শাপলা ফুল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য জানা থাকলে যেকোনো প্রতিযোগিতা কিংবা পরীক্ষায় টিকে থাকাটা বেশ সহজ হয়ে যায়। এটি এমন একটি ফুল, যার দেখা সহজেই গ্রামের বিল-ঝিল, পুকুর, ডোবা কিংবা জলাশয়ে পাওয়া যায়। সেকারণেই বোধহয় ফুলটিকে বাংলাদেশের জাতীয় ফুলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এই ধরণের ফুল সাধারণত এক একটি জলজ উদ্ভিদ হিসাবে ফুটে উঠে।
বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে শুর করে তাইওয়ান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে বাহারি ধরণের শাপলা ফুল ফুটে থাকে। সাধারণত উজ্জ্বল সবুজ রঙের গাছ থেকে জন্ম নেয়া অনেক কুঁড়িতে ভরপুর এই শাপলা ফুল। সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে যদি আমরা এই ফুলকে মাপি সেক্ষেত্রে বলতে পারি হালকা নীল রঙের এবং সুগন্ধিময় শাপলা ফুলই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শাপলা ফুল। যা বাংলাদেশে হরহামেশাই দেখা যায়। যদিও সাদা শাপলাই এই দেশে এমনকি পুরো এশিয়াতেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ফোটে থাকে।
শাপলা ফুল পরিচিতি কি?
আমাদের জাতীয়তার দিক দিয়ে শাপলা ফুল হলো বাংলাদেশের জাতীয় এবং সহজ প্রাপ্য ফুল। এই ফুল সাধারণত বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে এবং সাইজের দিক দিয়েও এই ফুলের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন হাওড়-বিল ও দিঘিতে এই ফুল জলজ উদ্ভিদ হিসাবেই ফোটে থাকে। সরু এবং চোখা পাঁপড়ির কারণে এই শাপলা ফুল দেখতে বেশ সুন্দর দেখায় ৷ বাংলাদেশে শাপলা ফুলের প্রাপ্যতা এতোটাই বেশি যে ধান ঘরে তোলার পর খালি জমিতে হালকা পানি জমে থাকলে সেখানেও ছোট ছোট শাপলা ফুল জন্মে থাকে। সাদা রঙের এসব মিনি শাপলা ফুল পুরো জমির সৌন্দর্যকেই হাজার গুণ বাড়িয়ে তোলে। আর যেসব এলাকাতে সবসময় বন্যা থাকে অর্থ্যাৎ সোজা বাংলায় বন্যা কবলিত এলাকাতে শাপলা ফুল সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ফুটে থাকে। সারাবিশ্বে আপাতত এখনো পর্যন্ত সর্বমোট ৩৫ টি প্রজাতির শাপলা ফুলের খোঁজ পাওয়া গেছে। প্রজাতি যাই হোক না কেন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই ফুলকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে। যেমন শালুক, অলাফুল কিংবা নীলকমল। নামের ধরণ দেখেই বোঝা যায় এই ফুল বাঙালির জাতীয় জীবনে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। বিশেষ করে এই গুরুত্ব বুঝতে আমরা এই দেশের বেশকিছু পয়সা, টাকা এবং দলিলপত্রের প্রতীকের দিকে নজর দিতে পারি।
শাপলা ফুল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
প্রায় ৩০০ খৃস্টপূর্ব পুরানো এই ফুল সম্পর্কে এমনকিছু তথ্য রয়েছে, যা হয়তো আমরা এখনো পর্যন্ত খুঁজেই পাইনি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতা কিংবা সরকারি পরীক্ষায় এগিয়ে থাকতে চাইলে এবং নিজের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে চলুন প্রায় ৩০০ খৃস্টপূর্ব পুরানো শাপলা ফুল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য জেনে নেওয়া যাক।
- বর্তমানে শাপলা ফুলের মাঝে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায় নীল শাপলা ফুল এবং সাদা শাপলা ফুল
- সবজি এবং ভর্তা হিসাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাপলা ফুলের জনপ্রিয়তা প্রায় দেখার মতো
- শাপলা ফুলের গর্ভাশয়ে থাকা গুড়ি গুড়ি বীজ বাংলাদেশে ভাজা খৈ এর ভিন্নরকম ভার্সন হিসাবে খাওয়া হয়
- ঔষধি গাছ হিসাবে শাপলা ফুলকে আম্বাল নামের আয়ুর্বেদিক ঔষুধ বানাতে ব্যবহার করা হয়
- শাপলা ফুলকে গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে ফুলটিকে ভালোমতো শুকিয়ে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে
- ইংরেজিতে শাপলা ফুলকে Water Lily, White Water Lily, White Lotus সহ বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে
- মূলত যেসব জলজ ফুল ভোরে ফুটে থাকে সেসব ফুলের মাঝে একটি হলো এই শাপলা ফুল
- বাংলাদেশে সাধারণত গোলাপী, সাদা, নীল, বেগুনি ইত্যাদি রঙের শাপলা ফুল পাওয়া যায়
- শাপলা ফুলের পাতা সাধারণত গোল গোল হয়ে থাকে
- বাংলাদেশের পয়সা, টাকা, দলিলপত্রে শাপলা ফুলের জলছাপ লক্ষ্য করা যায়
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
শাপলা ফুল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য জানার পরও নিশ্চয় আরও কিছু প্রশ্ন হয়তো আপনার মনে উঁকি দিচ্ছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল প্রশ্ন এবং উত্তরসমূহ-
শাপলা ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
শাপলা ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Nymphaea stellata বা Nymphaea nouchali। এসব শব্দের বাংলা উচ্চারণ হলো যথাক্রমে নিমফিয়া স্টেলাটা বা নিমফিয়া নোচালি। বাংলাতে শাপলাকে শাপলা ফুল হিসাবে চেনার পাশাপাশি অনেকে কুমুদ বা শালুক নামেও চেনে থাকে।
শাপলা ফুলের বৈশিষ্ট্যগুলি কি কি?
শাপলা ফুলের বৈশিষ্ট্যগুলি হলো এটি একটি জলজ উদ্ভিদ যা বিভিন্ন বিলে, পুকুরে কিংবা দিঘিতে ফোটে থাকে। এই ফুল জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ফুটে থাকে ৷ সারা বছর শাপলা ফুটতে দেখা গেলেও সবচেয়ে বেশি পরিমাণে এটি ফোটে বর্ষা ও শরৎকালে। সাধারণত গোলাপী, সাদা, নীল, বেগুনি ইত্যাদি রঙের শাপলা ফুল হয়ে থাকে ৷ বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাতে জাতীয় ফুল হিসাবে বেশ জনপ্রিয় এই শাপলা ৷ প্রায় ১৩-১৫ টি পাপড়ির এই সুন্দর ফুল পানিতে সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি খাদ্য তালিকাতেও বাড়তি স্বাদ যোগ করে থাকে ৷
উপসংহার
আমাদের উচিত শাপলা ফুল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য সম্পর্কে জানার পাশাপাশি জাতীয় খাতে এই ফুলের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। সবজি হিসাবে কিংবা বিকেলের নাস্তা হিসাবে এই শাপলা ফুলকে যে দারুণভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যা পরবর্তীতে শাপলা চাষের মাধ্যমে জাতীয় খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সাহায্য করবে। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে ১০ টি মাছের নাম পড়তে পারেন।
‘শাপলা ফুল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য‘ নিশ্চয় আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। যারা শাপলা ফুলের চাষ করতে চান তারা মনে রাখবেন, যেহেতু বর্ষা ও শরৎকালে এই ফুল সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ফুটে থাকে সেহেতু এই সময়টাতে বিলে কিংবা পুকুরে শাপলা বীজ ফেলে দিলে ভালো ফলণ পাওয়া যাবে। আমাদের এই পোস্টটি আপনার কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।