কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় তা কবুতর পালনের পূর্বে জানতে হবে কেননা এটি পালন করা অত্যান্ত লাভজনক। কবুতর শৌখিন পাখি হিসেবে বিবেচিত হলেও আমাদের দেশে কবুতর পালন শৌখিনতার পাশাপাশি লাভজনক একটি অর্থনৈতিক খামার হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার কবুতরের মাংসের পুষ্টিমান সম্বন্ধে আমরা অবগত। সুতরাং কবুতরের গুরুত্ব অনেক বেশি এখন। প্রাচীন কালে কবুতর বার্তা বাহক হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, বর্তমানে কবুতর অর্থকরী একটি প্রাণিসম্পদ। দেশের সর্বত্রই এই প্রাণির পালন চোখে পড়ে। ভালোমানের কবুতর পালনের জন্য কবুতরের বাচ্চা সম্বন্ধে ভালো ধারণা থাকা জরুরি। তাই আজ আমরা কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ভালো জাতের কবুতর চেনার উপায়
কবুতর পালনের পূর্বে ভালো জাতের কবুতর চিনতে পারা অত্যাবশ্যক। ভালো জাতের কবুতর চেনার কিছু উল্লেখযোগ্য চিহ্ন থাকবে। সেগুলো হচ্ছে, চকচকে উজ্জ্বল পালক থাকে, উজ্জ্বল চোখ, শুষ্ক নাক, পায়ের আঙুল শক্ত, লেজ পরিষ্কার ও স্বাভাবিক পালক থাকবে। একটি ভালো ও উন্নত জাতের কবুতরের প্রধান লক্ষ্মণ হচ্ছে এগুলো। উন্নত জাতের কবুতরের বাচ্চা উন্নত মানের হবে। কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়, সেটা কবুতরের জাত ও সুস্থতার উপর নির্ভর করে।
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়?
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় তা নির্ভর করে কবুতর গুলো কোন জাতের। কিছু জাতের কবুতর একবার বাচ্চা দেওয়ার পরপরই আবার বাচ্চা দিয়ে ফেলে যতদ্রুত সম্ভব। আবার কিছু জাতের কবুতর বাচ্চা বড় হওয়ার পরেও আবার ডিম দেয় না বাচ্চার জন্য। তেমন কয়েকটি জাতের কথা আজ জানাবো,
গিরিবাজ কবুতর

গিরিবাজ কবুতর গুলো অনেকটা ছোট আকারে কিন্তু দারুণ উড়তে পারে ও বেশ দ্রুতগামী। এরা শারিরীকভাবে দারুণ শক্তিশালী। শরীরে প্রচুর শক্তি থাকায় ডিম উৎপাদনে বরাবরই এরা এগিয়ে থাকে। এই জাতের কবুতর গুলোর খাবারে বৈচিত্র্যতা লক্ষ্য করা যায়। কারণ এগুলো অনেক দূর পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। বেশি ডিম দিতে পারায়, এই জাতের কবুতর গুলো বেশি বাচ্চা দেয়। এই জাতের কবুতর গুলো প্রতি মাসে একজোড়া ডিম দিতে সক্ষম।
জালালি কবুতর

জালালি কবুতর বাচ্চা পাওয়ার জন্য আরেকটা উন্নত জাত। দেখতে সুন্দর, উন্নত জাতের এই কবুতর গুলো ডিম দেওয়ার পরে তা নষ্ট করে না। ফলে ডিম থেকে বাচ্চা পাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ প্রায়। আর এর সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ডিম থেকে বাচ্চা দেওয়ার ১৫ দিন পরেই আবার ডিম দিতে সক্ষম। অর্থাৎ মাত্র ১৫ দিন পরেই আবার বাচ্চা দেওয়ার উপযোগী।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তর সমূহ
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।
কবুতরের সুষম খাদ্য কোনগুলো?
কবুতরের সুষম খাদ্য সমূহ কবুতরের সুস্থতার জন্য জানা জরুরি। একটা কবুতর সাধারণত দৈনিক ৩০-৫০ গ্রাম খাদ্য ও প্রায় ১০০ মিলি গ্রাম পানি পান করে থাকে।
বাংলাদেশে কয়টি প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায়?
সারাবিশ্বে ১২০ প্রজাতির কবুতর পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে সর্বমোট ২০ প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায়। উপরে ২০ প্রজাতির কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনেছি। তবে এই সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। বাংলাদেশে এখন বহির্বিশ্ব থেকে উন্নত জাতের কবুতর এনে পালন করা হচ্ছে।
উপসংহার
সুতরাং উন্নত জাতের কবুতর ও কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় তাদের ব্যপারে বিস্তারিত জেনেছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে। কবুতর পালন করে লাভবান হতে কবুতরের জাত, কোন জাতের কবুতর পালন করা অধিক লাভবান, এই সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। কারণ না জেনে কবুতর পালনে আর্থিকভাবে ক্ষতির ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। কবুতর যেমন খুবই সম্ভাবনাময় একটি প্রাণিসম্পদ, তেমনই অত্যন্ত সংবেদনশীলও। তাই যথাযথভাবে জেনে কবুতর পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে দেশের সমৃদ্ধি তে অংশগ্রহণ করা উচিত। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে হাঁসের ঔষধ তালিকা সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ!