তথ্য সংগ্রহের ৫ টি উৎসের নাম শীর্ষক আজকের প্রবন্ধে আপনাকে স্বাগতম । তথ্যই শক্তি বর্তমান সময়ের উক্তি। আমাদের জীবনে তথ্য খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কথায় আছে যার কাছে রয়েছে সঠিক তথ্য সেই হচ্ছে শক্তিশালী বা জ্ঞানী। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে আমরা প্রতিনিয়ত তথ্য বা ইনফরমেশন নিয়ে কাজ করছি। তথ্য কি বা কাকে বলে তা সকল প্রযুক্তিপ্রেমী মানুষ জানতে আগ্রহী। স্মার্ট ফোন,ল্যাপটপ কম্পিউটার ইত্যাদি আধুনিক যন্ত্রে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার তথ্য গ্রহণ ও প্রেরণের কাজ ঘটেই চলেছে। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের সকল স্বাভাবিক কাজকর্ম সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য পারিবারিক, দাপ্তরিক প্রত্যেক জায়গায় বিভিন্ন ধরনের তথ্য আদান-প্রদানের প্রয়োজন হয়। সকল ক্ষেত্রে আবার একই ধরনের তথ্যের প্রয়োজন হয় না। আবার সকল তথ্যের উৎসও আবার এক না। তাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উৎস থেকে আমাদের তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। সেই সংগ্রহকৃত তথ্য অবার ভুল বা শুদ্ধ হতে পারে । এভাবেই চলছে আমাদের প্রতিদিনের তথ্যময় জীবন।
তথ্য কি?
তথ্য হল কোন ঘটনার একটি বার্তা বা খবর। তবে সেই খবরটি সত্য বা ভুলও হতে পারে। তাই কোন সঠিক খবরকে তথ্য বলা হয়ে থাকে। কম্পিউটারের ভাষায় তথ্য হচ্ছে কিছু প্রক্রিয়াজাত ডাটা যার উপর ভিত্তি করে কোন নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়। আবার কোন নির্দিষ্ট বার্তা যা অর্থ বহন করে তাকেই তথ্য বলে । তথ্য মানুষের দ্বারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে ব্যবহার করা হয় (যেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া, পূর্বাভাস ইত্যাদি)। তথ্যের একটি মৌলিক উদাহরণ হবে একটি কম্পিউটার। সংগৃহীত ডেটা বা উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের পর প্রয়োজন মত সাজানো বা অর্থপূর্ণ অবস্থাকে তথ্য বা ইনফরমেশন বলা হয়। এক বা একাধিক ডেটা প্রক্রিয়াকরণের পর যে অর্থপূর্ণ ফলাফল পাওয়া যায় তাকেও তথ্য বলে। বিভিন্ন উপাত্ত প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিচালন, সংঘবদ্ধকরণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলকে তথ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় যা মানুষের মস্তিষ্কে প্রেরণ করা হলে তার জ্ঞান বৃদ্ধি পায়।
তথ্য সংগ্রহের ৫ টি উৎসের নাম
তথ্য মানুষের জীবনে খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। তথ্যই জীবনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। যার কাছে সঠিক ও পরিকল্পিত তথ্য রয়েছে সেই তো সফলতার পথে এগিয়ে যায়। তথ্য যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তারচেয়ে সঠিক ও নির্ভূল উৎস থেকে সেই তথ্য সংগ্রহ করা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কাছে তথ্য সংগ্রহের অনেক উৎস রয়েছে। তবে আমারা বেছে নেই সেই উৎসকে যার সঠিকতা বা সত্যতার পরিমান শতভাগ। নিচে তথ্য সংগ্রহের ৫ টি উৎসের নাম সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
১। টেলিভিশন
তথ্য সংগ্রহের একটি নির্ভরযোগ্য ও পরোক্ষ উৎস হলো টেলিভিশণ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে প্রতিনিয়ত টেলিভিশণ বিভিন্ন ধরনের তথ্য বুলেট আকারে প্রকাশ করে থাকে। আবার বেশি গুরুত্বপূর্ণ খবর লাইভ আকারেও প্রকাশ করে থাকে। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বিপদ বা সম্ভাবনা সম্পর্কে অবগত হতে পারি এই টেলিভিশনের বিভিন্ন খবর বা তথ্যের মাধ্যমে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, খেলাধুলা ও বিনোদনের নানা ধরনের প্রয়োজনীয় ও প্রয়োজনীয় প্রতিদিনের তথ্য সংগ্রহ করা যায় এই টেলিভিশনের মাধ্যমে যা সরাসরি সংগ্রহ করতে অনেক অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন হতো।
২। খবরের কাগজ
বিভিন্ন ধরনের খবরের কাগজ প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে প্রকাশ করে থাকে নানা ধরনের তথ্য। আমরা আমাদের যেকোন প্রয়োজনীয় তথ্য এই পত্রিকা পড়ে সংগ্রহ করতে পারি। হতে পারে সেটা, খেলাধুলা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, চাকুরী সংক্রান্ত এবং নিখোঁজ সংবাদ। এছাড়াও ব্যবাসায়িক, দাপ্তরিক ও শিক্ষামূলক অনেক তথ্যও পত্রিকা বা খবরের কাগজ পড়ে সংগ্রহ করা যায়। এর মাধ্যমে সেই ঘটনা স্থানে না গিয়ে পরোক্ষভাবে সেই তথ্য সংগ্রহ করার সুযোগ পাওয়া যায়। তবে সেই তথ্যের সঠিকতা বা সত্যতা নিয়ে থাকতে পারে ধোঁয়াশা।
৩। সরাসরি পর্যবেক্ষন
সরাসরি পর্যবেক্ষনের মাধ্যমেও আমরা তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। এই পদ্ধতিতে কোন বিষয়ের উপর তথ্য সংগ্রহ করতে হলে সেই বিষয়সংক্রান্ত অফিস বা স্থানে সরাসরি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা বোঝায়। এই তথ্য সংগ্রহের সঠিকতা বা সত্যতার পরিমান বেশি থাকে। আবার নিজে না গিয়েও সেই স্থানে বা অফিসে বিশ্বস্ত ব্যক্তি প্রেরন করে তথ্য সংগ্রহ করাকেও সরাসরি পর্যবেক্ষনের মধ্যে পড়ে।
৪। ইন্টারনেট
ইন্টারনেটে সারাবিশ্বের যে কোন বিষয়ের খবর রয়েছে। তবে এক্ষেত্রেও জটিলতা রয়েছে। আমরা যে বিষয়েে উপর খবর সংগ্রহ করতে চাই যদি সেই বিষয়ের তথ্য কেউ ইন্টারনেটে শেয়ার করে থাকে তবেই আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেই তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। তবে সেই তথ্য কতটুকু সত্য বা সঠিক তার নিশ্চয়তা দেওয়া মুশকিল। আবার একই তথ্য একাধিক ওয়েবসাইটে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে থাকে। তখন কোন তথ্য সঠিক সেটা নির্বাচন করাও কঠিন হয়ে পড়ে।
৫। মোবাইল বা টেলিফোন
আমাদের বিভিন্ন কাজে তথ্য প্রয়োজন হয়। তথ্য সংগ্রহের অনেক উৎস রয়েছে। বিভিন্ন উৎস থাকলেও সঠিক ও নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা খুবই জটিল বিষয়। অনেক সময় তথ্যদাতাও ভুল তথ্য সরবরাহ করতে পারে বা ইচ্ছাকৃতভাবেও সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে চায় না। আমরা টেলিফোনের মাধ্যমেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। এ পদ্ধতিতে ঘটনার স্থান প্রত্যক্ষদর্শীর নিকট ফোন করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। অথবা এমন ব্যক্তির কাছে টেলিফোন বা মোবাইল করতে পারি যে ব্যক্তি সেই বিষয়ে সঠিক খবর রাখেন বা সংগ্রহ করে দিতে পারেন।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
তথ্য সংগ্রহের ৫ টি উৎসের নাম এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।
বিশ্বাসযোগ্য উৎস কাকে বলে?
একটি বিশ্বাসযোগ্য বা নির্ভরযোগ্য উৎস হল এমন একটি উৎস যেখানে আপনি উৎসের দেওয়া তথ্যের উপর নিশ্চিন্তে আস্থা রাখতে পারেন । আপনি উৎসের মধ্যে প্রাপ্ত তথ্যের উপর নির্ভর করতে পারেন কারণ এই তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তি, প্রকাশক বা প্রতিষ্ঠান সেই তথ্যের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত উৎস।
তথ্যের উৎস হিসেবে মানুষের গুরুত্ব কতটুকু?
তথ্যের উৎসের জন্য মানুষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে যদি সেই মানুষ সঠিক তথ্য সরবরাহ করে। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে সর্বদা উৎস হিসাবে মানুষদের ব্যবহার করি। আমরা হোটেলের খাবার ভালো কিনা বা কোন দর্শনীয় স্থানটি কেমন তা জানার জন্য আমরা আমাদের সেই প্রত্যক্ষদর্শী বন্ধটিকে জিজ্ঞাসা করে থাকি।
উপসংহার
তথ্য মানব সভ্যতার উন্নয়নের পরতে পরতে মিশে আছে। সঠিক তথ্য ছাড়া কোনো পরিকল্পনাই সফল হয় না। শিক্ষা-চিকিৎসা, উৎপাদন-বিপণন,ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, অর্থনীতি-সমরনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রেই তথ্যের প্রয়োজন। তথ্য ছাড়া মানব জীবন এক প্রকার অচলই বলা যায়। তাই বলা হয় ‘তথ্যই শক্তি’। আর সেই তথ্যের প্রবাহ অবারিত না হলে কোনো পরিকল্পনাই গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তাই বিশ্বব্যাপী আওয়াজ উঠেছে তথ্য প্রকাশ করতে হবে, তথ্য আদানপ্রদানের মাধ্যমে পরস্পরকে সহযোগিতা করতে হবে।
তথ্য আমাদের জীবনে খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। ভুল তথ্যের জন্য ঘটে যেতে পারে অনেক বড় দুর্ঘটনা। তাই সঠিক তথ্য সংগ্রহ বা সরবরাহের কোন বিকল্প নেই। যে দেশ সঠিক তথ্যে সম্বৃদ্ধ তারাই আজ উন্নতির শিখরে আরোহন করছে। সেই মূল্যবান তথ্য সংগ্রহের নানা উৎস রয়েছে। উপরে উল্লেখিত তথ্য সংগ্রহের ৫ টি উৎসের নাম পড়েই আমরা তথ্যের গুরুত্ব বুঝতে পারি। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ১০টি ব্যবহার সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“তথ্য সংগ্রহের ৫ টি উৎসের নাম” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।