Skip to content
Home » ১০ টি মাছের নাম

১০ টি মাছের নাম

Name Of 10 Fishes

১০ টি মাছের নাম কেন আপনার জানা উচিত এবং এই মাছগুলো আমাদের জন্য কেন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তার বিস্তারিত আলোচনা হবে আজকে ইনশাআল্লাহ্। আপনি কি জানেন কোন মাছের মধ্যে অধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে, আর কোন মাছগুলোই বা আমাদের নিয়মিত খাওয়া উচিত? যদি না জেনে থাকেন তবে দুশ্চিন্তার কোন কারণে নেই। আমরা এখানে জনপ্রিয় ১০টি মাছের সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরছি। সুতরাং আপনার মনোযোগকে অন্যদিকে না দিয়ে ৫-৭ মিনিটের জন্য এখানে দিন। 

মাছ কি জাতীয় খাদ্য ?

আমাদের মধ্যে অনেকেই মাছ খেতে খুবই পছন্দ করি। আবার অনেকেরই মাছের প্রতি অনীহা লক্ষ্য করা যায়। তবে মাছ যেহেতু প্রোটিন জাতীয় খাবার তাই আমাদের আমিষের ঘাটতি পূরণ করার জন্য মাছ অবশ্যই খাওয়া উচিত। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, সামুদ্রিক মাছগুলো কিন্তু আরো বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।

১০ টি মাছের নাম

আমরা কিন্তু মাছে ভাতে বাঙ্গালী। জনপ্রিয় এই কথাকে সামনে নিয়ে আজকে আমরা ১০ টি মাছের নাম জানতে চলেছি…। শুধু কি নামই জানবো? না, নামের সাথে সেগুলোর পুষ্টিগুণ নিয়েও জানার চেষ্টা করবো। 

১. ইলিশ

১০ টি মাছের নাম এর মধ্যে একমাত্র ইলিশই আমাদের জাতীয় মাছ যার বৈজ্ঞানিক নাম Tenualosa ilisha। ইলিশ মাছ হলো এক ধরনের সামুদ্রিক মাছ। এই মাছটি খেতে খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। সেই সাথে এটিতে প্রোটিনের পরিমাণ খুব বেশি। ইলিশ মাছ বিভিন্নভাবে রান্না করা যায়। যেমন, ভাজা, পোস্ত মাখা, চচ্চড়ি, ঝোল, কাটলেট, মাছ কাটালি, পাতুরি ইত্যাদিভাবে রান্না করা যায়। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, এই মাছটি বাংলাদেশের মানুষের খুবই পছন্দের একটি খাদ্য। ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ এর মধ্যে, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়ামসহ আরো অনেক উপাদান রয়েছে। 

২. রুই

আপনি হয়তো মিঠা পানির নাম শুনে থাকবেন। এই মিঠা পানির মাছ হচ্ছে রুই। এটি বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় মাছ। রুই মাছ খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর হয়ে থাকে। এটিতে প্রোটিনের পরিমাণ খুব বেশি। ইলিশ মাছের মত রুই মাছকেও বিভিন্নভাবে রান্না করা যায়। ভেজে কিংবা ঝোল পাকিয়ে আমরা রুই মাছ রান্না করে থাকি। 

পুষ্টিগুণ হিসেবে রুই মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, ওমেগা- ৩ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন এ এবং প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে। এগুলো আমদের শরীর গঠন এবং একইসাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।

৩. কাতল

cut off

কাতল মাছ মিঠা পানির মাছ এবং এই মাছটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাছ। কাতল মাছ খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকায় এই মাছটি আমাদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর পুষ্টিগুণের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-এ ‍বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। হার্টকে সুস্থ্য রাখতে এবং দৃষ্টি শক্তির উন্নতির জন্য অনেকেই নিয়মিত কাতল মাছ খেয়ে থাকে।

৪. মাগুর

Magur

রুই এবং কাতল মাছের মত মাগুর মাছও কিন্তু মিঠা পানির মাছ। এটি বাংলাদেশের সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় একটি মাছ। পুষ্টি উপাদানের মধ্যে প্রতি ১০০ গ্রাম মাগুর মাছে প্রায় ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে। অন্যান্য উপাদান, ওমেগা-৩, ভিটামিন-এ পাওয়া যায়। হাড় মজবুত, দৃষ্টিশক্তির উন্নতি এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই মাছের জুড়ি মেলা ভার।

৫. বোয়াল

বাংলাদেশের জনপ্রিয় মাছ বোয়াল কিন্তু একটি শক্তিশালী মাছ। বোয়াল মাছ খেতে খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর হয়ে থাকে। প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর ভিটামিন থাকায় প্রায় সবারই পছন্দের একটি মাছের নাম হচ্ছে বোয়াল। হাড় ও দাঁতের গড়নে বোয়াল মাছ অত্যন্ত কার্যকরী। সেই সাথে এই মাছ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

৬. টেংরা

টেংরা মাছ একটি ছোট, লম্বাটে মাছ যা দক্ষিণ এশিয়ার নদী, খাল এবং হ্রদে বাস করে। টেংরা প্রায় সকলেরই জনপ্রিয় একটি খাদ্য। টেংরা মাছ কিন্তু আমিষের অন্যতম একটি উৎস। এই মাছ খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমতে পারে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। আবার এই মাছটি আমাদের দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতেও বিশেষ উপকারে লাগে। পুষ্টিগুণের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন অন্যতম।

টেংরা মাছ প্রোটিনের একটি ভাল উৎস, এতে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে। ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে, রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ টেংরা মাছকে একটি পুষ্টিকর খাদ্য করে তোলে।

৭. পাঙ্গাস

পাঙ্গাস মাছ (Pangasius hypophthalmus) হলো একটি বড়, সাদা মাছ যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায়। খুবই জনপ্রিয় মাছ এবং বিশ্বব্যাপী রপ্তানি করা একটি মাছের নাম হচ্ছে পাঙ্গাস। পাঙ্গাস মাছে প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। পাঙ্গাস মাছের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি প্রোটিনের একটি ভাল উৎস। আর আমরা জানি প্রোটিন শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কোষ, পেশী এবং টিস্যু গঠন করে। সেই সাথে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। পাঙ্গাস মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের হাড় গঠনে ভূমিকা রাখে। 

৮. পুঁটি

পুঁটি মাছ হলো বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ছোট মাছ। এই মাছ মিঠা পানির মাছ যা বাংলাদেশের নদী, খাল, বিল এবং পুকুরে পাওয়া যায়। পুঁটি মাছে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। এর মধ্যে থাকা প্রোটিন আমাদের শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে বিশেষ কাজে লাগে। আবার ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের হাড় গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও পুঁটি মাছের মধ্যে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড হার্টকে সুস্থ্য রাখতে সহায়তা করে।

৯. সরপুঁটি

সরপুঁটি বা সরনা পুঁটি বা সরাল পুঁটি বা কুর্টি (বৈজ্ঞানিক নাম: Puntius sarana) (ইংরেজি: Olive barb) হচ্ছে Cyprinidae পরিবারের Puntius গণের একটি স্বাদুপানির মাছ। সরপুঁটি মাছের দেহ লম্বা ও চ্যাপ্টা। মাথা ছোট। মুখ অবতল। চোখ বড়। মুখের সামনের দুইপাশে দুটি লম্বা ও পাতলা টানযুক্ত স্পর্শকাঠি থাকে। দেহের রঙ ধূসর-সবুজ। দেহে অসংখ্য ছোট ছোট কালো দাগ থাকে। দেহের পাশে ৫-৬টি গাঢ় বাদামী রেখা থাকে। পেট সাদা। বাহ্ কত্ত্বগুলো বৈশিষ্ট্য!

সরপুঁটি মাছ সাধারণত ১০-১৫ সেমি দৈর্ঘ্য ও ১০০-২০০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু মাছ ৩০ সেমি দৈর্ঘ্য ও ৫০০ গ্রাম ওজনেরও হয়ে থাকে। সরপুঁটি মাছ স্বাদুপানির মাছ। এরা ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও চীনে পাওয়া যায়। এরা সাধারণত নদী, খাল, বিল, পুকুর ও জলাশয়ে বাস করে। খাদ্য সরপুঁটি মাছ সর্বভুক। এরা ছোট ছোট পোকামাকড়, কৃমি, জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী খায়। সরপুঁটি মাছ প্রজনন মৌসুমে জলের স্রোতস্বিনীতে জড়ো হয়। স্ত্রী মাছ পাথরের উপর ডিম পাড়ে। ডিম থেকে ১-২ দিনের মধ্যে পোনা বের হয়। পোনা প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়ে বড় হয়।

১০. কৈ

কৈ মাছ হলো একটি স্বাদুপানির মাছ। এটি Anabas testudineus গণের অন্তর্গত একটি মাছ। এটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও চীনে পাওয়া যায়। কৈ মাছ সাধারণত 10-15 সেমি দৈর্ঘ্য ও 100-200 গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু মাছ 30 সেমি দৈর্ঘ্য ও 500 গ্রাম ওজনেরও হয়ে থাকে। কৈ মাছের দেহ লম্বা, চ্যাপ্টা ও আঁশযুক্ত। মাথা ছোট ও মুখ অবতল। চোখ বড়। দেহের রঙ ধূসর-সবুজ বা বাদামী। দেহে অসংখ্য ছোট ছোট কালো দাগ থাকে। দেহের পাশে 5-6টি গাঢ় বাদামী রেখা থাকে। পেট সাদা।

কৈ মাছ সর্বভুক। এরা ছোট ছোট পোকামাকড়, কৃমি, জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী খায়। এই মাছ সাধারণত নদী, খাল, বিল, পুকুর ও জলাশয়ে বাস করে। এরা সাধারণত জলের তলদেশে বাস করে। তবে এরা অক্সিজেনের অভাবে 24 ঘন্টা পর্যন্ত বাতাসে বেঁচে থাকতে পারে। আবার কৈ মাছ কিন্তু একটি সুস্বাদু মাছ। এই মাছকে সাধারণত ভাজা, পোলাও, মাছের ঝোল, মাছের কালিয়া ইত্যাদিভাবে রান্না করে খাওয়া হয়।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তর সমূহ

মাছ খেতে ভালোবাসে না এমন পাবলিক হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমরা অনেকেই এই মাছগুলোর নাম এবং পুষ্টিগুন সম্পর্কে জানি না যা জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। 

১০ টি মাছের নাম এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তরসমূহ- 

পৃথিবীতে মাছের কতটি প্রজাতি রয়েছে?

পৃথিবীতে প্রায় ৩০,০০০ প্রজাতির মাছ রয়েছে। এরা মহাসাগর, নদী, হ্রদ, পুকুর, জলাশয় এবং ঝর্ণা ইত্যাদিতে বাস করে।

সামুদ্রিক মাছের বৈজ্ঞানিক নাম কি?

সামুদ্রিক মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো “Osteichthyes”। এটি মেরুদণ্ডী প্রাণীর একটি শ্রেণি, যাদের অস্থিযুক্ত হাড় রয়েছে। সামুদ্রিক মাছ সমুদ্র, মহাসাগর এবং নদীতে বাস করে।

উপসংহার

আমাদের আলোচনার বাইরে আপনি যদি নতুন কোন তথ্য জেনে থাকেন আমাদেরকে জানাতে ভুলবেন না কেমন! ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন আর বেশি বেশি মাছ খান। নিজের ক্যালসিয়াম এবং পুষ্টিগুণ বাড়ান। এছাড়াও আপনার জ্ঞানকে প্রসারিত করতে পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য পড়তে পারেন।

১০ টি মাছের নাম‘ সম্পর্কে আপনি নিশ্চয় ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আমাদের এই পোস্টটি আপনার কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *