Skip to content
Home » সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান

সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান

Sightseeing In Sajek Valley

সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান সমূহ পর্যটক মনে অনাবিল শান্তির এক স্পন্দন তৈরী করে। যদি কখনো সাজেক ভ্যালিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন তবে আপনাকে অভিনন্দন! প্রকৃতি যে কত বৈচিত্রময় তার কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন যখন সাজেক ভ্যালিতে যাবেন। তো বন্ধুরা, সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে সঠিক এবং পর্যাপ্ত জ্ঞান লাভের জন্য পোস্টটি পড়ে নিন।

সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান সমূহ

আমরা জানি ভ্রমণ প্রিয় মানুষ প্রকৃতি প্রেমী, আর প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য  বাংলাদেশের অন্যতম স্বর্গরাজ্য হচ্ছে সাজেক ভ্যালি। মেঘ আর সবুজ শ্যামলে ঘেরা সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান সমূহ ভ্রমণের জন্য সারাবছর অসংখ্য পর্যটক ভিড় জমায়। সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন, যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেক ভ্যালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ। সাদা মেঘের ভেলায় ঢাকা পাহাড়, সবুজ বনানী, ঝর্ণা, খাঁড়ি, নদী, গ্রাম্য জীবন, সবকিছুই পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়। 

রুইলুই পাড়া

Ruilui Neighborhood

রুইলুই পাড়া বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালির একটি ছোট গ্রাম। এটি সাজেকের প্রথম গ্রাম এবং সাজেকের প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত হয়। রুইলুই পাড়ায় লুসাই, পাংকুয়া, ত্রিপুরা প্রভৃতি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন বসবাস করে। রুইলুই পাড়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ। চারপাশে সবুজ পাহাড়, মেঘের ভেলায় ঢাকা পাহাড়, ঝর্ণা, নদী, সবকিছুই পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়। রুইলুই পাড়া থেকে সাজেকের বিস্তৃত প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

রুইলুই পাড়ায় থাকার জন্য রয়েছে বেশ কিছু রিসোর্ট, হোটেল এবং কটেজ। এছাড়াও, এখানে অনেক ছোট ছোট খাবারের দোকান রয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার থানচি থেকে সাজেকের দিকে যাওয়ার পথে রুইলুই পাড়া পড়ে। থানচি থেকে ওই স্থানের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। থানচি থেকে রুইলুই পাড়া যেতে বাস, সিএনজি অথবা মোটরসাইকেল ব্যবহার করা যায়। সাজেক ভ্যালির রুইলুই পাড়ায় যাওয়ার উত্তম সময় হলো বর্ষাকালে (জুন-আগস্ট) এবং শরৎকালে (সেপ্টেম্বর-অক্টবর)। এই সময় সাজেকের চারপাশের পাহাড় সাদা মেঘে ঢাকা থাকে, যা দেখতে অপূর্ব।

কংলাক পাড়া

Kanglak Neighborhood

বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালির একটি ছোট্ট গ্রাম হচ্ছে কংলাক পাড়া। এটি সাজেকের সর্বোচ্চ বিন্দু, যার উচ্চতা ১৮০০ ফুট। কংলাক পাড়া থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে অসাধারণ লাগে। কংলাক পাড়ায় লুসাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন বসবাস করে। এখানে একটি ঐতিহ্যবাহী লুসাই বাজার রয়েছে, যেখানে লুসাইদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প ও খাবার বিক্রি হয়ে থাকে। কংলাক পাড়ায় যাওয়ার জন্য রুইলুই পাড়া থেকে পায়ে হেঁটে বা মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে হয়। রুইলুই পাড়া থেকে কংলাক পাড়ার দূরত্ব প্রায় ২ কিলোমিটার।

কংলাক পাড়ায় যাওয়ার উত্তম সময় হলো বর্ষাকালে (জুন-আগস্ট) এবং শরৎকালে (সেপ্টেম্বর-অক্টবর)। এই সময় সাজেকের চারপাশের পাহাড় সাদা মেঘে ঢাকা থাকে, যা দেখতে অপূর্ব। কংলাক পাড়ার কিছু দর্শনীয় জিনিস হচ্ছে কংলাক পাহাড়: কংলাক পাহাড় থেকে সাজেকের বিস্তৃত প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। আর লুসাই বাজারে লুসাইদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প ও খাবার বিক্রি হয় এবং কংলাক পাড়া থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য অসাধারণ। কংলাক পাড়ায় থাকার জন্য রয়েছে বেশ কিছু রিসোর্ট, হোটেল এবং কটেজ। এছাড়াও, এখানে অনেক ছোট ছোট খাবারের দোকান রয়েছে।

হেলিপ্যাড

Helipad

বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালির একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান হচ্ছে সাজেক ভ্যালির হেলিপ্যাড। এই স্থানটি সত্যিই পর্যটকদের অনেক বেশি আকর্ষণ করে। এটি সাজেকের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং এখানে থেকে সাজেকের চারপাশের পাহাড়ি দৃশ্য দেখা যায়। সাজেক হেলিপ্যাডটি ২০১০ সালে নির্মাণ করা হয়। হেলিপ্যাড একটি ঘন সবুজ বনানীর মাঝে অবস্থিত এবং এর চারপাশের পাহাড় সাদা মেঘে ঢাকা থাকে, যা দেখতে অপূর্ব।

সাজেক হেলিপ্যাডে প্রতিদিনই অনেক পর্যটক আসেন। এখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা হয়। এছাড়াও, এখানে অনেক ছোট ছোট খাবারের দোকান রয়েছে। সাজেক হেলিপ্যাডে যাওয়ার জন্য থানচি থেকে সাজেকের দিকে যাওয়ার পথে রুইলুই পাড়ায় যেতে হয়। রুইলুই পাড়া থেকে হেলিপ্যাডের দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। রুইলুই পাড়া থেকে হেলিপ্যাডে যেতে বাস, সিএনজি অথবা মোটরসাইকেল ব্যবহার করা যায়।

স্টোন গার্ডেন

Stone Garden

স্টোন গার্ডেন বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালির একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান। এটি রুইলুই পাড়া থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্টোন গার্ডেনটিতে ছোট ছোট পাথরের স্তুপ রয়েছে, যা দেখতে অনেক সুন্দর। এই পাথরের স্তুপগুলো প্রকৃতিগতভাবেই তৈরি হয়েছে। স্টোন গার্ডেনে প্রতিদিনই অনেক পর্যটক আসেন  প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।

স্টোন গার্ডেনে যাওয়ার জন্য থানচি থেকে সাজেকের দিকে যাওয়ার পথে রুইলুই পাড়ায় যেতে হয়। রুইলুই পাড়া থেকে স্টোন গার্ডেনের দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। রুইলুই পাড়া থেকে স্টোন গার্ডেনে যেতে বাস, সিএনজি অথবা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে যাওয়া যায়।

লুসাই গ্রাম

Lusai Village

বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালিতে অবস্থিত লুসাই গ্রামকে প্রাকৃতিক গ্রাম বলা হয়ে থাকে। এটি সাজেক ভ্যালির একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র। এই গ্রামটি লুসাই জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য তৈরি করা হয়েছে। লুসাই গ্রামটিতে লুসাইদের ঐতিহ্যবাহী মাচাং ঘর, মন্দির, বাজার, এবং অন্যান্য স্থাপনা রয়েছে। এখানে লুসাইদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প ও খাবার বিক্রি হয়। লুসাই গ্রামে প্রতিদিনই অনেক পর্যটক আসেন। এখানে লুসাইদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়া যায়।

লুসাই গ্রামে যাওয়ার জন্য থানচি থেকে সাজেকের দিকে যাওয়ার পথে রুইলুই পাড়ায় যেতে হয়। রুইলুই পাড়া থেকে লুসাই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। রুইলুই পাড়া থেকে লুসাই গ্রামে যেতে বাস, সিএনজি অথবা মোটরসাইকেল ব্যবহার করা যায়। লুসাই গ্রামে থাকার জন্য রয়েছে বেশ কিছু রিসোর্ট, হোটেল এবং কটেজ। এছাড়াও, এখানে অনেক ছোট ছোট খাবারের দোকান রয়েছে। এছাড়াও, সাজেক ভ্যালিতে রয়েছে অনেক ছোট ছোট ঝর্ণা, খাঁড়ি, নদী, যা পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তর সমূহ

সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানার পরও নিশ্চয় আরও কিছু প্রশ্ন হয়তো আপনার মনে উঁকি দিচ্ছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল প্রশ্ন এবং উত্তরসমূহ-

সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত?

সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন, যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল।

সাজেক ভ্যালি কেন বিখ্যাত?

সাজেক ভ্যালিকে অনেকেই প্রাকৃতিক ভূ-স্বর্গ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। কেননা, প্রকৃতি এখানে সকাল থেকে বিকাল এবং প্রায় প্রতিটা সময়ই রঙ বদলায়। এই অপরূপ দৃশ্যের জন্যই সাজেক ভ্যালিকে বিখ্যাত বলা হয়।

উপসংহার

বাংলাদেশের সুন্দর জায়গাগুলোর মধ্যে সাজেক ভ্যালি অন্যতম। সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান সমূহ প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিগণিত হয়। বছরের কিছু সময়ে বিভিন্ন জায়গার ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা প্রতিনিয়ত সাজেক ভ্যালিতে বেড়াতে আসে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে খুলনার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে পড়তে পারেন।

প্রকৃতি রাজ্যের রস আস্বাদন করা ভ্রমণ প্রিয় মানুষের এক অন্যতম চাওয়া। আর এই চাওয়ার এক পরিসমাপ্তি ঘটে ‘সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান সমূহ‘ দেখার মধ্য দিয়ে।প্রিয় পাঠক, আপনাকে যখন কোন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হবে তখন কোথায় ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক তা আমাদেরকে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে ভুলবেন না কেমন! ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। আল্লাহ্ হাফেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *