ডিজিটাল কনটেন্ট কি? ডিজিটাল কনটেন্ট কত প্রকার? যারা কনটেন্ট ক্রিয়েটর তারা ভালো করেই জানে। কনটেন্ট হল কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্যসমূহ তুলে ধরার মাধ্যম। কন্টেন্ট হল কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্য উপাত্ত কে মানুষের বোধগম্য করার প্রক্র্রিয়া বা নমুনা। সেটা হতে পারে কোন টেক্সট কনটেন্ট, ইমেজ কনটেন্ট, ভিডিও কনটেন্ট, পিপিটি কনটেন্ট অথবা ডক ফাইল ইত্যাদি। ডিজিটাল কন্টেন্ট একটি বড় ক্যাটাগরিতে পড়ে যা অনলাইনে উপলব্ধ উপস্থাপিত হয় এবং ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অ্যাক্সেস করতে হয়। যেমন টেক্সট বা লিখিত আকারে, ছবি, অডিও, ভিডিও, গেমস, অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েবসাইট ইত্যাদি। ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন রকমের তথ্য উপাত্ত, বিনোদন এবং শিক্ষামূলক ব্যাপক সংগ্রহ প্রদান করে।
ডিজিটাল কন্টেন্ট নিয়ে আমাদের একটি ভুল ধারণা আছে। অনেকে মনে করি, একটি ক্লাস রুমে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড দেখিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে ক্লাস শেষ করাই হচ্ছে ডিজিটাল কন্টেন্ট বা ভিডিও এনিমেশন। কিংবা পিকচার দেখিয়ে একটি সম্পূর্ণ ক্লাস রুম অথবা অফিস মিটিং সিনেমা হলের মতো করে বানিয়ে উপস্থাপন করাই হচ্ছে ডিজিটাল কন্টেন্ট। আসলে কিন্তু এমনটা নয়।
কনটেন্ট কি?
কন্টেন্ট হচ্ছে কোন বিষয়ের উপর তথ্য তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম বা প্রক্রিয়া। অন্যভাবে বলতে গেলে, কন্টেন্ট হল কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর তথ্য বা উপাত্তের সমষ্টি। আমরা কন্টেন্টের উদাহরণ বলতে টেক্সট বা লেখা, ছবি, ভিডিও, ভিডিও এনিমেশন, ভয়েস কন্টেন্ট, এবং ডকস (Docs) ফাইল কনটেন্ট ইত্যাদি অনেক ধরনের কন্টেন্টের নাম বলতে পারি। কনটেন্ট তৈরির সময় ক্রিয়েটরকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সাথে কনটেন্ট তৈরি হয়।
ডিজিটাল কনটেন্ট কি?
ডিজিটাল কন্টেন্ট হল কম্পিউটার বা ইন্টারনেটে সংরক্ষিত সমস্ত সামগ্রীক বিষয় যা কিনা ইউজারদের অনলাইনে অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করে থাকে। ডিজিটাল কন্টেন্ট (Digital Content) বলতে আমরা তথ্য বা কন্টেন্টের ডিজিটাল রূপকে বুঝে থাকি। কোন কনটেন্ট যদি ডিজিটাল উপাত্ত আকারে প্রকাশিত হয় বা প্রেরিত বা গৃহিত হয় অথবা ডিজিটালভাবে প্রদর্শিত হয় তাহলে সেই সব কনটেন্টকেই ডিজিটাল কনটেন্ট বলে থাকে। সেটি ডিজিটাল বা এনালগ যেকোনাে পদ্ধতিতেই সংরক্ষিত হতে পারে। ডিজিটাল কনটেন্ট কম্পিউটারের ফাইল আকারে অথবা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্প্রচারিত হতে পারে। লিখিত তথ্য, ধারনকৃত ছবি, শব্দ কিংবা রেকর্ডকৃত ভিডিও ডিজিটাল কনটেন্ট হতে পারে। ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহারের ফলে তথ্য উপস্থাপন ও স্থানান্তর তুলনামুলকভাবে সহজতর হয়। ছবি, অডিও, ভিডিও ও এনিমেশনের সমন্বয় হলো ডিজিটাল কনটেন্ট।
ডিজিটাল কনটেন্ট কত প্রকার?
ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত যে কোন তথ্য, ছবি, শব্দ কিংবা সবই ডিজিটাল কনটেন্ট হিসাবে গন্য। বিভিন্নভাবে ডিজিটাল কনটেন্ট কে শ্রেণিকরণ করা যায়। তবে, ডিজিটাল কনটেন্টকে প্রধান চারটি ভাগেই ভাগ করা হয়ে থাকে। নিম্নে প্রকারভেদগুলো ও তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা উল্লেখ করা হলো।
- টেক্সট বা লিখিত কনটেন্টঃ লেখার জন্য ডিজিটাল কন্টেন্ট যেমন ব্লগ পোস্ট, নিউজ আর্টিকেল, ওয়েবসাইট পেইজ, সংবাদ পত্র ইত্যাদি।
- ছবিঃ ছবি এবং ভিডিও কন্টেন্ট যেমন ইমেজ, ইনফোগ্রাফিক, ফটোগ্রাফি, প্রেজেন্টেশন, স্লাইড শো, সংগীত ভিডিও, ফিল্ম ইত্যাদি।
- শব্দ বা অডিওঃ অডিও কন্টেন্ট যেমন পডকাস্ট, সংগীত, অডিওবুক, রেডিও প্রোগ্রাম ইত্যাদি।
- ভিডিও ও এনিমেশনঃ সামাজিক মাধ্যম কন্টেন্ট যেমন ফেসবুক পোস্ট, টুইট, ইনস্টাগ্রাম পোস্ট, ইউটিউব ভিডিও, লাইভ ভিডিও ইত্যাদি।
১। টেক্সট বা লিখিত কনটেন্ট
টেক্সট বা লিখিত কন্টেন্ট বলতে বুঝায় কোন বিষয়ের উপের যা লিখা হয়। লিখিতভাবে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়। ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত লিখিত তথ্যের পরিমাণই বেশি হয়ে থাকে। সব ধরনের লিখিত তথ্য এই শ্রেণীর কনটেন্ট এর মধ্যে পড়ে। এর মধ্য রয়েছে নিবন্ধ, ব্লগ পোস্ট, পণ্য বা সেবার তালিকা ও বর্ণনা, পণ্যের মূল্যায়ন, ই-বুক সংবাদপত্র, এবং শ্বেতপত্র ইত্যাদি।
২। ছবি
এই কন্টেন্ট সব ধরনের ছবিকে বুঝায়। সব ধরনের ছবি, ক্যামেরায় তোলা বা হাতে আঁকা বা কম্পিউটার দিয়ে তৈরি সকল ধরনের ছবি এই শ্রেণীর কনটেন্ট এর মধ্যে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে ফটো, হাতে আঁকা ছবি, অঙ্কন করা, কার্টুন , ইনফো-গ্রাফিক্স, এবং এনিমেটেডসহ সকল ছবি ইত্যাদি।
৩। শব্দ বা অডিও
মানুষের নিজের মুখে ভাষা প্রকাশ করার মাধ্যমই হচ্ছে অডিও কন্টেন্ট। কোন কাজের উদ্দেশ্যে অডিও আকারে তৈরি করা হয় যা পরে তা প্রচার বা প্রেরন করা হয়। মূলত রেকর্ড করা অডিও ফাইল অডিও কন্টেন্ট অন্তর্ভুক্ত। শব্দ বা অডিও আকারের সকল কনটেন্ট এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেকোন বিষয়ের উপর তৈরি অডিও ফাইলই অডিও কনটেন্ট। ইন্টারনেটে প্রচারিত ব্রডকাস্ট অডিও কনটেন্টের অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন বিষয়ের উপর শুধুমাত্র অডিও রেকর্ড করে তা প্রচার করা হয়ে থাকে।
৪। ভিডিও ও এনিমেশন
ক্যামেরা বা মোবাইল দিয়ে তোলা সকল ভিডিও, লাইভ ভিডিও। বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়ায় বিভিন্ন ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম গুলো সহজেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে মোবাইল ফোনেও ভিডিও ব্যবস্থা থাকায় অতি সহজেই স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে ছাড়া যায় তাই ভিডিও কনটেন্টের পরিমাণ বাড়ছে। ইউটিউব বা এই ধরনের ভিডিও শেয়ারিং সাইটের কারণে ইন্টারনেটে ভিডিও কনটেন্টের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এছাড়া বর্তমানে ইন্টারনেটে কোনো ঘটনার ভিডিও সরাসরি প্রচারিত করা যায় বা হয়ে থাকে। এটিকে বলা হয় ভিডিও স্ট্রিমিং বা সরাসরি সম্প্রচার। এমন কনটেন্টও ভিডিও কনটেন্টের আওতাভুক্ত।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
ডিজিটাল কনটেন্ট কি? ডিজিটাল কনটেন্ট কত প্রকার? এই বিষয়ে আপনার মনে অবশ্যই বেশ কয়েকটি প্রশ্ন থাকতে পারে এবং কৌতুহল সৃষ্টি হতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও তাদের উত্তর।
ব্লগ পোস্ট কি ধরনের কনটেন্ট?
ব্লগ পোস্ট হল এক ধরণের টেক্সট/লিখিত কনটেন্ট। ব্লগে পোস্ট করে বা লেখার মাধ্যমে আমরা একটি তথ্য অন্যকে সহজেই জানাতে পারি। যিনি ব্লগ পোস্ট লিখেন তাকে ব্লগার বলা হয়।
ডিজিটাল কনটেন্ট এর উপাদান গুলো কি কি?
ডিজিটাল কনটেন্ট এর উপাদান গুলো হল টেক্সট/লেখা, ছবি, ভিডিও ও অডিও। ডিজিটাল কনটেন্ট বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
উপসংহার
আমরা অনেকেই মনে করি, একটি ছবি কিভাবে ডিজিটাল কনটেন্ট হতে পারে? কারণ আমরা সকলেই জানি একটি ছবি কিন্তু হাজার হাজার শব্দ উপস্থাপন করে দেয় বা অতি সহজেই মানুষের সেই ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে। আপনারা ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে একটি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে ফেলতে পারেন। আমরা ইউটিউবে প্রবেশ করলেই দেখতে পারি অনেক ধরনের ভিডিও আপলোড করা। এই ভিডিওগুলো যারা তৈরি করে তারা প্রত্যেকেই কিন্তু কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তারা তাদের নির্দিষ্ট একটি টপিকস এর উপর নির্ভর করে এই ধরনের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করেছে। ফুড ব্লগ, ট্রাভেল ব্লগ, ডেইলি লাইফ ব্লগ, ফ্যাশন ব্লগ, এবং বিউটি ব্লগ ইত্যাদি। এই সব ব্লগের মাধ্যমে ক্রিয়েটরা হাজার হাজার টাকা ইনকাম করে থাকে। যারা গ্রহনযোগ্যতা যত বেশি পায় তারা তত বেশি ইনকাম করেন।
ডিজিটাল কন্টেন্ট হচ্ছে ছোট্ট একটি ভিডিও ক্লিপ, অডিও ক্লিপ বা যেকোন ছবি থ্রিডি এনিমেশন বা টুডি অ্যানিমেশন, পিডিএফ ফাইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি মিলিয়ে একটি সমন্বিতরুপ যা ডিজিটাল কন্টেন্ট নামে পরিচিত। যারা নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটর তারা ডিজিটাল কনটেন্ট কি? ডিজিটাল কনটেন্ট কত প্রকার? এসব বিষয় নিজে কাজ করে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে ভিডিও মার্কেটিং কি? ভিডিও মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ? সম্পর্কে পড়তে পারেন।
“ডিজিটাল কনটেন্ট কি? ডিজিটাল কনটেন্ট কত প্রকার?” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।