন্য সরাসরি স্কুলে যেতে হত কিন্তু বর্তমান সময়ে ঘরে বসে মোবাইল ফোন থেকেই অতি সহজেই পরিক্ষার ফলাফল দেখা যায় মূহুর্তের মধ্যেই। এছাড়াও মেডিকেল শিক্ষায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ডিভাইস ব্যবহার করে অতি সহজেই শিক্ষা গ্রহন করতে পারছে। এমন অনেক ব্যবহার শিক্ষাখাতকে অনেক বেশী অগ্রসর করতে তুলেছে। শিক্ষার বহুবিদ প্রযুক্তির মধ্য থেকে মাত্র ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

১। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম

ভার্চুয়াল শব্দের অর্থ হচ্ছে যার কোন অস্তিত্ব নেই। ভার্চুয়াল হচ্ছে এমন এক মাধ্যমে যেখানে কোন কিছুর বাস্তবিক রূপ নেই শুধুমাত্র তার অস্তিত্বকে কল্পনা করা হয়। বর্তমান সময়ে ভার্চুয়াল মাধ্যম শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক বেশী অবদান রাখছে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম বলতে অস্তিত্বহীন শ্রেনীকক্ষকে বোঝানো হয়ে থাকে মূলত যেখানে শ্রেনীকক্ষ, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয় উপস্থিত থাকবে কিন্তু সরাসরি ক্লাস রুম থাকবেনা। শৃুধুমাত্র মোবাইল অথবা কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে একটি অ্যাপ বা সফটওয়্যার ব্যবহার করে ক্লাস নেওয়া হবে। এটি এমন এক মাধ্যম যেখানে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক একে অপরের সাথে কথা বলতে পারে এবং একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করতে পারে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম গুলো মূলত ক্লাউড ভিত্তিক শিক্ষা গ্রহন করার মাধ্যম যেখানে একটি ক্লাসরুম তৈরি করা হয়ে থাকে এবং এই ক্লাসরুমে উপস্থিত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কিছু ডিভাইস যেমন, কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ ইত্যাদি ডিভাইস গুলো ব্যবহার করতে হয়।

২। বায়োমেডিকেল প্রযুক্তি

বায়োমেডিকেল প্রযুক্তি বা জৈবচিকিৎসা প্রযুক্তি হচ্ছে এমন এক মাধ্যম যেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তির প্রয়োগ করা হয় এবং প্রয়োগের মাধ্যমে জীবন্ত বা জৈবিক মাধ্যমকে উন্নতি করন করা হয়ে থাকে। এই মাধ্যমে মানুষের রোগ নিরাময় এবং স্বাস্থ্যকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে মেডিকেল শিক্ষার্থীগন তার শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য বিষয় গুলো অনেক সহজেই বুঝতে পারে এবং বাস্তবিক ধারণা পেয়ে থাকে যার ফলে রোগ নিরাময় এবং গবেষণা অতি সহজেই শিখে নিতে পারে। বর্তমান সময়ে বায়োমেডিকেল প্রযুক্তি মেডিকেল চিকিৎসা এবং শিক্ষায় নিয়ে এসেছে অধিক পরিবর্তন। বায়োমেডিকেল প্রযুক্তির সাথে বেশ কিছু প্রযুক্তি অতপ্রতভাবে জড়িত রয়েছে যেমন, ইনফরমেটিক্স, বায়োমেডিকাল গবেষণা, জৈবচিকিৎসা বিজ্ঞান, বায়োমেডিকাল জৈবচিকিৎসা প্রকৌশল, জৈব প্রকৌশল ,বায়োটেকনোলজি প্রভৃতি।

৩। বায়োইনফরমেটিক্স

বায়োইনফরমেটিক্স বা জৈব তথ্য বিজ্ঞান হচ্ছে এমন এক কৌশল বা পদ্ধতি যা জীব বিজ্ঞানের সব ধরণের সমস্যার সমাধান করে থাকে। বিশেষ করে জীব বিজ্ঞানের সমস্যা গুলো সমাধান করার জন্য তথ্যবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ফলিত গণিত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রসায়ন এবং জৈব রসায়ন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি এমন এক মাধ্যম যেখানে জীব বিজ্ঞানের বিষয় বস্তু গুলোকে আনবিক পর্যায়ে গবেষণা করা হয়ে থাকে।

৪। অনলাইন শিক্ষা মাধ্যম

করোনা মহামারির সময় অনালাইন শিক্ষা মাধ্যম অনেক বেশী জনপ্রিয়তা পায় কারণ তখন কোন শিক্ষার্থী ঘর থেকে বের হতে পারেনি। যার ফলে বাধ্যতামূলকভাবেই শিক্ষাক্রমগুলো অনলাইনে সম্পাদন করা হয়ে থাকে। সেই মাধ্যম এখনো অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে যেমন এখন ঘরে বসেই টিউশন নেয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যারা অনলাইনে পাঠদানের জন্য বিভিন্ন ধরণের কোর্স বিক্রি করে থাকে। এছাড়াও স্কুল কলেজের টিউশন ফি থেকে শুরু করে রেজাল্ট দেখা, ভর্তির জন্য আবেদন সমস্ত কিছুইে এখন করা যাচ্ছে মোবাইল এবং কম্পিউটার ব্যবহার করে। কোন একটি বিষয় না বুঝলে ইউটিউব থেকে অতি সহজেই সেই বিষয়ের লেসন বের করে নিজে নিজে সমস্যার সমাধান করা যায় অতি সহজেই। বলা যায় আধুনিন প্রযুক্তি শিক্ষাকে করেছে অনেক বেশী সহজ থেকে আরও সহজতর। 

৫। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি

ভার্চুয়াল শব্দের অর্থই হলো কাল্পনিক এবং রিয়েলিটি শব্দের অর্থ হচ্ছে বাস্তবিক। কম্পিউটারকে ব্যবহার করে কাল্পনিক বিষয়গুলোকে বাস্তবে রূপ দেয়ার নামই হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। বর্তমান সময়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক বেশী অবদান রাখছে। কেননা ভার্চুয়াল মেশিনকে ব্যবহার করার মাধ্যমে যে বিষয় গুলো কল্পনা করা হয় সেগুলো দেখা যায়। বিশেষ করে সেনা সদস্যদের অস্ত্র চালানোর ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অনেক বেশী কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশী উপকারে আসে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে শিখার্থীরা এমন এক জায়গায় চলে যেতে পারে যেখানে বাস্তবে যাওয়া সম্ভব নয় যেমন চাঁদ, মঙ্গল গ্রহের মত জায়গায় গিয়ে ঘুরে আসতে পারে।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।

প্রযুক্তি ও শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক কি?

প্রযুক্তির উপর নির্ভর করেই আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য থেকে শুরু করে, শিক্ষায় পাঠক্রম, শিক্ষাদান পদ্ধতি প্রভৃতি নির্ণয় করা হয়ে থাকে। আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীন বিকাশ সাধন করা। মূলত শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীন বিকাশ সাধনের ক্ষেত্রে শিক্ষায় প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়ে থাকে।

২০২৫ সালে প্রযুক্তি কোথায় যাবে?

কোম্পানিগুলি নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে যা পণ্য এবং পরিষেবাগুলিতে আরও দক্ষতা এবং কার্যকারিতা নিয়ে আসবে। ২০২৫ সালে সবচেয়ে বেশি চাহিদা এবং শীর্ষ প্রযুক্তির ফসল হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। ভবিষ্যতে এআই এর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং বেশিরভাগ শিল্পই এখন এআইকে কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দিক থেকে ব্যবহার করছে।

উপসংহার

প্রযুক্তি মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে বিভিন্ন পণ্য, যন্ত্রপাতি ও পদ্ধতির উদ্ভাবন করে। এই বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আবার ফ্রিজ, টেলিভিশন, মোবাইল এবং বৈদ্যুতিক বাতি উদ্ভাবনে কাজে লাগানো হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের নানান ক্ষেত্র রয়েছে। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দিক ও শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজনীয় হচ্ছে শিক্ষা ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার। শিক্ষা ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি আমরা নানাভাবে ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন জ্ঞান ধারণ, লাভ ও বিশ্লেষণ করতে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসংক্রান্ত সকল জ্ঞান অর্জনে অনুপ্রেরণা দিতে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। অতি সহজে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করতে পেরে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি পড়াশোনায় উৎসাহিত হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর উচিত কম করেও হলেও ৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম জানা। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ১০টি ব্যবহার সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“৫টি শিক্ষা প্রযুক্তির নাম” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *