মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ আপনাকে যে কোনো পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এগিয়ে রাখবে। মহাবিশ্ব হলো একটি বিশাল জগৎ। মহাবিশ্বের সীমানা অনেক বড় ও বিস্তৃত। জ্যোতির্বিজ্ঞানে, মহাবিশ্বের জন্য যে সংজ্ঞাটি উল্লেখ করা হয়েছে তা একেবারে এর সাথে বিদ্যমান সমস্ত কিছুর সাথে সম্পর্কিত। অতএব, এটি স্থান, সময় এবং সব ধরনের পদার্থের সাথে মিল পাওয়া যায়। সুতরাং মহাবিশ্ব কী তার সবচেয়ে সঠিক উত্তর হল যা দেখি তার সবকিছু। মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব অনুসারে মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন বিন্দুবৎ অবস্থা থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এই তত্ত্বের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো কোনও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার পরিবর্তে একটি বিশেষ মুহূর্তে মহাবিশ্বের উৎপত্তি হয়েছে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী আজ থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৭৫ কোটি বছর পূর্বে এই মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়।
পৃথিবী সমতল থালার মতো নয় বরং গোলাকার একটি বস্তু। এটি বিশ্বাস করার স্বপক্ষে অনেক আগে, প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪০ সালে অ্যারিস্টটল অন্তত দুটি ভালো যুক্তি দেখিয়েছিলেন। এই তত্ত্ব অনুযায়ী আজ থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৭৫ কোটি বছর পূর্বে এই মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থেকে জন্ম হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়। মাত্র মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্য দিয়ে এর সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না।
মহাবিশ্ব কাকে বলে?
নাসার মতে মহাবিশ্ব হলো একটি বড় খোলা জায়গা। আপনি আমি মূলত এই মহাবিশ্বেই আছি। যে বিষয়গুলো আমরা দেখতে পাচ্ছিনা সেগুলোও এর মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বড় নক্ষত্ররাও রয়েছে যেমনঃ সূর্য। এছাড়াও পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম জিনিসগুলোও মহাবিশ্বের অংশ, যেমনঃ এমিবা, এন্টামিবা। আমরা আসলেই জানি না মহাবিশ্ব কত বড়! মহাবিশ্ব অনেক গ্রহ, নক্ষত্র ও গ্যালাক্সিসমূহ নিয়ে গঠিত একটি বিশাল জগৎ। মহাবিশ্বের কোন সীমা,পরিসীমা প্রতিনিয়ত এটা বড় হচ্ছে। মহাবিশ্ব, জ্যোতির্বিদ্যা অনুসারে, সেই স্থান এবং সময় যেখানে পৃথিবী, সূর্য, অন্যান্য গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদি সহ সমস্ত তারা সন্নিবেশিত হয়ে আছে।
পৃথিবী এবং অন্যান্য সমস্ত গ্রহ , সূর্য ও অন্যান্য তারা ও নক্ষত্র , জ্যোতির্বলয়স্থ স্থান ও এদের অন্তর্বর্তিস্থ গুপ্ত পদার্থ, ল্যামডা-সিডিএম নকশা, তমোশক্তি ও মহাশূণ্য (মহাকাশ) – যেগুলো এখনও তাত্ত্বিকভাবে অভিজ্ঞাত কিন্তু সরাসরি পর্যবেক্ষিত নয় এমন সব পদার্থ ও শক্তি মিলে যে জগৎ তাকেই বলা হচ্ছে মহাবিশ্ব বা ব্রহ্মাণ্ড। এর মধ্যে আছে সকল স্থান, সমস্ত পদার্থ এবং শক্তি যা মহাকাশে রয়েছে। ঘড়ির কাটা ঘোরা এমনকি সময়ও এই মহাবিশ্বের মধ্যেই আছে এবং অবশ্যই, এটি আমাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করে। পৃথিবী এবং চাঁদ মহাবিশ্বের অংশ। এছাড়া অন্যান্য গ্রহ এবং চাঁদের মত আরও কয়েক ডজন উপগ্রহ এই মহাবিশ্বের অংশ।
মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্য
মহাবিশ্বের আকার বিশাল। বর্তমান বিশ্বতত্ত্বের মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের বর্তমান বয়স অনুমান করা হয় ১,৩৭৫ কোটি বছর। এই মহাবিশ্বের দেখা যাওয়া অংশের এই মুহূর্তের ব্যাস প্রায় ৯,৩০০ কোটি আলোকবর্ষ হবে। যেহেতু মহাবিশ্বের প্রতিটি বিন্দু প্রতিটি বিন্দু থেকে প্রতি মুহূর্তে আরো দূরে সরে যাচ্ছে তাই মহাবিশ্বের ব্যাস ১,৩৭৫ x ২ = ২,৭৫০ কোটি আলোকবর্ষের চাইতে আরও বেশি। জ্যোতির্বিদরা মনে করছেন দৃশ্যমান মহাবিশ্বে প্রায় ১০ হাজার কোটি (১০+১১) ছায়াপথ রয়েছে। বর্তমানের মহাজাগতিক মডেল অনুযায়ী মহাবিশ্বের মূল উপাদান হচ্ছে কৃষ্ণ বা অন্ধকার শক্তি। মনে করা হচ্ছে যে এই শক্তি সারা মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে এবং মহাবিশ্বের প্রসারণের পিছনে এই শক্তিই মূল ভূমিকা পালন করছে। এমন আরও অসংখ্য অজানা তথ্য রয়েছে এই মহাবিশ্ব সম্পর্কে। মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্য নিচে উপস্থাপন করা হলো।
- মহাবিশ্বের কোনও সীমা, পরিসীমা নেই।
- মহাবিশ্বের উৎপত্তি (সংক্রান্ত যে বিষয় রয়েছে) সংক্রান্ত বিষয়কে বিশ্বতত্ত্ব বলে।
- মহাবিশ্বের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Universe।
- শত শত কোটি গ্যালাক্সি রয়েছে এই মহাবিশ্বে।
- মহাবিশ্বের শত কোটি গ্যালাক্সির ছায়াপথ গুলোতে রয়েছে আবার কোটি কোটি তারা বা নক্ষত্র।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্য এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।
মহাবিশ্বের বয়স কত?
এ্যারিস্টটল এর তত্ত্ব অনুযায়ী আজ থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৭৫ কোটি বছর পূর্বে এই মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থেকে জন্ম হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়।মহাবিশ্বের বয়সের ব্যাপারে সবচেয়ে সুসঙ্গত তথ্য হচ্ছে ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছর বা প্রায় ১৪ বিলিয়ন তথা ১৪০০ কোটি বছর।
পৃথিবী কি দিয়ে তৈরি হয়েছে?
সৌরজগৎ সৃষ্টির প্রায় মোটামুটি ১০০ মিলিয়ন বছর পরে একগুচ্ছ সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয় পৃথিবীর। আজ থেকে প্রায় ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী নামের গ্রহটি আকৃতি পায়। সাড়ে ৪০০ কোটি বছর পূর্বে দুটি গ্রহের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছিল। সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে এ সময় একত্রিত হয়ে যায় গ্রহ দুটি।
উপসংহার
প্রাচীন কালে মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করার জন্য নানারকম বিশ্বতত্ত্বের সাহায্য নেওয়া হত। পুরাতন গ্রিক দার্শনিকরাই প্রথম এই ধরনের তত্ত্বে গাণিতিক মডেলের আশ্রয় নেন এবং পৃথিবী কেন্দ্রিক একটি মহাবিশ্বের ধারণার রুপরেখা প্রনয়ন করেন। তাদের মডেলে পৃথিবীই মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সকল গ্রহ, সূর্য ও নক্ষত্ররা চারপাশে ঘুরছে। গ্রীকদের এই মডেলে মহাবিশ্বের মোট আয়তন বর্তমানে জ্ঞাত বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথের মধ্যেই ছিল। তারা ভেবেছিলেন আকাশের তারারা আমাদের থেকে খুব বেশি দূরে অবস্থিত নয় খুব কাছেই তার অবস্থিত। মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানার কোনো শেষ নেই। তবুও আমরা চেষ্টা করে চলেছি যে আপনাদেরকে মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্যে জানানোর।
এক কথায় বলতে গেলে মহাবিশ্ব অনেকগুলো ‘ডার্ক ম্যাটার আর ডার্ক এনার্জির সমন্বয়ে গঠিত যা আজ অবধি কেউ পরিস্কারভাবে বুঝতে পারেনি। আমরা কল্পনাও করতে পারিনা আরো কত ধরণের রহস্য লুকিয়ে আছে এই মহাবিশ্বের মাঝে। তাই মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্য দিয়ে যতটুকু জানানো যায় তারই একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে বাংলাদেশ সম্পর্কে ৫টি বাক্য সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“মহাবিশ্ব সম্পর্কে ৫টি বাক্য” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।