Skip to content
Home » কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়

কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়

Ways To Remove Small Pimples On Forehead

কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায় তাদের অবশ্যই জানার কথা যাদের ব্রণ হয়েছে । একজন সুন্দর মানুষ মানেই সুন্দর ত্বক, সুন্দর চুল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী  হয়ে থাকে। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ব্যালান্স ডায়েট ও ভালো পরিমানে ঘুম। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ধূলাবালির প্রলেপে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ছেলেদের ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর করতে প্রয়োজন নিয়মিত যত্নের। পুরুষের ত্বক মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি পুরু তার উপর বাহিরে থাকা হয় বেশি। এ কারণে মেয়েদের রূপচর্চার চেয়ে পুরুষদের রূপচর্চার বেশি হওয়া উচিত। তাই ব্রণ সারাতে পুরুষের ত্বকের যত্ন নিহে হবে বেশি।

ত্বকের সৌন্দর্য ও চেহারার উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয় ব্রণ । ব্রণ দূর করার উপায় ও রূপচর্চা জানা থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ । ব্রণের সমস্যা সৃষ্টি হয় তখনি, যখন আমাদের ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। আস্তে আস্তে এটি আকারে বড় হতে থাকে ও ভেতরে পুঁজ জমতে থাকে। যা ধীরে ধীরে ব্রণ হিসেবে দেখা আবির্ভূত হয়। বয়সন্ধীকালীন সমস্যা হিসেবে এটি বেশি চিহ্নিত হলেও প্রাপ্তবয়স্ক যে কারও ক্ষেত্রেই দেখা দিতে পারে। 

ব্রণ কি?

ব্রন হচ্ছে এক ধরনের গোটা বা দানা বিশেষ। ছেলে মেয়ে উভয়েরই হয়ে থাকে। ব্রণ মুখে বা পিঠেও হয়ে থাকে। মানুষের দেহের ভিতর থেকে সিবাম নামক এক ধরনের তৈলাক্ত রস বের হয়ে আসে। যা লোমকূপ দিয়ে ত্বকে এসে তৈলাক্ত ভাব তৈরি করে থাকে। কিন্তু লোমকূপে থাকা ক্যারোটিন যদি বাইরের ধুলবালির সাথে মিশে যায় সেই লোমকূপ বন্ধ করে দেয়। যার কারনে সেই সিবাম আর বাইরে আসতে পারে না। ফলে লোমের গোঁড়ায় গুটি গুটি দানা বেধে নরম হয়। এটাকেই ব্রণ বলে। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে এটি বেশি হয়। অ্যাকনি ভালগারিস (ইংরেজি: Acne vulgaris বা Acne) বা ব্রণ হলো মানুষের ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগবিশেষ যা বিশেষত লালচে ত্বক, তৈলাক্ত ত্বক, ক্ষতচিহ্ন বা কাটা দাগ ইত্যাদির মত । ভীতি, দুশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতার পাশাপাশি, এটির অন্যতম প্রধান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া। ব্রণ মূলত টিনএজ বা উঠতি বয়সের একটি ত্বকের সমস্যা। এ সময় শরীরে হরমোনের কারণে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে, সঙ্গে ত্বকও পরিবর্তিত হয়। হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই ব্রণের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। ছেলেদের ত্বকে ব্রণের আক্রমনটা একটু বেশি হয়। কারও কারও টিনএজ বয়স পেরিয়ে গেলেও এ সমস্যা অনেক দিন থেকে যায়।

কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়

কপাল জুড়ে ব্রণ সৌন্দর্যের হানি ঘটায়। বড় সমস্যা হল, কপালে ব্রণ হলে তা চট করে কমতেও চায় না। সেখান থেকে দেখা দেয় ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডসের মত সমস্যা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাঁদের তৈলাক্ত ত্বক, টি-জোন তৈলাক্ত, তাঁদের কপালে বেশি ব্রণ হয়ে থাকে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, মানসিক চাপ, ঘুম না হওয়া, সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন না নেওয়া কপালে ব্রণর সমস্যা বাড়িয়ে তোলতে পারে। তবে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, যার সাহায্যে আপনি কপালে ব্রণের সমস্যা সহজে দূর করতে পারেন। কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায় নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো।

১। টি ট্রি অয়েল

Tea Tree Oil

টি ট্রি অয়েলের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান আছে যা ব্রণের সমস্যা কমাতে এবং ত্বককে ভাল রাখতে কার্যকরী। টি ট্রি অয়েলের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ব্রণ উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল ১ চামচ আমন্ড অয়েল বা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে কপালে লাগিয়ে দিন। সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই কাজ করলে ব্রণর সমস্যা কমতে শুরু করবে।

২। পাতিলেবুর রস

Lemon Juice

লেবুর রসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি। এটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে কাজ উপকারী। মুখে লেবুর রস লাগালে ব্রণের সমস্যা কমে যায়। ৩ চামচ জলের সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। এই রসে তুলোর বল ডুবিয়ে নিয়ে মুখে লাগাতে হবে। ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। একদিন পর পর এই কাজ করলে ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। লেবুর জলও পান করতে পারেন।

৩। মধু

Honey

মধুর মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে যা ব্রণের সাথে যুদ্ধ করে। আপনি যে মধু ব্যবহার করবেন তা ভেষজ হওয়া প্রয়োজন। পরিমানমতো মধু নিয়ে কপালে মালিশ করুন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট এভাবেই রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এভাবে মুখে মধু মাখলে ব্রণের সমস্যা কমে যাবে।

৪। ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

Use Of Neem Leaves For Acne

নিম পাতা দিয়ে ব্রণ দূর করার সহজ উপায় রয়েছে। তাই ছেলেদের মুখের কালো দাগ ও কপালের ব্রণ দূর করা যায় নিম পাতা দিয়ে। এ জন্য অবশ্যই ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার আপনাকে জানতে হবে। নিম পাতা দিয়ে খুবই কার্যকরী কিছু প্যাক তৈরি করা যায়। যা কপালে লাগিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত কিছুদিন ব্যবহারের পর আপনার কপালের ব্রণ কমতে থাকবে।

৫। বেসন দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়

Ways To Remove Acne With Gram Flour

বেসনের সাথে মধু বা বেসনের সাথে নিম পাতা বা বেসনের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে পাক বানাতে পারেন। সেই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তবে বেসন দিয়ে ব্রণ দূর করার জন্য হুলুদ মিক্স করেও প্যাক বানানো যেতে পারে। এটি বেশ উপকারি।

৬। বরফ এর ব্যবহার

Use Of Ice

বরফ দিয়ে ব্রণের চিকিৎসা করা যায় সহজেই। বরফের ঠান্ডাভাব ব্রণ দূর করতে বেশি কার্যকরী।

  • প্রথমেই ত্বককে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • একটি বরফের টুকরোকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নিয়ে কয়েক মিনিট ব্রণের ওপর ধরে রাখতে হবে। বরফ সরাসরি ত্বকে লাগানো যাবে না।
  • পাঁচ মিনিট বিরতি দিয়ে পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন।

৭। ডিমের সাদা অংশ

Raw Egg

ডিমের ভিটামিন, এমাইনো এসিড, প্রোটিন কপালের ব্রণের সহজ সমাধান হতে পারে। তবে ব্রণ দূর করতে ডিমের সাদা অংশটুকুই শুধু ব্যবহার করবেন।

  • প্রথমেই মুখ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।
  • দুটি ডিমের সাদা অংশ বের করে নিন।
  • নরম ব্রাশ বা হাত দিয়ে ব্রণের মধ্যে ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে লাগিয়ে দিন।
  • পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে পুনরায় ডিমের সাদা অংশ আবার দিন।
  • কিছুক্ষণ রাখার পর মুখ ধুয়ে হালকা ধাঁচের মুখে ব্যবহারের যেকোনো ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।  

৮। পেঁপে

Papaya

পেঁপে কপালের ব্রণ দূর করার উপাদান হিসেবে ভালো কাজ করে। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করে এবং মুখের মৃত কোষ দূর করতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

  • পাঁচটি ছোট পেঁপের টুকরো ব্ল্যান্ড করে নিতে হবে।
  • পেঁপের এই পেস্ট ব্রণের ‍উপর লাগিয়ে দিন।
  • ৩০ মিনিট এভাবে রাখার পর পাসি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • ব্রণ না কমা পর্যন্ত নিয়মিত এটি ব্যবহার করুন।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায় এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল সমস্ত সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

ব্রণ কি কোন বড় রোগ?

মানুষের দেহের ভিতর থেকে সিবাম নামক এক ধরনের তৈলাক্ত রস বের হয়। যা লোমকূপ দিয়ে ত্বকে এসে তৈলাক্ত ভাব তৈরি করে থাকে। কিন্তু লোমকূপে থাকা ক্যারোটিন যদি বাইরের ধুলবালির সাথে মিশে যায় সেই লোমকূপ বন্ধ করে দেয়। যার কারনে সেই সিবাম আর বাইরে আসতে পারে না। ফলে লোমের গোঁড়ায় গুটি গুটি দানা বেধে নরম হয়। এটাকেই ব্রণ বলে। এটা কোন বড় রাগ নয়।

ব্রণ কি ছোঁয়াচে রোগ?

না, ব্রণ কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়।

উপসংহার

ত্বকের জন্য একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ব্রন। আর সেই ব্রণ যদি হয় কপালে তাহলে তো আরও সমস্যা। একদিকে সৌন্দর্যের হানি ঘটায় অন্যদিকে বিষন্নতা, লজ্জা ইত্যাদি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সারাদিন বাহিরে ধুলোলির ভেতরে থাকার কারণে বেশিরভাগ ছেলেদেরই কপালে ব্রনের সমস্যা দেখা যায়। ব্রন সাধারণত মুখেই বেশি হয় তবে কারো কারো কপালেও হতে পারে। আর এই ব্রনের কারণে চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য কমে যায়। কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায় ও চিকিৎসার ক্রিম এবং ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও ত্বকে ব্রণ সমস্যা থাকলে উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতি ও ডাক্তারি পরামর্শও অনুসরণ করা যেতে পারে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে না সম্পর্কে পড়তে পারেন।

কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায় এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *