আম সম্পর্কে ১০ টি বাক্য যার জানা নেই সে হয়তো আম সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুব একটা জানেই না। আমের উপকারিতা, পরিচিতি কিংবা আম সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকছে আম সম্পর্কে ১০ টি বাক্য নিয়ে সাজানো লেখাটিতে। মূলত দক্ষিণ এশিয়ার আবিষ্কার এই আম। সেখান থেকেই সকলে আমের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে এবং ধীরে ধীরে তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ফল অ্যানাকার্ডিয়েসিয়েই ফল পরিবারে বিশেষ একটি ফল। যা অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বিভিন্ন প্রজাতি আকারে প্রকৃতি হতে সংগ্রহ করা যায়। আজও ভারতীয় অঞ্চলের কোথায় প্রথম দেখা গেছে এই আম সে-নিয়ে তর্কের ছড়াছড়ি থাকলেও, আমের স্বাদ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস করেনি কেউ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই মজাদার ফলের গুরুত্ব দেখার মতো। গ্রীষ্মকালে এই ফল সবচেয়ে বেশি হারে পাওয়া যায়। কাঁচা কিংবা পাকা যেকোনো অবস্থাতেই ফলটি খেতে দারুণ লাগে। এই ফলের স্বাদ তখনই বেড়ে যায় যখন এর সাহায্যে ভর্তা, জুস, সবজি কিংবা আঁচার বানিয়ে পরিবেশন করা যায়। বলে রাখা ভালো পুরো পৃথিবীতে আপনি প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম পাবেন৷ এই প্রজাতির পরিচিতি মিলবে আমের আকার, আকৃতি, মিষ্টতা, ত্বকের রঙ এবং ভেতরের ফলের বর্ণ পর্যবেক্ষণ করলে৷
আমের পরিচিতি কি?
৩৫-৪০ মিটার বা ১১৫-১৩০ ফিট লম্বা গাছে ধরা এই সুস্বাদু ফলের মূল বা মুকুল বের হয় ডালের ডগা থেকে। আর আম গাছের সৌন্দর্য নিয়ে যদি বলি সেক্ষেত্রে বলবো আমের কচি পাতার সৌন্দর্যের কথা। এই কচি পাতা দেখতে খানিকটা গাঢ় গোলাপি রংয়ের কিংবা গাঢ় পেঁয়াজ রং এর হয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষই আবার এই পাতা ভর্তা বানিয়ে খায়। অন্যদিকে এই ফলের বাহারি বৈশিষ্ট্য নিয়ে যদি আলোচনা করি সেক্ষেত্রে বলবো এর বাহ্যিক রূপের কথা। এই ফল জাতভেদে আপনি হলুদ, কমলা, লাল বা সবুজ রঙের পাবেন৷ আর একটি হৃষ্টপুষ্ট আম ওজনে ১৪০ গ্রামের মতো হয়ে থাকে। উৎপাদনের দিক দিয়ে এই ফল বীজের উপর নির্ভরশীল। অর্থ্যাৎ বীজ থেকেই এই গাছের জন্ম হয়। তবে গাছের কলম করেও এর নতুন চারা বের করা সম্ভব।
আম সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
মজার ব্যাপার হলো বেশ কয়েক হাজার বছর ধরে এই বাংলায় আমের চাষাবাদ চলে আসছে। ফলনের দিক দিয়ে যেকোনো উষ্ণ প্রধান জলবায়ুর অঞ্চল গুলোতে এই ফলের আধিপত্য বিস্তার করতে দেখা যায়। যার মাঝে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবেশও রয়েছে। এই দেশে প্রচুর পরিমাণে আমের উৎপাদন ঘটে। চলুন এই সুস্বাদু কিংবা জনপ্রিয় আম সম্পর্কে ১০ টি বাক্য জেনে নিই।
- বাংলাদেশে আমের জগতে বর্তমানে রাজত্ব করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিখ্যাত আম।
- এশিয়ার সবচেয়ে বড় আম বাজারের নাম হলো “কানসাট আম বাজার”। যার অবস্থান আমাদের বাংলাদেশেই।
- আম ভারতের জাতীয় ফলের স্বীকৃতি পেয়েছে।
- আমের ইংরেজি অর্থ অর্থ্যাৎ mango নামটি আবিষ্কার হয়েছে ১৫শ এবং ১৬শ শতাব্দীতে।
- আমাদের বাংলা ভাষায় থাকা আম শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘আম্র’ হতে।
- অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানে ভরপুর আম স্বাস্থ্যের জন্যে বেশ উপকারী একটি ফল।
- চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে আমাদের নিয়মিত আম খাওয়া উচিত।
- হজমের সমস্যা দূর করতে আমের জুড়ি মেলা ভার৷
- চাষাবাদে ভালো ফলন পেতে সুস্থ আমের বীজ ব্যবহার করা চাই।
- মূলত মে, জুন, জুলাই মাসে আমের মূল ফলন ঘরে তোলা যায়।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
আম সম্পর্কে ১০ টি বাক্য জানার পরও নিশ্চয় আরও কিছু প্রশ্ন হয়তো আপনার মনে উঁকি দিচ্ছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল প্রশ্ন এবং উত্তরসমূহ-
পাকা আমে কি কি ভিটামিন আছে?
পাকা আম ভিটামিন এ এর বেশ ভালো উৎস। এই ভিটামিন চোখ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ এর পাশাপাশি এতে রয়েছে ফাইবার এবং পানীয়। ফলে আম খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া শরীরের কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
আম বেশি খেলে কি হয়?
আম বেশি খেলে হজমশক্তি অনেক বেশি হারে সক্রিয়ভাবে কাজ করে। ফলে ডায়রিয়া দেখা দেয়। তাছাড়া সারাদিন অন্য কোনো খাবার না খেয়ে শুধু আম খেলে পেটে ব্যাথা দেখা দিতে পারে এবং শরীরে প্রচন্ড দূর্বলতা কাজ করতে পারে।
উপসংহার
আম খাওয়ার প্রতি আগ্রহ পাশাপাশি মাথায় রাখতে হবে ফল হিসাবে কেবল আমই আমাদের একমাত্র খাবার হয়ে উঠা উচিত নয়। কারণ আমে থাকা ক্যালোরির চাহিদা পূরণ করলেই আমাদের সুস্থতা নিশ্চিত হবে না। এর পাশাপাশি আমাদের গ্রহণ করতে হবে সুষম খাবার এবং জানতে হবে যেকোনো ফল সম্পর্কিত সকল সঠিক তথ্য। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে ১০টি বর্ষাকালীন সবজির নাম সম্পর্কে পড়তে পারেন।
‘আম সম্পর্কে ১০ টি বাক্য‘ নিশ্চয় আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আমাদের এই পোস্টটি আপনার কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।