Skip to content
Home » কিডনি রোগের ঔষধের নাম

কিডনি রোগের ঔষধের নাম

Name Of Medicine For Kidney Disease

কিডনি রোগের ঔষধের নাম তারাই জানতে চায় যারা কিডনি রোগে ভুগছে। কিডনি আমাদের দেহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আভ্যন্তরীণ অঙ্গের অন্যতম। কিডনির সাহায্য ছাড়া কারোর বেঁচে থাকা সম্ভব না। তাই, আমাদের শরীরের এত গুরুত্বপূর্ণ অংশের সুস্থতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য। কিডনি কে সুস্থ রাখতে হলে কিডনির মৌলিক সুরক্ষার জন্য কিছু নিয়ম পালন করতে হবে৷ শুধু নিয়ম পালন করলেই হবে না, যে কোন সমস্যার জন্য সমাধান করতে কিডনি রোগের ঔষধের নাম জানা আবশ্যক। 

বড় ধরণের সমস্যা না হলে কিডনির জন্য নির্দিষ্ট অর্থের ঔষধ বিদ্যমান। কিন্তু যে কোন ধরনের কিডনি সমস্যা সমাধানের জন্য কিডনি রোগের ঔষধের নাম অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। আজকের আর্টিকেলে কিডনি রোগের ঔষধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো আমরা।

কিডনির রোগ সমূহ কী কী?

কিডনি রোগের ঔষধের নাম জানতে হলে সবার আগে কিডনির রোগের নাম ও বিস্তারিত জানতে হবে। কিডনিতে সাধারণত আমাদের যে-ধরনের সমস্যা হয়, তার অধিকাংশ আমাদের নিজেদের অনিয়মের জন্য হয়। এই ধরনের রোগ গুলো থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব শুধুমাত্র আমাদের ব্যক্তিগত বদ অভ্যাস ত্যাগ করলেই। কিন্তু অনেক সময় আমরা বুঝতেও পারি না, কোন অভ্যাস কিভাবে আমাদের কিডনির ক্ষতি করছে। তবে অন্য কোনো কারণ বা বড়ো কোনো দূর্ঘটনা হলে সেটি ভিন্ন কথা। কিডনির কিছু বিশেষ রোগ সমূহ হচ্ছে, 

  • ক্রনিক কিডনি ডিসওর্ডার 
  • ক্রিটিক্যাল নেফ্রলজি
  • ডায়াবেটিস নেফ্রলজি
  • হাইপ্যারাক্সুলরিয়া
  • কিডনি স্টোন
  • গ্লোমেরুলার ডিসিস
  • পলিসিস্টিক কিডনি ডিসওর্ডার 
  • ইনহেরিটেড কিডনি ডিসওর্ডার 
  • কিডনি ফেইলার
  • পেড্রিয়াটিক কিডনি ডিসিস
  • রেনাল প্যারেন কাইমাল

উপরিউক্ত উল্লেখিত কিডনির যেকোনো সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কিডনি রোগের ঔষধের নাম জেনে নিতে হবে।

কিডনি রোগের ঔষধের নাম

কিডনি রোগের ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিৎ নয়। তবে অনেকেই কিডনি রোগের মেডিসিনের নাম জানতে চায়।  এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথি উভয় প্রকারের কিডনি রোগের ঔষধের নাম জানবো নিচের আলোচনায়। 

এপিস মেলিফিকা (Apis Mallifica) 

রোগীর প্রসাবে অ্যালবুমিন ও রক্তে রেনাল করপাসলের উপস্থিতি বিদ্যমান থাকলে এপিস মেলিফিকা ব্যবহৃত হয়। প্রসাবের পরিমাণ কম হওয়ার পাশাপাশি ঘাড়ে ও মাথায় ব্যথা থাকলে এই ঔষধ ডাক্তার নির্দেশ করে। এটি খুব তীব্র পর্যায়ে ব্যবহৃত না।

বেলাডোনা (Belladona)

কিডনির কটি দেশীয় সহ বিভিন্ন অংশে হালকা বা মাঝারি মানের ব্যাথার উপসর্গ হিসেবে ডালতার বেলাডোনা’র পরামর্শ দেন।

কোনাভ্যালারিয়া (Conavalleria)

 অনেক সময় হৃদপিণ্ডের বিভিন্ন সমস্যা হয়। ফলে হৃদপিণ্ড অকার্যকর হয়ে যেতে পারে সাময়িক। হৃদপিন্ডের এই অকার্যকর অবস্থা থেকে কিডনি তে দীর্ঘমেয়াদি “নেফ্রাইটিস” হতে পারে। নেফ্রাইটিসের জন্য কোনাভ্যালেরিয়া এক অব্যর্থ ঔষধ। 

ক্যান্থারিস (Cantharis)

নেফ্রাইটিস নিরাময়ের আরেকটা ঔষধ হচ্ছে ক্যান্থ্যারিস। শুধু নেফ্রাইটিসের জন্যই না, ডিফথেরিক কিডনির আরেকটি ঔষধ হচ্ছে ক্যান্থারিস। 

অরাম মুরিয়াটিকাম (Oram Muriaticum)

মরুবুসব্রাইটি নামক কিডনি রোগের পথ্য হিসবে ব্যবহৃত হয় অরাম মুরিয়াটিকাম। এর ফলে ভার্টিগো হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

আর্সেনিকাম (Arsenicum)

আর্সেনিকাম হচ্ছে কিডনির একাধিক রোগের অন্যতম সেরা ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত। যেকোনো পর্যায়ের রোগীর জন্য আর্সেনিকাম ফলপ্রসু হয়। রোগীর ত্বক ফ্যাকাশে, তৃষ্ণার্ত অনুভব ও ডয়েরিয়ার মতো সমস্যা সমাধানে আর্সেনিকামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পথ্যের বিকল্প নাই।

মাজুন কুন্দুর (Majun Kundur)

কিডনি রোগের চিকিৎসায় মাজুন কুন্দুর একটি অন্যন্য ভেষজ ঔষধ। মূত্রাধিক্য, মূত্রত্যাগের সমস্যার পাশাপাশি মূত্রথলি ও মূত্রনালীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে খুবই কার্যকরি একটা ঔষধ এটি। আবার স্নায়বিক দূর্বলতার ক্ষেত্রেও এটি কাজ করে। বীর্যস্খালন ও বিকলাঙ্গতা রোধ করতেও মাজুন কুন্দুর বেশ সমাদৃত। ধনিয়পাতা, কালোজিরা, রূমী, কুন্দুর, ডালিম ফুল, সিয়া জিরা, জৈন, বহেরা হরিতকী ও আমলার মতো ভেষজ গূণাবলি সমৃদ্ধ ভেসজ উপাদান থাকায় এটা অত্যন্ত শক্তিশালী। ২/১ চামচ করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

সূজার্ণ (Sujarno)

যৌন বাহিত রোগ গণেরিয়া ও মূত্রতন্ত্রের সমস্যা সূজার্ণ অব্যর্থ ঔষধ। গন্ধ বিরোজা, ছোলা, ঝিনুক ভষ্ম ও অন্যান্য উপাদান নির্দিষ্ট পরিমাণ যুক্ত সূজার্ণ। প্রসাবের জ্বালাপোড়া, কিডনির সমস্যা সহ শ্বেতপ্রদরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় সূজার্ণ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ১ টি করে ট্যাবলেট প্রতি ২ দিনে গ্রহণ করতে হয়। এটি সম্পুর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্তিয়া মুক্ত।

সেলভিন (Cellvin)

মূত্রাধিক্য, কিডনির শক্তি বৃদ্ধি, সাধারণ যৌন দূর্বলতা, শ্বেতপ্রদর উপশম ও শুক্রমেহ নিরাময় করতে সেলভিন ব্যবহৃত হয়। সালাজীত, লাল বামন, কুশতা খুবছুল হাদীদ, কুশতা কলয়ী, বাবলা গঁদ ও মুরগির ডিমের খোঁসা নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্যবহার হয় সেলভিনে। বিশেষজ্ঞ কিডনি ডাক্তাররা একটি করে ট্যাবলেট দুই বেলা খেতে পরামর্শ দেন সাধারণত। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

এ্যালকুলি (Alculi)

মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ সহ বিভিন্ন সমস্যা নিরাময়, কিডনি ও মূত্রথলীর বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি জ্বর ও লিভারের সমস্যায়ও এ্যালকুলি ব্যবহৃত হয়। এ্যালকুলির উপাদান সমূহের মধ্য আছে কাসনী মূল ও বীজ, মৌরী মূল ও বীজ, খরমুজ বীজ ও গক্ষুর কাঁটা ইত্যাদি নির্দিষ্ট পরিমাণে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন এই ঔষধ চিকিৎসার পরামর্শ নিয়ে দৈনিক ২-৪ বার ২-৪ চামচ করে সেবন করতে হবে। অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে ২-৪ বার ১-২ চামচ করে খাওয়ার নিয়ম।

সফূফ আমলা (Safoof Amla)

মূত্রথলির ক্ষত নিরাময়, সংক্রমণ রোধ, প্রসাবের ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কমানো, প্রোটেস্ট গ্রন্থির বৃদ্ধি রোধ করে কিডনির সুরক্ষার জন্য সফুফ আমলার কোনো বিকল্প নাই। আমলকী, বংশমোচন, ধনিয়া, নিশাদল, সোরা, রুগী ও খরমুজের খোলসের উপাদান দিয়ে এটি তৈরি। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে এই প্বার্শপ্রতিক্রিয়া বিহীন ঔষধ। 

পামেট (Pamet)

পামেট কিডনি রোগের ঔষধের জন্য একটি বিশ্বনন্দিত নাম। মূত্রনালীর সংক্রমণ কমানো, মূত্র স্বল্পতা ও মূত্ররোধ করে কিডনির শক্তি বৃদ্ধি ও বর্জ্য অপসারণ করতে পামেট একটি কার্যকরী ঔষধ। কিডনির প্রদাহ সমস্যার ও সমাধান করে পামেট। পামেটের উপাদান হচ্ছে সম্পুর্ণ টা ফুলের নির্যাস। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতি দৈনিক ১-২ টি ক্যাপসুল গ্রহণ করতে হয়। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

নিমুলেন্ট (Nimulent)

কিডনি রোগের ঔষধের নামে বিগত ৫০ বছরের ও বেশি সময় যাবৎ নিমুলেন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে। কিডনির সুরক্ষা, প্রদাহ, সংক্রমণ ও বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করতে নিমুলেন্ট ব্যবহৃত হয়। একিনাসি মূলের নির্যাস থেকে তৈরি হয় নিমুলেন্ট। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ১-২ টি ক্যাপসুল গ্রহন করতে হয়। এটি সম্পুর্ণ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া মুক্ত।

জাবীন (Jabeen)

কিডনি তে রক্ত পরিশোধন, প্রদাহজনিত সমস্যা, জ্বলাপোড়া সহ লিভারের সমস্যায় ও জাবীন কার্যকরী। কাসনীবীজ, জটামাংসী, রান্ধুনী বীজ, মৌরি সহ অন্যান্য উপাদান পরিমিত পরিমাণ ব্যবহারের ফলে জাবীন তৈরি হয়। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকা এই ঔষধ মাত্র ৩ চামচ করে সেবন করতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। 

অরেঞ্জিন (Orangine)

কিডনি রোগের ঔষধের তালিকায় অরেঞ্জিনের ভূমিকা অপরিসীম। প্রসাবে জ্বালা পোড়া, তৃষ্ণার সমস্যা, কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নয়ন, মূত্র তন্ত্রের অস্বাভাবিকতা ও পিত্তিথলির আধিক্য দূরীকরণে ক্ষেত্রে অরেঞ্জিন ঔষধ ব্যবহৃত হয়। অরেঞ্জিনের উপাদানগুলো হচ্ছে, কমলালেবুর রস, গোক্ষুর কাঁটা, মৌরি ও মৌরি ফুল, শাপলা ফুল ও অন্যান্য উপাদানের নির্দিষ্ট অংশ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২-৪ চামচ করে দৈনিক ২-৩ বার খাওয়া বাধ্যতামূলক। 

জওয়ারিশ যরুনী (Jawarish Zarooni)

মূত্রতন্ত্রের পাথর ও অসারতা উপশমে সবচেয়ে কার্যকরী এটি। তাছাড়াও বর্জ্য অপসারন, কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাথা নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। গাজর বীজ, জৈন, মৌরি, খরমুজ বীজ, জাফরান, পূনর্ণবা, শষার বীজ, করসফ মূল, লবঙ্গ, গোল মরিচ, এলাচি, দারুচিনি, আগর, যত্রীক, রুমী, দৈশি জৈনের মতো কার্যকর ভেষজ নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্যবহারের দ্বারা জওয়ারিশ উৎপন্ন হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দৈনিক ১-২ চামচ সেবন করলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে না।

উপরিউক্ত উল্লেখিত ঔষধ সমূহ ব্যতীত কিডনি রোগের ঔষধের তালিকা এর অন্তর্ভুক্ত আছে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। যেমন : Losartan, Amlodipine, Ramipril, Furosemide, Spironoactone, Calcium Acetate, Sevelamer Hydrochloride, Alfacalcidol, Erythropoetin, Iron ইত্যাদি।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তর সমূহ

কিডনি রোগের ঔষধের নাম এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

কিডনি রোগের জন্য এলোপ্যাথি নাকি হোমিওপ্যাথি কোনটি ভালো?

কিডনি রোগের ঔষধের তালিকা এর মধ্যে হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথি সমান ভাবে কার্যকরী। রোগীর ব্যক্তিগত মতাদর্শ ও শারিরীক অবস্থা অনুযায়ী সে যেকোনো টাইপের ঔষধ গ্রহণ করতে পারে।

কিডনি রোগের লক্ষ্মণ কী কী?

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রেনাল এলকোহল, শরীর ফুলে যাওয়া, প্রসাবে জ্বালাপোড়া, কোমর ব্যথা সহ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

উপসংহার

কিডনিরব সম্ভাব্য রোগ সমূহ ও কিডনি রোগের ঔষধের নাম আমরা উপরোক্ত আলোচনায় বিস্তারিত জেনেছি। আবার কিডনি রোগের লক্ষ্মণ সম্বন্ধেও অবগত হয়েছি। কিডনি আমাদের স্রষ্টা প্রদত্ত শরীরের একটি অপরিহার্য অঙ্গ ; যা ফিল্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয় শরীরে। আমাদের নিজেদের সুস্থ রাখতে হলে কিডনির যত্ন নিয়ে কিডনির সুরক্ষার পদ্ধতি অবলম্বনের কোনো বিকল্প নাই। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম সম্পর্কে পড়তে পারেন।

“কিডনি রোগের ঔষধের নাম” এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *