Skip to content
Home » বারোমাসি আমের জাত সমূহ

বারোমাসি আমের জাত সমূহ

Your Paragraph Perennial Mango Varieties

বারোমাসি আমের জাত সমূহ অনেকেই জানতে চায়। আম নামটি শুনলে  আপনাদের মাথায় প্রথমেই চলে আসে  হলুদ  রসালো টকটকে একটি ফলের কথা। বৈশাখ মাসের শুরুতেই কাঁচা আমের স্বাদ তারপরে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত থাকে পাকা আমের স্বাদ কি মজা। আমরা সবাই জানি আম একটি মজাদার এবং রসালো ফল তাই আমরা প্রতিবছর মৌসুমি আম খেয়ে থাকি। বাংলাদেশের  সাধারণত  আম পাকে জৈষ্ঠ আষাঢ় মাসে, এই দুই মাসে বাংলাদেশের বাজারে প্রচুর পরিমাণ আম পাওয়া যায়। বাংলাদেশের সকল মানুষ জৈষ্ঠ আষাঢ় মাসে প্রচুর পরিমাণ আম খেয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির আম চাষ হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ মৌসুমি ফলের দেশ। সারা বছর নানা স্বাদ ও বর্ণের বিভিন্ন জাতের ফল জন্মায় এ দেশে। তবে দেশের মোট উৎপাদিত ফলের ৬০ শতাংশই বাজারে আসে মে-আগস্ট মাসে। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ বাকি আট মাসে বাজারে আসে। বর্তমানে দেশে ৭০ প্রজাতির ফলের চাষাবাদ হচ্ছে। এসব ফলের মধ্যে আম বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় ফল ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল।

বারোমাসি আম কি?

মৌসুমি ফল বা আম বলতে আমরা বুঝে থাকি বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে একবার যে ফল পাকে। বাংলাদেশ মৌসুমি ফলের দেশ। এমন কিছু ফল আছে যেগুলো মানুষ সারা বছর পেতে চায়। সেই চাহিদা থেকে যে সকল ফল সারা বছর বা বছরে তিনবার বা তার অধিক ফল প্রদান করে থাকে তাকেই বারো মাসি ফল বা আম বলে। বারো মাসি আমের নভেম্বর, ফেব্রুয়ারি ও মে মাসে গাছে মুকুল আসে এবং মার্চ-এপ্রিল, মে-জুন এবং জুলাই-আগস্ট মাসে ফল আহরণের উপযোগী হয়। আম হচ্ছে রসালো ও মিষ্টি একটি ফল, যা কেবল খেতেই অনন্য সুস্বাধু নয়, যার পুষ্টিগুণও অসীম, আমি নিশ্চিত সেটি বারো মাস খেতে চাইবেন সবাই। কিন্তু মৌসুমী আম তো আর সারাবছর পাওয়া যায় না। সেই চাহিদা থেকেই মূলত বারো মাসি আমের চাষ।

বারোমাসি আমের জাত সমূহ

আপনি কি বারোমাসি আমের জাত সমূহ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? বারো মাসি আম প্রায় সারাবছর পাওয়া যায়। বছরে তিন বা তার অধিক ফল দিলেও তার সরবরাহ প্রায় সারাবছর থাকে। তবে চলুন বারোমাসি আমের জাত সমূহ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক।

১।  থাই বারোমাসি আম কাটিমন – ১

প্রচুর মিষ্টি এবং আশ পরিমানে খুবই কম। এই জাতটি থাইল্যান্ড,ইন্দোনেশিয়া,মালয়েশিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এই জাতটি আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী। একই গাছে একসাথে মুকুল, ছোট, মাঝারি, বড় বিভিন্ন সাইজের পাকা আম থাকে বা যে কোন পর্যায়ের মুকুল অথবা আম একসাথেও থাকে। গাছে নতুন কুশি ছাড়লেই মুকুল আসে। এর কোন সিজন আর অফ সিজন নেই। সারাবছর চাষ হয়। এই জাতের আম কাঁচাখেতেও মিষ্টি , পাঁকলে প্রচুর মিষ্টি। আমের আটি তুলনামূলকভাবে দেশীয় জাতের চেয়ে ছোট। প্রত্যেকটি আমের গড় ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম। ৫ বছরের এক একটা গাছে দেড় থেকে দুই মনের বেশি আম ধরে। বছরে তিন বার ফল দেয়।

২। বারি আম-১১ 

বারি আম ১১ বারোমাসি জাতের আম। আমগুলো দেখতে গোলাকার । খোসা পাতলা হলেও, শাঁস রসালো, মোলায়েম ও আঁশবিহীন। আঁটি আকারে ছোট ও পাতলা। মজার বেপার হলো কাঁচা অবস্থায় কাঁচামিঠা আমের মত করে খাওয়া যাবে। অর্থাৎ সারা বছরই ফল দিয়ে থাকে। বছরে তিনবার ফল প্রদান করে থাকে। চাইলে আপনিও চাষ করতে পারেন বারোমাসি আম বারি-১১। নভেম্বর, ফেব্রুয়ারি ও মে মাসে গাছে মুকুল আসে এবং মার্চ-এপ্রিল, মে-জুন এবং জুলাই-আগস্ট মাসে ফল আহরণের উপযোগী হয়। এবং প্রতিটি আমের গড় ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম। মাঝারি উঁচু জমি এবং দোআঁশ মাটি বারি আম-১১ চাষের জন্য উপযোগী। বাংলাদেশের  সব এলাকায় চাষ উপযোগী। বারি আম-১১ বীজের বা কলমের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা যায়। বীজ থেকে চারা উৎপাদন করলে মাতৃগাছের মতো ফল পাওয়া যায় না। বছরে তিন বা তার অধিক ফল প্রদান করে থাকে।

৩। বারোমাসি আম স্যান্ডি

গাছগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই জাতের গাছগুলিতে প্রতিদিনই মুকুল আসে। একটি থোকায় একসাথে অনেকগুলো আম ধরে, আমের ভেতর আঁশ নেই বললেই চলে, খেতেও খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। এক একট আমের গড় ওজন হয় ৫০০ থেকে ৬৫০ গ্রাম। আমগুলোর চামড়া খুব পাতলা হলেও সেটিও অনেক মিষ্টি। আম পরিপক্ব হয়ে হলুদ রং হলে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে।  আমগুলো পরিপক্ব হতে ক্ষিরসাপাত ও গোপালভোগ আমের মত সময় নিয়ে থাকে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে বারোমাসি এই জাতের আমগুলো এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বছরে তিনের অধিক সময় ফল দিয়ে থাকে।

৪। গোল্ডেন ম্যাংগো 

বছরে তিনবার ফলন পাওয়া যায়। একটি পাকা আমের ওজন কম-বেশি ৩শ থেকে ৭০০ গ্রাম হয়ে থাকে। 

গাছের বয়স ৯ মাসের মধ্যেই গাছে মুকুল চলে আসে। ডাল থেকে কলম চারা তৈরি করা হয় তারপর সেই গাছ থেকে আবার কলম তৈরি করা হয়। তিন থেকে চারবার একই গাছে আম ধরে। এক ডালের আম শেষ না হতে আরেক ডালে আমের মুকুল চলে আসে। গোল্ডেন ম্যাংগো একটি ভিয়েতনামি বারোমাসি চারা। 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

বারোমাসি আমের জাত সমূহ এই বিষয়ে আপনাদের মনে বেশ কিছু পশ্ন থাকতে পারে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত সকল প্রশ্ন ও তার উত্তর।

বারোমাসি আম বলা হয় কেন?

যে আগুলো বছরে সারা বছর পাওয়া যায় তাই তাকে বারো মাসি আম বলা হয়। বছরে তিন বা তার অধিক চাষ হয়ে থাকে আর আমের সরবরাহ থাকে সারাবছর।

বারোমাসি জাতের আম চারা কি বাংলাদেশের সকল অঞ্চলেই চাষ হবে?

হ্যাঁ, বাংলাদেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই বারো মাসি জাতের আমের চাষ হয়। যে মাটিতে দেশীয় আম গাছ জন্ময় সেখানেই বারো মাসি আম গাছ বেড়ে উঠে। তবে খেয়াল রাখতে হবে জায়গাটি যেন নীচু না হয়ে যায় অর্থ্যাৎ বন্যার পানি উঠে না যায়।

উপসংহার

আম গাছ বাংলাদেশের জাতীয় গাছ এবং আম বিশ্বের তিনটি দেশের জাতীয় ফল। গুগল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আম উৎপাদনের শীর্ষ দেশ হচ্ছে ভারত বিশ্বের প্রায় 40% আম উৎপাদন হয়  ভারতে এবং ভারত ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, চীন, মেক্সিকো ,পাকিস্তান ও ব্রাজিল আম উৎপাদনে এগিয়ে। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের সুস্বাধু মিষ্টি আমের চাষ হয়ে থাকে। দেশের সকল অঞ্চলে আম চাষ হয় বিধায় সকলেই এই ফলটির সাথে পরিচিত। পুষ্টিগুনেও ভরপুর। তাই সবাই চায় যদি সারা বছর আম পাওয়া যেত। এই চাহিদা থেকেই মূলত বারো মাসি আমের চাষ উদ্ভাবন। তাই চাষীরা বারোমাসি আমের জাত সমূহ খুজেঁ বেড়ায় বিভিন্ন নার্সারিতে। 

বর্তমানে দেশে বারো মাসি আম চাষের গুরুত্ব অনেকগুন বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের বাজারে সাধারণত আম পাওয়া যায় জুলাই মাস পর্যন্ত। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর সুমিষ্ট আম শেষ হয়ে গেলে হয়তো আগস্ট পর্যন্ত আশ্বিনা আমের দেখা মেলে। ফলটির সুস্বাধু সবাইকে আকৃষ্ট করে সারাবছর খাওয়ার । এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে ফুলের নাম বাংলা ও ইংরেজী সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“বারোমাসি আমের জাত সমূহ” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *