Skip to content
Home » খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায়

খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায়

Easy Way To Get Rid Of Annoying Cough

খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় তাদের জানা প্রয়োজন যারা দীর্ঘদিন কাশির সমস্যায় ভুগেছেন। মৌসুম বদলের সময়ে খুসখুসে কাশি, গলা ব্যথা প্রায় দেখা যায়। এর বেশির ভাগই অ্যালার্জিজনিত করনে হয়ে থাকে। এসব খুসখুসে কাশি খুবই বিরক্তিকর ও অস্বস্তিকর। খুশখুশে কাশিতে সাধারণত কফ তৈরি হয় না, কফ বেরোয়ও না। শুকনো কাশির সাধারণ কারণের মধ্যে অ্যালার্জি ছাড়াও ভাইরাস সংক্রমণ, ক্রনিক ব্রংকাইটিস, পাকস্থলীর অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা গলায় উঠে আসা, হাঁপানি ইত্যাদি বিশেষভাবে দায়ী। 

সাধারণত ঠান্ডা ও ফ্লুয়ের কারণেেই কাশি হয়ে থাকে। অ্যালার্জি, অ্যাজমা, এসিড রিফ্লাক্স, শুষ্ক আবহাওয়া, ধূমপান, এমনকি কিছু ওষুধ সেবনের ফলেও শুকনো কাশির সমস্যা তৈরি হতে পারে। একটানা খুসখুসে কাশি বিরক্তিকর এবং অস্বস্থিকর। অনেক ক্ষেত্রে আবার কফ জমাট বেধে ভয়ংকর কাশিও হয়। একটু সচেতন হলে ওষুধ না খেয়েও এই খুসখুসে কাশি থেকেও রেহাই পাওয়া পাওয়া যেতে পারে। এজন্য খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় এর জন্য ঘরোয়া উপায় জানা জরুরী।

কাশি কি?

কাশি হচ্ছে শ্বাস প্রশ্বাসের বড় গমনপথগুলির মাধ্যমে হঠাৎ বাতাসকে বের করা যা সেখানকার তরল, উত্তেজক পদার্থ, বিদেশী কণা এবং জীবাণুগুলি পরিষ্কার করতে সহায়তা করে থাকে। প্রতিরক্ষামূলক অভিব্যক্তি হিসাবে, তিনটি পর্যায় অনুসরণ করে কাশির প্রতিফলনের পুনরাবৃত্তি হতে পারে: একটি শ্বসন, একটি বন্ধ গ্লোটিসের বিরুদ্ধে জোর করে প্রশ্বাস এবং গ্লোটিসের খোলার পরে ফুসফুস থেকে বাতাসের সজোরে মুক্তি, যেটি সাধারণত একটি স্বতন্ত্র শব্দ সহ হয়ে থাকে বলে ধারনা করা হয়। নানা কারনে কাশি হতে পারে। 

খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায়

খুসখুশে কাশি যেমন আমাদের বিভিন্ন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে তেমনি এক বিরক্তিকর পরিবেশ তৈরি করে। নিয়ম পালন করার পরেও একটা নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থা করে থাকে। তবে খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় জানা থাকলে অতি দ্রুত মুক্তি লাভ করা যেতে পারে। নিম্নে কিছু ঘরোয়া উপায় সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো।

১। আদা

Ginger

আদায় থাকে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এর উপাদান। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে ও বিভিন্ন প্রদাহ কমায়। শুকনো কাশি দূর করতে নিয়মিত পান করা যেতে পারে আদা চা। আধা চা চামচ আদার গুঁড়া এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন নিয়ম করে ৩ বার পান করতে পারেন। আদার অ্যান্টি ইনফ্লামেটরী উপাদান গলার অস্বস্তিকরভাব দূর করে থাকে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক কাপ আদা চা পান করলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। এক কাপ পানিতে আদা কুচি আদা দিয়ে দিনে ৩ থেকে ৪ বার পান করলে শুষ্ক কাশি কমে যেতে পারে।

২। গরম পানির ভাঁপ নেওয়া

Steaming Hot Water

খুসখুসে কাশির সমস্যা কমাতে নিয়মিত গরম পানির ভাব নেওয়া যেতে পারে। ফলে গলার শুকনোভাব কমার পাশিপাশি গলাব্যথা ও কাশির তীব্রতাও কমে যাবে। গরম পানিতে সামান্য টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে ভাঁপ নিলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে। প্রতিবার কমপক্ষে পাঁচ মিনিটের জন্য ভাঁপ নিতে হবে।

৩। লবণ পানি গার্গল

Salt Water Gargle

গলাব্যথা অথবা কাশির সমস্যা দূর করতে লবণ পানির গার্গল করারও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। লবণাক্ত পানি গ্রহণের ফলে গলার খুসখুসে ভাব কমে যায়। এজন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে গার্গল করা যেতে পারে। 

৪। মধু ও গরম জল

Honey And Hot Water

প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১ বছরের শিশু বা তার বেশি বয়সীদের জন্যও মধু বেশ উপকারী।  মধু শুকনো কাশি থেকে মুক্তি দিতে পারে। মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য আছে যা জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। 

  • দিনে নিয়ম করে কয়েকবার ১ চা চামচ মধু খেতে পারেন।
  • চা বা গরম জলে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।

৫। হলুদ ও গোলমরিচ

Turmeric And Pepper

হলুদে আছে কারকিউমিন, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যার কারণে এটি শুকনো কাশি-সহ অনেক পরিস্থিতিতে খুবই উপকারী। 

  • আপনি কমলার রসের সাথে ১ চা চামচ হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন
  • ১/৮ চা চামচ গোল মরিচ মিশিয়ে খেতে পারেন।

৬। ​ঘি ও গোলমরিচ

Ghee And Pepper

ঘি-তে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ আছে। এটি গলা নরম রাখতেো সাহায্য করে। গোলমরিচের গুঁড়োর সাথে ঘি মিশিয়ে খেলে শুকনো কাশিতে অনেকটাই উপকার পাওয়া যায়।

৭। বাসক পাতা

Bask Leaf

বাসক পাতা পানিতে সেদ্ধ করে, সেই পানি ছেঁকে নিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় খেলে খুসখুসে কাশি ভালো হয়। প্রতিদিন সকালে এই পানি খেতে হবে। বাসক পাতার রস প্রতিদিন সন্ধ্যায় খেলে ভালো হয়। ২ থেকে ৩ দিনেই এর খুব ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। 

৮।  তুলসী পাতা

Basil Leaves

তুলসী পাতা থেঁতো করে এতে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরী করা যেতে পারে। এই মিশ্রণটি প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার খেলে কাশি কমে যায়।

৯।  গরম দুধে হলুদের মিশ্রণ

Turmeric Mixture In Hot Milk

দুধকে গরম করে এর মধ্যে অল্প হলুদ মেশাতে হবে। এই হলুদ মিশ্রিত দুধ কাশি দূর করতে বেশ কার্যকরী। গরম দুধ আমাদের গলায় আরাম এনে দেয় আর হলুদ আমাদের সর্দি কাশি দূর করতে সাহায্য করে। কাজেই এই মিশ্রণটি খেলে আমরা দ্রুত খুসখুসে কাশি থেকে রেহাই পেতে পারি।

১০।  মেন্থল ক্যান্ডি

Menthol Candy

মেন্থল দিয়ে তৈরী ক্যান্ডি বা চকোলেট কাশির জন্য বেশ উপকারী। এসব ক্যান্ডি শক্ত কফ নরম করে গলা থেকে কফ গুলোকে বের করে ও কাশি কমাতে সাহায্য করে থাকে।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল সমস্ত সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

অতিরিক্ত কাশির জন্য কি ঔষধ খাওয়া যেতে পারে?

অ্যালকফ কফজেল নামক ট্যাবলেট (Alkof Cofgel Tablet) একটি নিবারন যা কাশির কারণে ব্যবহৃত হয়।

শুকনো কাশির সিরাপ কি?

ডেক্সট্রোমেথরফান অ্যান্টিটুসিভস (কাশি দমনকারী) নামক ওষুধের একটি গ্রুপের অন্তর্গত। এই ওষুধটি শুষ্ক, হ্যাকিং কাশি ভালো করতে কাজ করে। ফ্লু, সর্দি বা শ্বাস-প্রশ্বাসের জ্বালা-যন্ত্রণার কারণে কাশি নিয়ন্ত্রণে অল্প সময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।

উপসংহার

নানা কারণেই কাশি হয়ে থাকে। অনেক সময় ফুসফুসে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, যক্ষা ইত্যাদি কারণেও কাশি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে কাশি দীর্ঘদিন চলতেই থাকলে এবং বুকে ব্যথা হতে পারে। দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট সহ আরও নানা সমস্যা। এমন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আরও বিভিন্ন কারণে কাশি হয়। সাইনাস সমস্যায় নাকের প্রদাহের কারণে দীর্ঘস্থায়ী কাশিও হতে পারে। ধূমপানের কারণেও খুসখুসে কাশি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ওষুধ কোনই কাজে আসবে না যদি ধূমপান ত্যাগ না করা হয়। ধূমপায়ীদের স্মোকার  নামক কফ (smoker cough) হয়। তামাক শ্বাস ঝিল্লিকে ক্রমাগত আঘাত করে বলেই কাশি হয়। কাজেই যদি খুসখুসে কাশিতে আক্রান্ত হন তাহলে অবশ্যই ধূমপানকে পরিত্যাগ করতে হবে।

এছাড়াও কাশি হলে ঠান্ডা পানির পরিবর্তে চেষ্টা করুন কুসুম গরম পানি পান করার। কাশি হলে হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। এটা শরীরের ইন্দ্রিয় সমূহ থেকে কাশির জীবাণুগুলোকে বের করতে সাহায্য করে থাকে। উল্লেখিত খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় কাশি কমাতে দারুণ কার্যকরী। উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করার পরও যদি বহুদিন কাশি না কমে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায়” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *