Skip to content
Home » ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থান

ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থান

10 Places To Visit In Dhaka

ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থান গুলো আপনার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঘুরে দেখতে পারেন যদি আপনি ঢাকাবাসী হন কিংবা ঢাকার আশাপাশে হয়ে থাকেন। ছুটির দিনে বাসায় অবসরে সময় কাটাচ্ছেন, অন্যন্য দিনের ব্যাস্ততার একঘেয়েমি দূর করতে পরিবার নিয়ে কোথাও ঘুরে আসাটা কিন্তু মন্দ নয়। মানসিক প্রশান্তির জন্য মাঝে মাঝে কিছু সময়ের জন্য ঘুরে বেড়ানো প্রয়োজন। পরিবারের সবাই একসাথে ঘুরে বেড়ানোর মজাটাই আলাদা। আজকের এই পোস্টটি ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থানগুলো নিয়ে সাজানো হয়েছে। তাই আজকের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।

ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থান

বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলা থেকে প্রতিবছর অনেক লোক ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে আসে। ঢাকার বাহিরে যারা বসবাস করে তারা অনেকেই জানে না ঢাকার কোথায় কোথায় দর্শনীয় স্থান আছে। তাই অনেকেই ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলো সন্ধান করে থাকেন। আর যদি আপনি ঢাকায় কিংবা ঢাকার আশেপাশের এলাকায় বসবাস করে থাকেন তবে আপনার অবশ্যই ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থান গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই তথ্যবহুল তাই এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন।

১। শ্যামপুর ইকো পার্ক

ঢাকার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হলো শ্যামপুর ইকো পার্ক। এটি ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। বুড়িগঙ্গা নদীর অভন্তরীন নৌ-পরিবাহন কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালে এই পার্কটি নির্মাণ করেন। যদি ঢাকার মধ্য পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তবে নিঃসন্দেহে আপনি শ্যামপুর ইকো পার্কে বেড়াতে আসতে পারেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের রাইড আছে। এখানে প্রায় ২৪ টির মত রাইড আছে। এছাড়াও বিশাল বাগান, নদীর তীরবর্তী নৌঘাট, 9D সিনেমা, ফুড কোর্টসহ আরও অনেক সুব্যবস্থা রয়েছে। শ্যামপুর ইকো পার্ক এর প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি মাত্র ৩০ টাকা। এছাড়াও রাইড উপভোগ করতে চাইলে রাইড ভেদে ৩০-১০০ টাকা জনপ্রতি খরচ হবে। শ্যামপুর ইকো পার্ক প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

২। চন্দ্রিমা উদ্যান

চন্দ্রিমা উদ্যান ঢাকার মধ্য ঘুরে বেড়ানোর জন্য একটি ভালো দর্শনীয় স্থান। এটি ঢাকার প্রাণকেন্দ্র সংসদ ভবনের পাশে অবস্থিত। ক্রিসেন্ট লেক এর পাশেই রয়েছে চন্দ্রিমা উদ্যান-টি। ১৯৮১ সালের আগে উদ্যানটিতে গবাদি পশু এবং চাষাবাদের জন্য ব্যবহৃত হত। পরবর্তীতে মরহুম জিয়াউর রহমানের সমাধি থাকায় এলাকাটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হয়। প্রায় ৭৪ একর জায়গা নিয়ে মরহুম জিয়াউর রহমানের সমাধি , ঝুলন্ত সেতু, মেমোরিয়াল হল এবং মসজিদ। চন্দ্রিমা উদ্যানের মূল আকর্ষণ হচ্ছে ক্রিসেন্ট লেক এবং ফোয়ারা। চন্দ্রিমা উদ্যান সকলের জন্য উন্মুক্ত।

৩। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর

ঢাকার বেড়ানোর আদর্শ দর্শনীয় স্থান হলো বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি বর্তমানে তার স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় এই বাড়িতেই। বাড়িটিতে রয়েছে তার সারা জীবনের বিভিন্ন দূর্লভ ছবি এবং তার শেষ সময়ের অনেক স্মৃতি। বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং তার পরিবারের নানা স্মৃতি রয়েছে। ১৯৯৭ সালে এই বাড়িটিকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়। বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার, সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত জাদুঘরটি খোলা থাকে।

৪। আহসান মঞ্জিল

ঢাকার বহুল জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান হলো আহসান মঞ্জিল। ঢাকার ইসলামপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে আহসান মঞ্জিল অবস্থিত। ঐতিহাসিক এই নির্দেশন-টিকে ঢাকা শহরের প্রথম ইট-পাথরের স্থাপনা হিসেবে মনে করা হত। মার্বেল পাথর দিয়ে নান্দনিক ডিজাইনের তৈরি করা হয়েছে এই স্থাপনাটি। আহসান মঞ্জিলের প্রাসাদের ভেতরে র‍য়েছে জলসা ঘর, দরবার হল, অতিথিদের থাকার কক্ষ, বৈঠক খানা, নাচ ঘর,এবং আরো কিছু বসবাসের কক্ষ। এছাড়াও প্রাসাদের সামনে রয়েছে, একটি বড় সিড়ি, মনোরম ফুলের বাগান এবং একটি বড় সবুজ মাঠ। ঢাকায় পরিবারসহ অন্যতম দর্শনীয় স্থান হলো এই আহসান মঞ্জিল। শনিবার থেকে বুধবার, সপ্তাহে পাচঁ দিন সকাল ১০.৩০ থেকে বিকেল ৫.৩০ পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। ছোট বাচ্চাদের প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা।

৫। মিরপুর চিড়িয়াখানা

পরিবার নিয়ে ঢাকায় ঘুরে বেড়ানোর অন্যতম আর একটি জায়গা হলো মিরপুর,চিড়িয়াখানা। এটি ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত। প্রায় ৭৫ একর জায়গা নিয়ে চিড়িয়াখানাটি তৈরি করা হয়েছে। বাচ্চাদের বিনোদনের প্রানকেন্দ্র হলো চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানটির মূল আকর্ষণ হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এছাড়াও ১৯১ প্রজাতির দেশি এবং ২১৫০টি প্রজাতির বিদেশী প্রাণী রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির হরি্ণ, বানর, গন্ডার, জলহস্তি, ভাল্লুক, কুমির, জেব্রা ইত্যাদি সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে। মিরপুর চিড়িয়াখানা প্রতি রবিবারে বন্ধ থাকে তাছাড়া প্রতিদিন খোলা থাকে। চিড়িয়াখানাটি ৯টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মিরপুর চিড়িয়াখানার প্রবেশমূল্য জনপ্রতি মাত্র ৫০টাকা।

৬। সংসদ ভবন

ঢাকার শেরে বাংলা নগরে সংসদ ভবন অবস্থিত। কংক্রিট এবং ইটের তৈরি এই ভবনটির স্থপতি করেছিলেন মার্কিন স্থপতি লুই আই কান। এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনসভা। ঢাকার একটি অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে সংসদ ভবন। এমপি হোস্টেল এবং জরুরী কাজে ব্যবহৃত ভবনসমূহ কমপ্লেক্সের বহির্ভাগে অবস্থিত। মূল ভবন ঘিরে অবস্থিত কৃত্রিম হ্রদ, দুটি বাগান এর মাঝের শূণ্যস্থান পূরণ করেছে। ঢাকার একটি অন্যতম ভ্রমণস্থান বলা চলে।

৭। হাতির ঝিল

ঢাকার মধ্য যদি আপনি বসবাস করে থাকেন তবে ছুটির দিনে কিংবা বিকেলের সময়ে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র হাতিরঝিল থেকে। ২০১৩ সালে হাতির ঝিল উদ্ভোধন করা হয়। ঢাকার এই বিনোদন কেন্দ্র বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয়। হাতিরঝিলের টলটলে সবুজ পানিতে ওয়াটার বাস ভাড়া করে ঘুরতে পারবেন পুরো ঝিল। খোলা আকাশের নিচে মনোরম পরিবেশের হাতিরঝিলে সম্প্রতি যোগ হয়েছে রঙ-বেরঙের আলোর সাথে পানির ফোয়ারা। তাই ছুটির দিনে কিংবা বিকেলের দিকে আপনি এই দর্শনীয় স্থানটিতে ঘুরতে যেতে পারেন।

৮। বোটানিক্যাল গার্ডেন

ছুটির দিনে একটু সবুজের সমারোহ অনুভব করতে চাইলে আপনি চলে আসতে বাংলাদেশ জাতীয় উদ্যান অর্থাৎ বোটানিক্যাল গার্ডেনে। ঢাকার মিরপুর চিড়িয়াখানার ঠিক পাশেই অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন। ২০৮ একর জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ উদ্যান। এখানে প্রায় ৮০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল, ঔষধি গাছগাছালি সহ রয়েছে পুকুর, দিঘী, ফুলের বাগান এবং সবুজ ঘাসে ভরা মাঠ। পরিবারসহ আপনি এখানে আসতে পারেন। বোটানিক্যাল গার্ডেনের সময়সূচি সকাল ৯.০০ থেকে বিকেল ৫.০০ পর্যন্ত। এখানে প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা। পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের টিকিট লাগে না। শিক্ষার্থীদের জন্য জনপ্রতি মাত্র তিন টাকা করে লাগবে।

৯। লালবাগ কেল্লা

ঢাকার বহুল জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান হলো লালবাগ কেল্লা। পুরান ঢাকার লালবাগে অবস্থিত মুঘল সাম্রাজের এক অসমাপ্ত প্রাচীন দূর্গ যা বর্তমানে জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন। পরিবার সহ যদি আপনি কোথায় ঘুরতে চান তবে আপনি লালবাগ কেল্লায় বেড়াতে আসতে পারেন। লালবাগ কেল্লায় রয়েছে দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন তিন গম্বুজ মসজিদ। রয়েছে পরীবিবির চতুষ্কোন সমাধি। স্থাপনাটির ভিতরে রয়েছে সাদা মার্বেল পাথরের ফুল,পাতা এবং বিভিন্ন নকশা করা কষ্টি পাথরের ট্যালি। লালবাগ কেল্লায় প্রবেশ মূল্য টিকিটের দাম ২০টাকা। পাঁচ বছরের নিচে বাচ্চাদের টিকিটের প্রয়োজন হয় না। বিদেশি পর্যটকদের জন্য টিকিট মূল্য ২০০ টাকা।

১০। জাতীয় জাদুঘর

ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর। জাতীয় জাদুঘরটি ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরিবার সহ বেড়ানোর জন্য চমৎকার জায়গা হচ্ছে এই জাতীয় জাদুঘর। জাতীয় জাদুঘরের চারতলা ভবনের বিভিন্ন বিভাগে মোট চল্লিশটি গ্যালারি রয়েছে। প্রকৃতির ইতিহাস, মানবজাতির বিবর্তন, বিশ্ব সভ্যতা, দেশীয় সংষ্কৃতির মূলধারা, বিভিন্ন ঐতিহাসিক নির্দশন রয়েছে। এছাড়াও জাদুঘরে বিশাল সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন শিল্পকর্ম, প্রাচীন মুদ্রা, হাতির দাঁত, বিখ্যাত মসলিন কাপড়, মুঘল আমলের যুদ্ধে ব্যবহৃত গোলাবারুদসহ বিভিন্ন অস্র সমুহ। জাতীয় জাদুঘর বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ১০.৩০ থেকে ৫.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থান এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঁকি দিতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তর।

পুরান ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলোর নাম কি?

পুরান ঢাকায় বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যেমনঃ বাহাদুর শাহ পার্ক, বলধা গার্ডেন, জিনজিরা প্রাসাদ, বড়কাটরা, ছোটকাটরা ইত্যাদি।

তারা মসজিদ কোথায় অবস্থিত?

বিখ্যাত তারা মসজিদটি পুরান ঢাকার আর্মানিটোলায় অবস্থিত।

উপসংহার

মানসিক প্রশান্তির জন্য মাঝে মাঝে আমাদের ঘুরে-বেড়ানো প্রয়োজন। যদি আপনি ঢাকায় বসবাস করে থাকেন কিংবা ঢাকার আশেপাশের এলাকায় থাকেন তবে ছুটির দিনে ঘরে বসে না থেকে ঢাকার ১০টি দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়াও বাংলাদেশের আরেকটি জনপ্রিয় ভ্রমণের স্থান সুন্দরবন সম্পর্কে ৫ টি বাক্য পড়তে পারেন। প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্যবহুল পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন। যদি এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার বন্ধু/বান্ধবীদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *