Skip to content
Home » শব্দ দূষণের ১০টি কারণ

শব্দ দূষণের ১০টি কারণ

10 Causes Of Noise Pollution

শব্দ দূষণের ১০টি কারণ জানা আমাদের সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব। সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য যেমন পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন তেমনি সুস্থ পরিবেশও গড়ে তোলে সুন্দর ভবিষ্যৎ। শব্দ দূষণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এক চরম কষ্টদায়ক অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে শব্দ শুনলেই মনে হবে আপনার শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তিতে বাঁধা প্রদান করছে ঐটাই শব্দ দূষণের জন্য দায়ী। প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের শব্দ হয়ে থাকে। কোনোটা ক্ষীণ আবার কোনটা পরিবেশ নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। একটি সুস্থ পরিবেশে গড়ে উঠে আগামীর সুন্দর প্রজন্ম। মুলত এই পোষ্টটি শব্দ দূষণের জন্য যে দশটি কারণ বিশেষ ভাবে দায়ী সেটা সম্পর্কেই আলোকপাত করা হয়েছে। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনি অবশ্যই উপকৃত হবেন আসুন শুরু করা যাক।

শব্দ দূষণ সম্পর্কে কিছু তথ্য

একটি সুস্থ মানুষের স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার জন্য বা দৈনন্দিন কাজকর্ম করার জন্য যতটুকু শব্দের আওতায় থাকা প্রয়োজন। তার অতিরিক্ত শব্দ যদি দেহের ও মনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, ধরে নেওয়া যায় সেটাই শব্দ দূষণ। কিংবা আরো ভালো করে বলা যায় মানব জাতির কাছে যে শব্দ সহ্য সীমা অতিক্রম করে সেটাই শব্দ দূষণ। এ সকল শব্দ গুলো হতে পারে তীক্ষ্ণ,কর্কশ, জোরালো, অস্বস্তিকর ও শ্রবণশীলতার বাইরে।

শব্দকে কিন্তু বিজ্ঞানের ভাষায় শক্তি রূপ দেওয়া হয়েছে। মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয় সার্বক্ষণিক সক্রিয় থাকে। শব্দ শ্রবণের জন্য মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে কর্ণ বা কান কতটুকু তীব্রতা গ্রহণ করতে পারে তার একটি পরিধি আছে‌। শব্দের ধ্বনি আমাদের কর্ণ গুহরের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে মস্তিষ্কে জানান দেয়। যেকোনো ধরনের শব্দ শক্তির প্রভাব মস্তিষ্ক গ্রহণ করার পর তা আপনার সর্ব শরীরে তা ছড়িয়ে পড়ে।

১-৭৫ ডেসিবলের বেশি শব্দ মানুষের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত। এর চেয়ে বেশি মাত্রার শব্দ মানুষের স্বাভাবিক জীবন ধারণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সবকিছু পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, মানুষের শ্রবণশক্তির অতিরিক্ত কোন শব্দ ধারণ শব্দ দূষণের আওতায় পড়ে।

শব্দ দূষণের ১০টি কারণ

আমাদের চারপাশে প্রতিদিন হাজারো শব্দের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট শব্দের চেয়ে মানুষের তৈরি সৃষ্ট শব্দের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। শব্দ দূষণের ১০টি কারণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আসুন তাহলে একে একে জেনে নেওয়া যাক কি কারণে আমাদের আজকে এতো প্রতিবন্ধকতা ।

  1. যানবাহন: বাস, ট্রাক, ট্রেন, জাহাজ, লঞ্চ, স্টিমার ইত্যাদি যেকোনো ইঞ্জিন চালিত যানবাহনের অতিরিক্ত শব্দের ফলে শব্দ দূষণ হয়। তাছাড়া এগুলোর বিরামহীন হর্ন বাজানো পরিবেশের শব্দ দূষিত করে। এগুলো তো গেল স্থল এবং জলপথের যানবাহনের কথা। আকাশে চালিত জেড বিমান, সাধারণ বিমান, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান ইত্যাদি তীব্র গতি সম্পন্ন বাহনের প্রচন্ড আওয়াজ শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ।
  2. কল- কারখানা: অধিকাংশ কলকারখানাতে যে সকল যন্ত্রপাতি/মেশিন ব্যবহার করা হয়। কলকারখানা থেকে নির্গত অতিরিক্ত বিকট শব্দের কারণে এখানকার পরিবেশ শব্দ দূষণের কবলে থাকে। সার কারখানা,ছাপাখানা,পাথরভাঙা কারখানার মেশিনের শব্দ, শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের মেশিনের শব্দ, পন্য উৎপাদনশীল কারখানার মেশিনের শব্দ পরিবেশের শব্দ দূষণ ঘটায়।
  3. বাদ্যযন্ত্রের ও গান বাজনা: মাইক,বিয়ে বাড়ীতে ও গানবাজনার অনুষ্ঠানে উচ্চ ভলিয়মে বাজানো বক্স ও ড্রামের আওয়াজ, রেডিও সব কিছু পরিবেশের শব্দ দূষণকারী।
  4. দালান কোঠা নির্মাণ: দালান কোঠা নির্মাণের সময় ইট ভাঙ্গা মেশিনের শব্দ, নির্মাণ সামগ্রী প্রস্তুত করা মেশিনের শব্দ, পাইলিং করা মেশিনের বিকট শব্দের কারণে শব্দ দূষণ ছড়িয়ে পড়ে।
  5. মেঘের গর্জন: ঝড়, বৃষ্টি এবং মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে কখনো কখনো অতিরিক্ত মেঘের গর্জন ও বজ্রপাত ঘটে যেটা পরিবেশের শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ।
  6. যুদ্ধের সরঞ্জাম ও সাইরেনের শব্দ: এম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস এবং যুদ্ধের সময় বাজানো বিকট শব্দের সাইরেন শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ। গ্রেনেড বিস্ফোরণ, গোলাবারুদ নিক্ষেপ, বোমা বিস্ফোরণে প্রচন্ড জোরালো শব্দের কারণে পরিবেশ শব্দ দূষণ করে।
  7. পশু-পাখির আওয়াজ: বাঘ ও সিংহের গর্জন, কুকুরের ঘেউ ঘেউ, কাকের কা কা এই ধরনের কর্কশ শব্দের পশু পাখির আওয়াজ শব্দ দূষণ করে।
  8. ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ: ভূমিকম্পের ফলে যে কম্পনের সৃষ্টি হয় এবং আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত এর ফলে যে বিস্ফোরণ ঘটে তাতেও পরিবেশ শব্দ দূষণ করে।
  9. সামাজিক অনুষ্ঠান: গায়ে হলুদ ও বিয়ে, পার্টিতে বাজানো জোরালো গানের সাথে নাচ, সামাজিক অনুষ্ঠানে শোরগোল সবকিছুই শব্দ দূষণ করে।
  10. জনসমাবেশ: মিছিল, মিটিং, রাজনৈতিক সমাবেশ, জনসভা, বাজার,হাটে জন সমাবেশ শব্দ দূষণ ঘটায়।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

শব্দ দূষণের ১০টি কারণ জানার পরও নিশ্চয় আরও কিছু প্রশ্ন হয়তো আপনার মনে উঁকি দিচ্ছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক প্রশ্ন এবং উত্তরসমূহ-

কি করে শব্দ দূষণের প্রতিকার করা যায়?

যে সকল কারণ গুলোর জন্য শব্দ দূষণ হয়ে থাকে তা যথাসাধ্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে।

শব্দ দূষণের ফলে কি প্রভাব পড়তে পারে?

অস্থায়ী বা স্থায়ী যে কোনো ধরনের শব্দ দূষণের ফলে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির উপর প্রভাব ফেলে।

শব্দ দূষণের ফলাফল কি?

শব্দ দূষণের ফলে পরিবেশ দূষণ ছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা শ্বাসকষ্ট, বধিরতা, খিটখিটে মেজাজ, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি আরও নানা ধরনের জটিল রোগের সম্মুখীন হতে পারে।

উপসংহার

এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনার পরিবেশের শব্দ দূষনের ১০ টি কারণ সুনিপুণভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছি। আপনার চারপাশে ছড়িয়ে থাকা শব্দের মাত্রা কতটুকু আপনার সহনশীল হতে পারে তার একটি সমক্য ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। শব্দ দূষণ পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার তাগিদে সকলেরই উচিত শব্দ দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা। শব্দ দূষনের সৃষ্ট কারণগুলো সনাক্ত করে তা প্রতিরোধ করার জন্য সকলেরই এগিয়ে আসা নৈতিক দায়িত্ব। এছাড়াও চাকরি কিংবা স্কুলের পরীক্ষার প্রস্তুতি আরোও শক্তিশালী করতে আপনি পানি দূষণের ১০টি কারণ আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

“শব্দ দূষণের ১০টি কারণ” এই বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্ট-টি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *